নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দারিদ্রতা নিত্যসঙ্গী। কোনওরকমে টেনেটুনে চলে সংসার। তা সত্ত্বেও আবাস যোজনার বাড়ির টাকা পেয়ে তা ফিরিয়ে দিয়েছেন বীরভূমের দুই প্রাপক। কুর্নিশ জানাতে সাধারণতন্ত্র দিবসে পুরস্কৃত করা হল তাঁদের।
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। নির্বাচনকে পাখির চোখ করে জনসংযোগ কর্মসূচিতে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলি। তৃণমূলের তরফে শুরু করা হয়েছে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি। ‘দিদির দূত’ হিসাবে যাঁরাই গ্রামে যাচ্ছেন তাঁদেরই বাড়ির জন্য হাহাকারের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ব্যতিক্রম বীরভূমের (Birbhum) ময়ূরেশ্বরের উলকুণ্ডা পঞ্চায়েতের বাসিন্দা প্রিয়া চট্টোপাধ্যায় ও মুরারই ১ নম্বর ব্লকের চাতরা পঞ্চায়েতের খানপুর গ্রামের মণ্ডল পাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ রুহুল আমিন। পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছেন আবাস যোজনার ঘর। সেই কারণেই বৃহস্পতিবার সিউড়ির চাঁদমারি মাঠে সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ শেষে তাদের সম্মান জানালেন জেলাশাসক, পুলিশসুপার। হাতে তুলে দিলেন স্মারক। সেই স্মারক নিয়ে বাড়ি ফিরতেই ভিড় উপচে পড়ছে।
[আরও পড়ুন: ‘দখল’ করা জমি ফেরাতে চাপ, পুরনো নথি-সহ অমর্ত্য সেনকে নতুন চিঠি বিশ্বভারতীর]
উলকুণ্ডার শিবতলা পাড়ার ঠাকুরের বাড়িতে তখন নানা প্রশ্ন, জেলাশাসক কী বলল, কী হল। প্রিয়াদেবী জানালেন, বাড়ি না থাকার কষ্ট তিনি জানেন। তাঁদের ইচ্ছে তাঁদের জন্য সরকারি বরাদ্দের টাকা একজন প্রকৃত গৃহহীনকে দেওয়া হোক। পাশাপাশি মুরারই ১ নম্বর ব্লকের চাতরা পঞ্চায়েতের খানপুর গ্রামের মহম্মদ রুহুল আমিনও আপ্লুত। তিনি জানান, সুদূর মুরারই থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় গাড়ি পাঠিয়ে বাড়ি থেকে সিউড়ি নিয়ে গিয়ে তাঁর হাতে স্মারক তুলে দেওয়া হয়েছে। সকলকে কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। তাঁর মতে বাড়ির জন্য, মাথায় একটা পাকা ছাদের জন্য মানুষের চোখের জল তিনি দেখেছেন। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় জেলা প্রশাসন যে নাম বাদ দিয়েছে, তারপরও বহু মানুষের নিজে থেকে এগিয়ে অন্যের জন্য বাড়ির টাকা ছেড়ে দেওয়া উচিত। তাহলে দিদির দূত হিসাবে কাউকে আসতে হয় না। হাহাকার শুনতে হয় না।”