নেপথ্যে ইন্ডিপেন্ডেন্টস কনসালট্যান্টস অ্যান্ড অ্যাডভাইসার্স অ্যাসোসিয়েশন তথা আইসিএএ (আইকা)-এর কনভেনশন। তারই মধ্যে সাক্ষাৎ বাজাজ ফিনসার্ভ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট প্রধান শ্রী গণেশ মোহনের সঙ্গে। বিনিয়োগকারীদের সতর্কবার্তা দেওয়ার পাশাপাশি বাজাজ ফিনসার্ভ-এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েও জানা গেল বিশদে।
সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো। মোট ৫২ লক্ষ কোটি টাকা ম্যানেজ করছেন আপনারা। এর পর কী?
কেবল শুকনো পরিসংখ্যান দেখবেন না, কারণ ভারতবর্ষের ফান্ডের বাজার সবে নড়েচড়ে বসেছে। অনেক কিছুই হবে আগামিদিনে। এর সূত্র ধরে আমি শুধুমাত্র দুটি ট্রেন্ড চিহ্নিত করছি। এক, ডাইভারসিফিকেশন। দুই, ডিজিটাইজেশন। সংক্ষেপে বলি। বাজারের দিকে তাকান, দেখুন কী বিপুল ডাইভারসিফিকেশনের সুযোগ পাচ্ছেন এ যুগের লগ্নিকারীরা। মার্কেটে পা রাখতে পারছেন সহজেই, প্রচুর ধরনের প্রকল্প এসেছে তাঁদের সুবিধার্থে। আরও যে অনেক শ্রেণীর প্রকল্প আসবে, তাতে সন্দেহ নেই কারও। এরই মধ্যে সতর্ক বিনিয়োগকারী নিজের জন্য সঠিক প্রকল্পগুলো খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। তাঁকে সাহায্য করবেন দায়িত্ববান উপদেষ্টা।
[আরও পড়ুন: লগ্নির দুনিয়ায় ‘আদর্শ ফোলিও’-র ধারণা নিতান্তই ‘মিথ’, বুঝিয়ে বললেন বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ]
এবার আসুন, আমার দ্বিতীয় পয়েন্ট নিয়ে কিছু বলি। দ্রুত ডিজিটাইজ করার পক্ষপাতী আমি। সঞ্চয় এবং খরচ, দুই-ই সাশ্রয় হবে। ইতিমধ্যেই এর সুবিধা আমরা উপলব্ধ করেছি। অনেক রকমভাবে কার্যকলাপ দ্রুততর হয়েছে, তুলনায় স্বল্প খরচে তা সম্ভব হয়েছে। ডিজিটাইজ করে ব্যবসা বাণিজ্যের যে প্রভূত উন্নতি হয়েছে, তা বেশ বোঝাই যাচ্ছে। লগ্নির বাজারেও তা আরও বেশি রকম দেখতে পারব আমরা।
বিনিয়োগকারীরা সাধারণত সম্পদ বাড়িয়েছেন ঠিকই। এখন কোন কোন বিষয়ে সতর্ক থাকতে পারেন তাঁরা?
দেখুন, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্য দিকটিও, অর্থাৎ অনলাইন ফ্রডও বেড়েছে। তাই সাবধানে থাকা আজ বিনিয়োগকারীর অন্যতম দায়িত্ব। না হলে আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করতে হবে তঁাদের। এছাড়াও অন্য কয়েকটি জরুরি বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার। যেমন ধরুন, অনাবশ্যকভাবে একই গোত্রের অনেক ফান্ড এক সঙ্গে কিনে নেওয়া। আমি বলতে চাই, ‘ডুপ্লিকেশন’যেন না হয়, তাতে ভাল ফল হবে না। পোর্টফোলিও রাখতে হবে সক্রিয় এবং সময়োপযোগী। একপেশে না হয়ে পড়ে যেন, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে লগ্নিকারীদের। আর সামান্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। এগুলির বিষয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, লগ্নিকারীরা অনেকেই ইতিমধ্যে যথেষ্ট পরিণত হয়েছেন বলে আমি মনে করি। তবে বাজারে প্রথম পা রাখা মানুষ যেন পেশাদারের সাহায্য নেন, তাহলে সুবিধা হবে তাঁরই। গোড়া থেকেই যদি প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার হয়, তাহলে তার ফলও ভাল হবে তাড়াতাড়ি।
বাজাজ ফিনসার্ভ সম্প্রতি দশ হাজার কোটি টাকার অ্যাসেট আন্ডার ম্যানেজমেন্টের অধিকারী হয়েছে। এর পরের অধ্যায় কী রকম হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
হ্যাঁ, লগ্নিকারীরা আমাদের প্রকল্পের উপর আস্থা রেখেছেন। তবে আমাদের যাত্রা সদ্য শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই যে ফান্ডগুলো এনেছি আমরা, সেগুলোর রিটার্নও ভালো। ইনভেস্টররা নিশ্চয়ই আমাদের কাছে আরও বেশি সংখ্যায় আসবেন, এমন আশা রাখি। ঘটনা হল, শুধু যে অ্যাক্টিভ স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আমরা উৎসাহী তা নয়, প্যাসিভেও আমরা আগ্রহী।
অদূর ভবিষ্যতে বাজাজ ফিনসার্ভ আরও অনেক ধরনের ফান্ড নিয়ে আসবে, এ-ও জানিয়ে রাখি। সাধারণ লগ্নিকারীরা পাবেন ‘সলিউশন’,যাতে তাঁদের লগ্নির উদ্দেশ্য সফল হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখব আমরা। আমাদের বিশ্বাস, অ্যাক্টিভ এবং প্যাসিভ, দুধরনের প্রকল্পই ভারতবর্ষের বিনিয়োগকারীর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। পরিণতমনস্ক ইনভেস্টর যথাযথ অ্যালোকেশন করতে পারতেন আগামিদিনে। তবে তার জন্য প্রয়োজন দৃঢ়-চেতা পরামর্শদাতা। দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ গঠন করা দরকার, না হলে পিছিয়ে পড়তে হবে। এই কথা বেশ ভাল ভাবেই বুঝে গিয়েছেন এদেশের মানুষ।