স্টাফ রিপোর্টার: এই কয়েকদিন আগের কথা। তাঁরই মতো গ্ল্যামার জগতের এক কন্যা পল্লবী নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন। তার দু’হপ্তা পেরোল না, মোহিনী মায়াজালের দুনিয়াকে নাড়িয়ে দিল আরেকটি আত্মহত্যা। মডেল বিদিশা দে মজুমদারের (Bidisha De Majumder) ঝুলন্ত দেহ একই সঙ্গে জন্ম দিয়ে গেল বেশ কিছু প্রশ্নেরও। তাহলে কি অবসাদের সমাধান খুঁজতে পূর্বসূরিদের দেখানো মারণ পথই বেছে নিচ্ছেন বিনোদন জগতের কচিকাঁচারা?
তত্ত্বটা একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো না। মনোবিদদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, পল্লবীর (Pallavi Dey) মৃত্যু অবচেতনে নাড়িয়ে দিয়েছিল বিদিশাকেও। হৃদয়ের অন্তঃস্থলে জেগে উঠেছিল উদ্বেগ ও হতাশার আগ্নেয়গিরি। মনে হয়েছে, “আমারই মতো গ্ল্যামার জগতের একজন নিজেকে শেষ করে দিয়েছে। জীবন তো আমারও সোজাপথে চলছে না। আমাকেও বেছে নিতে হবে ওই রাস্তা।” মনস্তাত্ত্বিকরা জানিয়েছেন, মাত্র বাইশ বসন্ত পেরনো কন্যাকে এই চিন্তাই ঠেলে দিয়েছে মৃত্যুর অতলে।
[আরও পড়ুন: পল্লবী দে মৃত্যুকাণ্ডে ধৃত সাগ্নিক চক্রবর্তীর জামিন খারিজ, এবার জেরার মুখে বান্ধবী ঐন্দ্রিলা]
এমনটা যে হয়, তার হাতেগরম প্রমাণ রয়েছে। গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়। মনোবিদ মোহিত রণদীপ জানিয়েছেন, এ ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই একই কায়দায় আত্মহত্যা করেছিলেন আরও এক প্রৌঢ়। মনস্তাত্ত্বিকদের কথায়, এমনটাই দস্তুর। আত্মহত্যা একটা প্রবণতা, তা চাপা থাকে অনেকের মধ্যে। আশপাশে যখন একটা আত্মহত্যার ঘটনা হইচই ফেলে দেয়। তারা নিশ্চুপে সেটাকে জরিপ করে। অনুসরণ করে তাকেই।
বিদিশার বাবা বিশ্বনাথ দে মজুমদার বলেন, “পল্লবীর মৃত্যুর পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। মেয়ে কলকাতায় একা থাকে। ও আবার ভুল কোনও সিদ্ধান্ত না নেয়।” মায়ের দুশ্চিন্তা টের পেয়েছিল বিদিশা। বাড়ি এসে মা’কে জড়িয়ে ধরে বলেছিল, “পল্লবী কী বোকা মেয়ে! এই কাজ কেউ করে? চিন্তা কোরো না মা। আমি অনেক শক্ত মেয়ে। এমন কিছু করব না।” এমন কথা যিনি বলেছিলেন বুধবার তাঁরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে! বোঝা গিয়েছে, বাইরে নিজেকে যতই শক্তপোক্ত দেখাক ভিতরে ভিতরে শেষ হয়ে গিয়েছিলেন বিদিশাও। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সৃজিত ঘোষের বক্তব্য, গভীর কোনও হতাশা কুরে কুরে খেয়ে বিদিশাকে ফোঁপরা করে দিয়েছিল। তাঁর কথায়, কেউ হতাশাগ্রস্ত হতেই পারে। তাকে আটকাতে হবে।