সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাশিবরাত্রি হিন্দু (Hindu)ধর্মাবলম্বীদের কাছে এক বিশেষ তিথি। শাস্ত্র অনুযায়ী, মহাশিব ও পার্বতীর মিলনের মুহূর্ত সূচিত হয় এই তিথিতেই। যা সৃষ্টি আর সমন্বয়ের প্রতীক। আর তাই এই তিথিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েই উদযাপন করেন ভক্তরা। শিবরাত্রি পালনের অন্যান্য অনেক রীতির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল উপবাস পালন। উপবাসরত অবস্থায় শুদ্ধচিত্তে, শুদ্ধবস্ত্রে ভক্তরা শিবলিঙ্গে (Shivlinga) জল ঢালেন। তবে এই উপবাস পালনের ক্ষেত্রে কয়েকটি নিয়ম বা অবশ্য পালনীয় কর্তব্য মাথায় রাখা উচিত।
প্রথমেই মনে রাখতে হবে, উপবাস তাঁরাই পালন করবেন, যাঁরা তা করতে সক্ষম। শারীরিক কোনও সমস্যা থাকলে প্রথমেই এই সংকল্প ত্যাগ করা উচিত। অন্যথায় হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা। ২০২৩ সালে শিবরাত্রি (Mahashivratri) পালিত হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ শনিবার। যাঁরা উপবাস পালন করবেন মনস্থ করেছেন, তাঁরা এদিন অবশ্যই কয়েকটি নিয়ম পালন করতে হবে –
- উপবাসের আগের দিন নিরামিষ খাবার খাওয়াই নিয়ম।
- শিবরাত্রির দিন সূর্যোদয়ের পূর্বে অর্থাৎ ব্রাহ্মমুহূর্তে ঘুম থেকে উঠে পড়াই বিধেয়।
- এরপর স্নান সেরে, শুদ্ধবস্ত্রে উপবাসের সংকল্প নিতে হয়।
- হাতে চাল-জল নিয়ে এই সংকল্প গ্রহণ করতে হয়।
[আরও পড়ুন: ৬ ঘণ্টার পথ ৬ মিনিটে! বৈষ্ণোদেবী পৌঁছতে শুরু হবে রোপওয়ে পরিষেবা]
শিবের আরাধনা হয় মূলত রাত্রিবেলায়। শিবপূজার আগে আরেকবার স্নান করে নিয়ে শরীর ও মনকে পবিত্র করে নিতে হয়। এরপর চার প্রহরে শিবের মাথায় জল ঢালা রীতি। শিবলিঙ্গে জল ঢালার সময় দুধ, দই, মধু, ঘি, ধুতরা ফুল ও বেলপাতা নিবেদন করার রীতি রয়েছে। মনে রাখতে হবে, বেলপাতার মসৃণ দিকটি শিবের মাথায় দিতে হয়। এইভাবে নিশিকালে শিবপূজা সমাপণে পরদিন স্নান করে উপবাস ভাঙা হয়। উপবাস ভাঙা অর্থে জল-ফল খাওয়া যেতে পারে। তবে অন্নগ্রহণের আগে ব্রাহ্মণভোজন করানোর রীতি রয়েছে। শিবরাত্রির উপবাস চলাকালীন চাল-ডাল জাতীয় কোনও খাবার খাওয়া একেবারেই বিধেয় নয়। আমিষ খাবার তো নয়ই।
তবে যাঁরা নির্জলা উপবাস পালন করছেন না, তাঁরা ফল জাতীয় খাবার খেতে পারেন। মূলত যে দিন শিবরাত্রি পালিত হয়, সেদিন সূর্যোদয় থেকেই উপবাস শুরু করা যেতে পারে। অন্যথায় চতুর্দশী যে সময় পড়ছে তখন থেকেই উপবাস শুরু করতে হয়। উপবাস চলাকালীন ভক্তরা ‘ওঁ নমঃ শিবায়’ মন্ত্র জপ করেন। শিবের প্রণাম মন্ত্র:
ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্ৰয় হেতবে।
নিবেদয়ামি চাত্মানং ত্বং গতিঃ পরমেশ্বর॥
শিব-শক্তির মিলনেই সৃষ্টি রক্ষিত হয়। এই মহালগ্নকে তাই শিব-পার্বতীর বিবাহ বা মিলনের লগ্ন হিসাবে গণ্য করা হয়। হিন্দু ধর্মে তাই শিবরাত্রির উদযাপন বিশেষ গুরুত্ববাহী। তারই একটি বিশেষ আঙ্গিক হল উপবাস পালন। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে উপবাস পালনে তুষ্ট হন শিব ও পার্বতী উভয়েই।