সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: স্বনির্ভরগোষ্ঠীদের কাছে নতুন করে আয়ের দরজা খুলে দিতে এবার রঙিন মাছ চাষের প্রকল্প হাতে নিয়েছে বান্দোয়ান ব্লক প্রশাসন। ব্লক প্রশাসন ওই গোষ্ঠীকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই চাষ করাবে। কারণ, রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে রঙিন মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সেই চাহিদা মিটিয়ে যাতে গোষ্ঠীগুলি আয়ের মুখ দেখতে পারে সেই জন্যই এই প্রকল্প বলে দাবি বান্দোয়ান ব্লক প্রশাসনের।
[জৈব সার দিয়ে ফসল চাষে নয়া দিশা বালুরঘাটের কৃষকদের]
ইতিমধ্যেই বান্দোয়ান গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে বাছাই করে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। বান্দোয়ান ব্লক প্রশাসন কৃষি দপ্তর, মৎস্য দপ্তরের সঙ্গে কনভারজেন্স করে এই প্রকল্প তৈরি করেছে। আপাতত একটি স্বনির্ভরগোষ্ঠীকে দিয়ে এই কাজ শুরু হলেও পরবর্তীকালে এই প্রকল্পে আরও একাধিক স্বনির্ভরগোষ্ঠীকে যুক্ত করা হবে। পুরুলিয়া জেলায় এখনও পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে এই প্রথম রঙিন মাছের চাষ শুরু হচ্ছে। এই চাষের জন্য শুধু প্রশিক্ষণ নয়, বাজারজাতকরণেরও ব্যবস্থা করে দেবে ব্লক প্রশাসন। বান্দোয়ানের বিডিও শুভঙ্কর দাস বলেন, “রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে রঙিন মাছের ভাল চাহিদা রয়েছে। সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পেরেই এই চাষের উদ্যোগ নিয়েছি। এই প্রকল্প আমাদের কাছে অগ্রণী। এই কাজে আমরা স্বনির্ভরগোষ্ঠীকে যুক্ত করেছি।” তবে এই প্রকল্পে স্বনির্ভরগোষ্ঠী নিজেরাই বিনিয়োগ করবে। পরবর্তীকালে কোনও প্রয়োজন হলে বান্দোয়ান ব্লক প্রশাসনও ওই গোষ্ঠীকে আর্থিক সাহায্য করবে বলে জানিয়েছে।
বান্দোয়ান ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঠে নেমেও ওই গোষ্ঠীকেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তবে চৌবাচ্চা বা জলাশয়ে এই চাষ করা হবে কিনা তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে এমন জায়গায় চাষ করা হলে পাইপ দিয়ে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে হবে। বান্দোয়ান ব্লক মৎস্য দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক পুলকস্মৃতি পাত্র বলেন, “আমরা একেবারে হাতে-কলমে এই রঙিন মাছ চাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। মাছগুলিকে কিভাবে পরির্চযা করা হবে, কিভাবে খাবার দেওয়া হবে সেগুলি শেখানো হচ্ছে।”
[ফ্রিজ বা কোল্ড স্টোরেজ ছাড়াই সংরক্ষণ করা যাবে শাকসবজি, জানেন কীভাবে?]
এজন্য ছোট মাছের চারা নিয়ে এসেই এই কাজ করবে স্বনির্ভরগোষ্ঠী। আপাতত কৈকার প্রজাতির মাছ নিয়ে এসে এই কাজ শুরু হবে। এই রঙিন মাছের দাম যেখানে প্রতিটি দু’টাকা থেকে আট টাকা। সেখানে ওই মাছগুলি এখানে ১৫ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হয়। কলকাতা থেকে নিয়ে এসে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে এই মাছ বিক্রি করা হয়ে থাকে। এমনকী, লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর, বোকারোতেও কলকাতা থেকে এই মাছ যায়। বান্দোয়ান ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, স্বনির্ভরগোষ্ঠী এই চাষ ভালভাবে করলে উৎপাদিত মাছ পুরুলিয়া ছাড়িয়ে বাঁকুড়া, আসানসোল, বীরভূম, বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর ও জামশেদপুর, বোকারোতে পাঠানো যেতে পারে৷
The post স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাছে লক্ষ্মীর ঝাঁপি খুলছে রঙিন মাছ appeared first on Sangbad Pratidin.