সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় আড়াই দশক। সঠিকভাবে বলতে গেলে ২৪ বছর। এর মধ্যে মাঝে বছর দুই বাদ দিলে পুরোটাই কংগ্রেসের (Congress) রাশ ছিল তাঁর হাতে। অবশেষে তিনি মুক্ত হলেন। দেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দলের রাশ এবার সরকারিভাবে সোনিয়া গান্ধীর হাতের বাইরে গেল। এই ২২ বছরে কংগ্রেসের বহু উত্থানপতন দেখেছেন সোনিয়া (Sonia Gandhi)। বহু ঝড় সামলেছেন, কখনও বা পারেননি। তবে প্রশ্নাতীতভাবে কংগ্রেসের অন্দরে তিনিই ছিলেন সর্বোপরি। তাই বিদায়বেলায় এসে তিনি আবেগাপ্লুত। আবেগে গলা ভারী হচ্ছে তাঁর ছেলেমেয়েদেরও।
কংগ্রেস সভানেত্রী থাকাকালীন গত ২২ বছর সোনিয়াকে কাছে থেকে দেখেছেন মেয়ে প্রিয়াঙ্কা। মা যেদিন প্রিয় দলের রাশ সরকারিভাবে মল্লিকার্জুন খাড়গের (Mallikarjun Kharge) হাতে তুলে দিলেন, সেদিন তিনিও খানিকটা আবেগাপ্লুত। ইনস্টাগ্রামে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন,”তোমাকে নিয়ে ভীষণ গর্বিত মা। গোটা দুনিয়া যাই বলুক না কেন। আমি জানি তুমি সবটাই করেছ ভালবাসার জন্য।”
[আরও পড়ুন: আচার্য বিতর্কে নয়া মোড়, এবার কেরলের ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্তের দাবি রাজ্যপালের ]
আসলে সোনিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, সভানেত্রী থাকাকালীন গোটা দলকে তিনি কুক্ষিগত করে রেখেছিলেন। এমনকী ইউপিএ (UPA) জমানায় প্রধানমন্ত্রী পদে মনমোহন সিং থাকলেও তিনিই নাকি ছিলেন সুপার পিএম। শুধু তাই নয়, বছরের পর বছর ধরে ব্যক্তিগত আক্রমণও সহ্য করতে হয়েছে বিদায়ী কংগ্রেস সভানেত্রীকে। ‘ইন্দিরা গান্ধীর বহু’ হওয়া সত্ত্বেও দলের সভাপতিত্বের শেষদিন পর্যন্ত তাঁকে ইটালিতে জন্ম নিয়ে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। প্রিয়াঙ্কা এদিন বোঝানোর চেষ্টা করলেন, তাঁর মা কখনও ক্ষমতার তোয়াক্কা করেননি। সব কটাক্ষ, অপমান সয়ে গিয়েছেন দল এবং দেশকে ভালবেসে।
[আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করেও নিরপেক্ষ অবস্থান, জয়শঙ্করের কাজে মুগ্ধ আমিরশাহীর মন্ত্রী]
সোনিয়া (Sonia Gandhi) বৃদ্ধা হয়েছেন। আগের মতো আর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটতে পারেন না। আর হয়তো নিয়মিত দলের সব স্তরের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগও নেই। তাছাড়া দলের একাংশে তাঁদের বিরুদ্ধে অসন্তোষও হয়তো দানা বেঁধেছে। তবু আজও কংগ্রেসে গান্ধী পরিবারের নেতৃত্ব প্রশ্নাতীত। পরিবারের কেউ যদি সভাপতি ভোটে দাঁড়াতেন, তাহলে হয়তো বিনা সামনে কেউ প্রার্থী হওয়ারও সাহস পেত না। তা সত্ত্বেও দলের স্বার্থেই সম্ভবত ‘মুক্তি’ নিলেন সোনিয়া। আর তাতেই গর্বিত মেয়ে প্রিয়াঙ্কা।