সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাহাড়ে গিয়ে সোয়েটার পরে বরফ দেখতে কার না ভাল লাগে? কিন্তু তাই বলে সাড়ে তিন ঘন্টা কাচের বাক্সে সোয়েটার ছাড়া খালি গায়ে বরফের মধ্যে বসে থাকা? তাও মাত্র ৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায়, ঝোড়ো হাওয়া আর বৃষ্টির মধ্যে! এমন ঘটনাই ঘটেছে লিথুয়ানিয়ার (Lithuania) উইলনো শহরে। এহেন ঘটনা জানতে পেরে রীতিমতো তোলপাড় পড়ে গিয়েছে নেটদুনিয়ায়। নেটিজেনদের মুখে মুখে ঘুরছে এমন আজব ঘটনার কথা।
কিন্তু কী করে ঘটলো এমন হাড়কাঁপানো ঘটনা? গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে (Guiness World Record) নাম তোলার জন্যই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন পোল্যন্ডের (Poland) নাগরিক ভালের্যান রোমানোভস্কি। একটানা ২০৮ মিনিট তিনি কাটিয়েছেন বরফের মধ্যে। বরফের তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। গিনেসের নিয়মানুসারে এই তিন ঘন্টা ২৮ মিনিট ধরে তাঁর দেহ সম্পূর্ণভাবে বরফের সংস্পর্শে ছিল। এর আগে একটানা বরফের মধ্যে থাকার গিনেস রেকর্ড ছিল ফ্রান্সের রোমেন ভান্দেনডর্পের দখলে। তিনি বরফের মধ্যে ২ ঘন্টা ৩৫ মিনিট ধরে ছিলেন।
[আরও পড়ুন: পুণেয় মেট্রো রেলপথের উদ্বোধন মোদির, নিজেই টিকিট কেটে চাপলেন ট্রেনে]
এহেন অসম্ভব ঘটনা কী করে ঘটালেন ভালের্যান? নতুন রেকর্ড গড়ে এই কীর্তিমান জানাচ্ছেন, “এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমি গত ৬ মাস ধরে ট্রেনিং করেছি। তবেই এই সাফল্য এসেছে।” গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড সূত্রে জানা যাচ্ছে, ১৬৫ মিনিট বরফের মধ্যে কাটানোর পরে রোমানোভস্কি কাঁপতে শুরু করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাল না ছেড়ে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে যান তিনি। বরফের মধ্যে থাকাকালীন পুরো সময়টাই তাঁর শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছিল। অবস্থা সেরকম খারাপ হলে তাঁকে বের করে আনা হত।
তবে শেষ পর্যন্ত কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। নতুন রেকর্ড গড়ে যারপরনাই খুশি রোমানোভস্কি। অনেক দিন ধরেই তিনি ঠান্ডা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন এই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডটি ভাঙার। তিনি জানিয়েছেন,”আমি বেশ কয়েক বার ট্রেনিং করি। তখনই বুঝতে পারি যে এই রেকর্ডটা ভাঙা অসাধ্য নয়।” নিজের শরীর প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন,”আমি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে আমার শরীরকে বিশ্লেষণ করে থাকি। আমরা যা অনুমান করি আমাদের শরীর ও মন তার থেকে অনেক বেশি ক্ষমতা ধরে।”
এর আগেও তিনি গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম তুলেছেন। সেই রেকর্ড ছিল বিপদসংকুল রাস্তায় সর্বাধিক দূরত্ব সাইকেলে পাড়ি দেওয়ার। কিন্তু কেন এই ধরনের দুঃসাহসিক কাজ করেন তিনি? ভালের্যান জানাচ্ছেন, “আমার শরীর, মন নিয়ে কাজ করতে খুব ভাল লাগে। এতে আমার মন প্রশান্তিতে ভরে যায়। বরফের রেকর্ড হোক বা সাইকেল চালানোর রেকর্ড, সব ক্ষেত্রেই সমান ভাবে প্রস্তুতি নিই।”
[আরও পড়ুন: রাতের খাবারের আগে পুঁচকে সারমেয়র সুগার টেস্ট, নেট দুনিয়ায় ভাইরাল মিষ্টি ভিডিও]
দেখুন ভিডিও