সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাকে জন্ম থেকে কখনও দেখেননি। কিন্তু বিশ্বাস করতেন, পৃথিবীর কোথাও না কোথাও মা ঠিক আছে। বিশ্বাসে মিলায় বস্তু। মন থেকে চাইলে তাই ঈশ্বরের দেখাও পাওয়া যায়। আর জন্মদাত্রী মাকে খুঁজে পাবেন না! তখন এলিন ম্যাকেনের বয়স ১৯। ছয় দশক ধরে বুকের গভীরে বিশ্বাসকে বাঁচিয়ে রেখে আর নিরন্তর অনুসন্ধান করে শেষে মাকে খুঁজে পেলেন। এখন বয়স ৮০। শতবর্ষ পেরনো মাকে কাছে পেয়ে শিশুর মতো আহ্লাদিত এলিন ম্যাকেন। মা-মেয়ের মিলনে যেন পূর্ণ হল বৃত্ত। উদাহরণ হয়ে থাকল তাঁর জীবনের এই কাহিনি।
[ভার্চুয়াল জগতে ‘ঠান্ডা লড়াই’ চিন-আমেরিকার, পিছিয়ে নেই ভারতও]
আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে একটি অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছেন এলিন ম্যাকেন। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে একাই। অনাথ আশ্রমে কোনও শিশুরই পরিবার ছিল না। মায়ের অভাবে ভুগতেন তিনি। ১৯ বছর থেকে মাকে খুঁজতে শুরু করেন ম্যাকেন। গত বছর একটি রেডিও শো-তে অংশ নেন তিনি। সেখানেই জানা যায়, এতদিন ধরে তাঁর পরিবারকে খুঁজে চলেছেন ম্যাকেন। তিনি বলেন, “আমি এখনও বেঁচে আছি। কিন্তু আমার পরিবারের কেউ নেই। এটাই আমার সবথেকে বড় আক্ষেপ।” এই রেডিও শো-র কয়েকমাস পরই মাকে খুঁজে পেয়ে গেলেন। ১০৩ বছর বয়স। বেঁচে থাকার কথাই না। কিন্তু ম্যাকেনের বিশ্বাস ছিল, মাকে খুঁজে বের করবেই। মায়ের মেডিক্যাল রেকর্ড বা কোনও পূর্ব পরিচয় জানা নেই। কিন্তু তাগিদ ছিল ১০০ শতাংশ। মাকে খুঁজে পাওয়ার ম্যাকেন বলেন, “আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না। যখন প্রথম শুনলাম, মা বেঁচে আছে, আর কোনও কথা বলতে পারিনি। প্রথমেই দেখা করার কথাই মাথায় আসে।” হাসপাতালের চিকিৎসকরা মায়ের মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে অনেক প্রশ্ন করে। কিন্তু কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। ম্যাকেন বলেন, “চিকিৎসকরা বুঝতে পারেননি প্রথমে। ওরা বলতে থাকে, এটা কেন জানো না। ওটা কেন জানো না। আমি একটু হতাশ হয়ে পড়ি, তারপর বলি আমি তো অনাথ ছিলাম। আমি কিচ্ছু জানি না।”
[পুরুষের নজর এড়াতে তরুণীদের স্তনে গরম পাথরের ছেঁকা!]
১০৩ বছর বয়স। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় হাসপাতালে ভরতি ম্যাকেনের মা। নিজের বয়স এখন ৮০। মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছেন না। ম্যাকেন বলেন, “মায়ের একটা কান কাজ করে। অন্য কানে শুনতে পান না। আমারও এই সমস্যাটা আছে।” ফোনে সে বারবার বলতে থাকে, “আমি কিচ্ছু শুনতে পাচ্ছি না।” কয়েকদিনের মধ্যেই মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন ম্যাকেন। ছ’ দশক ধরে দেখা স্বপ্ন পূরণ হবে। নিজের বার্ধক্যে এসে মায়ের মুখ দেখবে অনাথ ‘শিশু’।
The post বিশ্বাসে মিলায় ‘মা’, বার্ধক্যে এসে জন্মদাত্রীর কোল পেলেন অনাথ ‘শিশু’ appeared first on Sangbad Pratidin.