সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত ৫ জানুয়ারি পাঞ্জাব (Punjab) সফরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। সেদিন কৃষক বিক্ষোভের জেরে প্রায় ১৫ মিনিট আটকে থাকে তাঁর কনভয়। এরপর সেই ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় ঘাটতি থেকে শুরু করে চক্রান্ত তত্ত্ব বা রাজনীতি কম দেখেনি দেশ। এবার সেই পাঞ্জাবে ১৪, ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারিতে ভোটপ্রচারে আসছেন মোদি। তবে এবার কৃষক সংগঠনগুলি আগে থেকেই স্পষ্ট বার্তা দিয়ে রেখেছে যে তারা প্রধানমন্ত্রীর সফর বয়কট করবে।
অন্যদিকে কংগ্রেস সাংসদ রবনীত সিং বিট্টু (Ravneet Singh Bittu) হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হেলিকপ্টার বা বিমানে পাঞ্জাব সফর করা উচিত। কারণ তিনি যদি সড়কপথে ভ্রমণ করতে চান তবে সমস্যায় পড়তে পারেন।” পাঞ্জাবে ২০ ফেব্রুয়ারি বিধানসভার ভোট। কংগ্রেস এখনও সে রাজ্যের জন্য নির্বাচনি ইস্তাহার প্রকাশ না করলেও প্রদেশ সভাপতি নভজ্যোৎ সিধু (Navjot Singh Sidhu) নিজেই আগে থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘পাঞ্জাব মডেল’ পেশ করেছেন। তাতেই তিনি একটি এমন রূপরেখা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরলে পাঞ্জাব কীভাবে একটি ‘কল্যাণকামী রাজ্য’ হয়ে উঠবে। সিধু সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, তাঁর এই পাঞ্জাব মডেলটি গুরু নানকের দর্শন ‘তেরাহ-তেরাহ’ এবং ‘সরবত দা ভালা’ আর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর পঞ্চায়েত ও শহুরে স্থানীয় সংস্থাগুলিকে ক্ষমতায়নের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে।
[আরও পড়ুন: মেধার ভিত্তিতে নয়, হিমালয়ের সাধুর পরামর্শে নিয়োগ ও পদোন্নতি, কাঠগড়ায় NSE’র প্রাক্তন শীর্ষ কর্তা]
১৪, ১৬ এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি পাঞ্জাবে বিজেপির নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেবেন মোদি। তবে মোদির এই সভায় বাদ সাধতে পারেন কৃষকরা। কারণ কয়েকটি কৃষক সংগঠন প্রধানমন্ত্রীর সফর বয়কট করার পরিকল্পনা করছেন। জানা গিয়েছে, মোদি ভোটমুখী রাজ্যে ১৪ ফেব্রুয়ারি জলন্ধরে তাঁর প্রথম জনসভা করবেন। তারপর ১৬ ফেব্রুয়ারি পাঠানকোটে এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি আবুহারে তৃতীয় জনসভায় ভাষণ দেবেন। এই সফর নিয়েই শুক্রবার কংগ্রেস সাংসদ রবনীত সিং বিট্টু বলেছিলেন যে প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার বা বিমানে পাঞ্জাব সফর করা উচিত, কারণ তিনি রাজ্যে রাস্তা দিয়ে ভ্রমণ করতে চাইলে সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। কংগ্রেস নেতার কথায়, রাজ্যের মানুষ ভুলে যায়নি যে তারা এক বছরেরও বেশি সময় রাস্তায় কাটিয়েছে।
সাংসদ বিট্টু আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত। আমরা জনগণকে বলেছি প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনতে। তাঁকে আকাশপথে আসতে হবে। সড়কপথে তাঁর এখনও সমস্যা হবে, কারণ তিনি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতিটি পাঞ্জাবিকে রাস্তায় রেখেছেন। তাঁরা কীভাবে ভুলে যাবে? কৃষকবিক্ষোভের সময় ৭০০ জনেরও বেশি কৃষক মারা গিয়েছিল।” উল্লেখ্য, গত মাসে পাঞ্জাবের ফিরোজপুর যাওয়ার সময় কিছু বিক্ষোভকারীর দ্বারা রাস্তা অবরোধ করার ফলে ১৫-২০ মিনিটের জন্য একটি ফ্লাইওভারের উপরে আটকে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
মাত্র পাঁচ মাস আগে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংকে সরিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব চরণজিৎ সিং চান্নিকে মুখ্যমন্ত্রী করার পরেই সিধু ‘পাঞ্জাব মডেল’ প্রকাশ্যে এনেছিলেন। এদিন টুইটারে তাঁর পাঞ্জাব মডেল ইস্তাহারে সিধু পাঞ্জাবকে একটি কল্যাণকামী রাজ্যে পরিণত করার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন এবং ১৩টি পয়েন্টের বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। যা তিনি আগে জানুয়ারিতে প্রাথমিকভাবে জানিয়ে ছিলেন। সেই সঙ্গে লিখেছেন, “নতুন সিস্টেমটি সমস্ত চুরি বন্ধ করে, পাঞ্জাব থেকে মাফিয়াদের নির্মূল করে, জনগণের কল্যাণে কোষাগার দ্বিগুণ পূরণ করবে।”