সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছরভর নানা পার্বণ, নানা উৎসব, আনন্দের সময়। তবে সেই উৎসবের সূচনা কিন্তু হয় দোল উৎসব (Dol Utsav) দিয়েই। আবার বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, বাংলা বছরের একেবারে শেষদিককার উৎসব দোল। ফাল্গুণের পূর্ণিমা তিথিতে দোল উৎসব হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী, দোল পূর্ণিমা হিন্দুদের (Hindu)কাছে অত্যন্ত পবিত্র। রাধাকৃষ্ণের লীলাখেলাকে উদযাপন করতেই এই দিনটিতে আমজনতা মেতে ওঠেন রঙের খেলায়। দোল কিংবা হোলি উপলক্ষে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে ভারতের অন্যতম তীর্থক্ষেত্র মথুরা, বৃন্দাবন। শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দোল উৎসবের আনন্দে শামিল হন।
তবে শুধু রং, আবির নিয়ে খেলা কিংবা হাতে মিষ্টি নিয়ে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানো নয়। এই দিনটির আরও একাধিক তাৎপর্য রয়েছে। দোল পূর্ণিমায় নারায়ণের পুজো হয়ে থাকে বহু হিন্দু বাড়িতে। সিন্নি প্রসাদ সহযোগে এই পুজো হয়। তিথি মেনে পূজার্চনা করাই নিয়ম। সংসারের মঙ্গল কামনায় প্রতি বছর পূর্ণিমার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নারায়ণ পুজো করেন গৃহস্থ।
[আরও পড়ুন: পুরুলিয়ার বিরল শ্বেতপলাশ নিয়ে হইচই! গাছের দাম উঠল ৮০ লক্ষ টাকা]
এবছরও দোল পূর্ণিমা ৭ মার্চ, মঙ্গলবার। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২২ ফাল্গুন। কিন্তু পূর্ণিমা তিথি শুরু হচ্ছে আরেকটু আগে থেকে। ৬ মার্চ, সোমবার বিকেল ৪টে ২০ থেকে শুরু হচ্ছে পূর্ণিমা তিথি। আর মঙ্গলবার সন্ধে ৬টা ০২ মিনিটে শেষ হচ্ছে তিথি। এই সময়ের মধ্যে নারায়ণ পুজো হতে পারে। সোমবার সন্ধের থেকে শুরু হবে হোলিকা দহন, যাকে চলতি কথা বলে ‘ন্যাড়াপোড়া’। গ্রামবাংলায় এখনও দোলের আগের দিন অশুভ শক্তি বিনাশের উদ্দেশে ন্যাড়াপোড়া হয়ে থাকে। আর পরদিন সকাল থেকে শুরু হয় রঙের উৎসব।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলকে উৎখাতের ডাক, ‘বিতর্কিত’ বই সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য কৌস্তভের]
বৈষ্ণব মত অনুযায়ী, দোল মূলত শ্রীকৃষ্ণ-রাধিকা (SreeKrishna and Radha) জীবনের বিশেষ দিন। ওইদিন বৃন্দাবনে রাধিকা ও অন্যান্য গোপিনীদের সঙ্গে আবির ও অন্যান্য রং নিয়ে খেলায় মেতেছিলেন। সেসময় ফুল দিয়ে সাজানোরও চল ছিল। দোলের আরেক নাম বসন্তোৎসব। এই নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) দেওয়া। বসন্তে ফুলে ফুলে সজীব হয়ে ওঠা লালমাটির শান্তিনিকেতনে (Santiniketan) তিনি এই বিশেষ তিথিতে বসন্তোৎসব চালু করেন। আর তাকে সামনে রেখে তিনি অগণিত গান রচনা করে গিয়েছেন। সেসব আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। আবির খেলার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক উৎসব শান্তিনিকেতনের বসন্তোৎসবকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তাই দোল, হোলি (Holi 2023) কিংবা বসন্তোৎসবের আসল প্রাণ হল রং আর গান।