সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিবিআই (CBI) অফিসারের ভুয়ো পরিচয়, নীলবাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘোরাফেরা, প্রতারণা, বধূ নির্যাতন। এমনই একগুচ্ছ অভিযোগ পেয়েই হাওড়ার জগাছার যুবক শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে জালে আনতে তৎপর হয়ে উঠেছিল পুলিশ। শেষপর্যন্ত রবিবার রাতে দিল্লির (Delhi) এক পাঁচতারা হোটেল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে হাওড়া (Howrah) পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল। অভিযানে শামিল হয়েছিল দিল্লি পুলিশও। সোমবারই তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসার হবে বলে খবর। পুলিশ সূত্রে খবর, শুভদীপের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করেই তাকে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত মে মাসে। ওই সময়ে জগাছা থানায় শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে একটি অভিযোগ হয় বধূ নির্যাতনের। তার প্রাক্তন স্ত্রী ওই অভিযোগ করেন বলে খবর। তিনি জানান, ২০১৯ সালে শুভদীপের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তখনও শুভদীপকে সিবিআই অফিসার বলেই জানতেন তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু বিয়ের পর একাধিক ইস্যুতে স্বামীর প্রতি তাঁর সন্দেহ বাড়তে থাকে। ওই মহিলা সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়ে খোঁজখবর নেন। জানতে পারেন, শুভদীপ আসলে সিবিআইয়ের কেউ নন। অথচ সে সিবিআইয়ের পরিচয়পত্র, নীলবাতির গাড়ি ব্যবহার করত। নিজের পরিচয় দিয়ে অনেককে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখাত। বিনিময়ে তাদের থেকে টাকাও নিত। পাশাপাশি শুভদীপের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগও দায়ের করেছেন ওই মহিলা।
[আরও পড়ুন: ‘মন্ত্রী বাড়ল, টিকা বাড়ল না’, ভ্যাকসিন ঘাটতির অভিযোগ তুলে ফের তোপ রাহুলের]
এমনকী ছেলে যে সিবিআই অফিসারের ভুয়ো পরিচয় দিয়ে এমন প্রতারণা করে বেড়াচ্ছিল, তা জানতে পারেননি শুভদীপের মা-বাবাও। ওই মহিলার অভিযোগের পর তদন্ত করতে নেমে পুলিশ তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তবেই তাদের নজরে আসে বিষয়টি। ছেলের এহেন কাজকর্মে লজ্জিত মা-বাবা জানান, ছেলেকে যেন গ্রেপ্তার করা হয় অথবা ছেলে আত্মসম্পর্পণ করুক। এরপর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তরফে শুভদীপের ফোন নং জোগাড় করে ফোন করা হয়। আর সেই ফাঁদেই পা দিয়ে ফেলে শুভদীপ। প্রতিটি ফোন রিসিভ করে জানায়, বিশেষ কাজে সে দিল্লিতে রয়েছেন। এরপর দিল্লি পুলিশের সহায়তায় সেখানে গিয়ে এক পাঁচতারা হোটেল থেকে ভুয়ো সিবিআই অফিসারকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে হাওড়া পুলিশের বিশেষ দল।