সুদীপ রায়চৌধুরি: ২০২১-এ বাংলা জেতার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এখন থেকেই রাজ্য বিজেপির নিয়ন্ত্রণের রাশ আরও বেশি করে নিজেদের হাতে তুলে নিতে চলেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS)। যে রূপরেখার আঁচ পেতে মধ্যপ্রদেশের চিত্রকূটের দিকে তাকিয়ে গেরুয়া শিবিরের নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার থেকে চিত্রকূটে শুরু হয়েছে অখিল ভারতীয় প্রান্ত প্রচারক সভা। চারদিনের এই বার্ষিক বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন গোটা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা শীর্ষস্থানীয় প্রচারকরা। থাকছেন সংঘচালক মোহন ভাগবত (Mohon Bhagwat), সরকার্যবহ দত্তাত্রেয় হোসাবলে-সহ সংঘের সর্বোচ্চ মহল। সূত্রের খবর, গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে অনেক কিছুর সঙ্গে নির্ধারিত হতে চলেছে বঙ্গ বিজেপির ভবিষ্যৎও।
বিজেপি সূত্রে খবর, ভোটের ফল প্রকাশের পরই সংঘ ঘনিষ্ঠদের সামনে রেখে বাংলায় দলকে ঢেলে সাজতে জেপি নাড্ডা-বি এল সন্তোষদের (BL Santosh) কাছে নির্দেশ গিয়েছে নাগপুর থেকে। বলা হয়েছে ‘সংঘের আদর্শ ও বিচারধারার সঙ্গে পরিচিত’ কার্যকর্তাদের হাতেই যাতে সংগঠনের মূল চালিকা শক্তি থাকে, সে বিষয়ে জোর দিতে। পাশাপাশি কেশব ভবন ও মুরলীধর সেন লেনের মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়েও জোর দিতে চাইছে নাগপুর। সর্বভারতীয় স্তরে কৃষ্ণগোপালের মতো সংঘের শীর্ষপর্যায়ের পদাধিকারী দল ও সংঘের মধ্যে সমন্বয়ের এই গুরুদায়িত্ব পালন করেন। শোনা যাচ্ছে, তাঁকে সাহায্যের জন্য একটি টিম তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। রাজ্যস্তরেও এইজাতীয় সমন্বয় চাইছে নাগপুর।
[আরও পড়ুন: সাংবিধানিক দায়িত্ব উল্লেখ করে মাঝরাতে আচমকা টুইট, নেটদুনিয়ায় হাসির খোরাক বাংলার রাজ্যপাল]
সংঘ ঘনিষ্ঠ রাজ্য BJP’র এক শীর্ষ নেতা জানাচ্ছেন, বৈঠকে শেষদিনের ‘মুক্ত চিন্তন’ বা ওপেন সেশনে অনেকটাই সময় নেবে বাংলার নির্বাচন ও ভোট পরবর্তী হিংসার প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, “ভোটের ফল প্রকাশের পরই হারের ময়নাতদন্ত করে ফেলেছে কেশব ভবন। সেই রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয়েছে নাগপুরে সংঘের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের হাতে।” বাংলা ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে গোটা দেশের প্রচারকদের এই বৈঠকে স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসবে যোগীরাজ্যের প্রসঙ্গও।
[আরও পড়ুন: ৭ কেজি ওজনের দু’বছরের শিশুর হার্টে ফুটো, প্রাণ ফেরাল NRS হাসপাতাল]
সরকারিভাবে অবশ্য চিত্রকূটে রাজ্য বিজেপিকে নিয়ে আলোচনা হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করছে সংঘ। দক্ষিণবঙ্গে সংঘের প্রচার প্রমুখ বিপ্লব রায়ের কথায়, “এই বৈঠক সংঘের বার্ষিক কর্মসূচি। এখানে সামাজিক ক্ষেত্রে সংঘের কাজকর্ম, প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। আগামী দিনের সেবামূলক কর্মসূচির রূপরেখা তৈরি। রাজনৈতিক কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় না।” তাঁর কথায়, “এবার স্বাভাবিকভাবেই অতিমারী (Coronavirus) সংকটই মুখ্য আলোচ্য বিষয়।”