সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্লাস্টিক (Plastic) ও সেই জাতীয় জিনিসপত্র পরিবেশের (Environment) পক্ষে যে কতটা ক্ষতিকারক তা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। বছরের পর বছর কেটে গেলেও প্লাস্টিক থেকে রেহাই নেই মানবজাতির। আর তাই পুরনো প্লাস্টিক জমে জমে পাহাড় হলেও তার থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার কোনও সহজ উপায় জানা নেই বিশ্ববাসীর।
এবার সেই পথেরই দিশা দেখালেন বিজ্ঞানীরা। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর তাঁরা প্লাস্টিক বিনাশকারী এনজাইম (Plastic destroying Enzyme) তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এই এনজাইম খুব সহজেই মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই প্লাস্টিকের অস্তিত্বই মুছে দেয়।
[আরও পড়ুন: দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে জোর, শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছেন এস জয়শঙ্কর]
মূলত পেটএজ (PETase) ও এমএইচইটিএজ (MHETase) – এই দুই রাসায়নিকের মিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে এই এমজাইমটি। ইডিওনেল্লা সাকাইএন্সিস (Ideonella Sakaiensis) নামক একটি ব্যাকটেরিয়া (bacteria) এই রাসায়নিকগুলি তৈরি করতে সক্ষম। মূলত প্লাস্টিকের বোতলে যে ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়, সেই রকমের প্লাস্টিকের উপরে এই ব্যাকটেরিয়া বিশেষভাবে কার্যকর।
এই বিষয়ে বলতে গিয়ে পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Portsmouth) অধ্যাপক জন ম্যাকঘিয়ান (John Mcgeehan) বলেন, এই মুহূর্তে প্লাস্টিককে অকৃত্রিম উপায়ে ধ্বংস করার কোনও পদ্ধতি নেই। কিন্তু আবর্জনায় ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের মধ্যে এই এনজাইম মিশিয়ে দিলে কয়েক দিনের মধ্যেই সেই প্লাস্টিকগুলি ধীরে ধীরে ভাঙতে শুরু করে ও অবশেষে মিলিয়ে যায়।
এর আগে ২০১৮ সালেও এই ধরনের একটি এনজাইম ভুলবশতই বানিয়ে ফেলেছিলেন ম্যাকঘিয়ান। কিন্তু সেই এনজাইমের কার্যক্ষমতা ছিল তুলনায় অনেক কম। তাঁর গবেষণার উপর ভিত্তি করে আরও কাজ করতে থাকেন বিজ্ঞানীরা। কীভাবে এই এনজাইমের কার্যক্ষমতা বাড়ানো যায় এই নিয়ে চলে বিস্তর গবেষণা। অবশেষে একাধিক এনজাইম মিশিয়ে বাড়ানো হয় এই কার্যকারিতা।
ম্যাকঘিয়ান বলেন যে পেটএজ প্লাস্টিকের ওপরের অংশটিকে আক্রমণ করে এবং এমএইচইটি-এজ প্লাস্টিককে অতি ক্ষুদ্র অংশে ভেঙে ফেলে। তাই দুটিকে একসঙ্গে ব্যাবহার করলে তাঁদের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি পায় আর তাই এই এনজাইমের ব্যবহারে আসানরুপ ফল পাওয়া যেতে পারে বলে তাঁর দাবি।