সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: লাল মুনিয়া, সবুজ বাঁশপাতি, দেশি চাঁদিঠোঁট-সহ নানা বিরল প্রজাতির পাখি রয়েছে অজয় নদের পাড়ে গড়জঙ্গলে। বনদপ্তরের পাখি সুমারিতে উঠে এল এমনই তথ্য। পূর্ব বর্ধমান বন বিভাগের উদ্যোগে মঙ্গলবার এবং বুধবার কাঁকসায় বিরল প্রজাতির পাখিদের গণনা। দুর্গাপুর বনাঞ্চলের বনকর্মীরা কাঁকসার দেউলে অজয় নদের ধারে ধারে পক্ষীপ্রেমীদের সঙ্গে নিয়ে এই সমীক্ষা চালায়। নৌকায় চেপেও চলে সমীক্ষা। এখানে উপস্থিত ছিলেন শিবপুর বিট অফিসার অনুপ কুমার মণ্ডল-সহ বনকর্মীরা। লাল মুনিয়া, মাছরাঙা, সাদা বক, ফিঙে, হাঁড়িচাচা-সহ দশ রকমের বিরল প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে। দেখা মিলেছে বহু পরিযায়ী পাখিরও।
বুধবারও দামোদর নদের পাড়ে কাঁকসার আমলাজোড়ার মোবারকগঞ্জে চলেছে সমীক্ষা। বনদপ্তর সূত্রে খবর, বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য জীবজগতে সবার প্রয়োজন। পাখিদের সংখ্যা নিয়েও প্রতিবছর গণনা হয়। সেই সমীক্ষা থেকে বহু বিরল প্রজাতি পাখির দেখা মেলে। সেই পাখি কত রয়েছে, তাও গণনা করা হয়। বিরল প্রজাতির পাখিদের সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ নজরদারিও চালানো হয়।
অজয়ের পাড়ে পাখি সুমারির কাজ করছে বনদপ্তর। নিজস্ব ছবি।
বর্ধমান বন বিভাগের ডিএফও সঞ্চিতা শর্মা বলেন, "বনদপ্তরে উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও পক্ষীপ্রেমীদের সঙ্গে নিয়ে শুরু হয়েছে পাখিদের সমীক্ষা। বিশেষ করে বর্ধমান বন বিভাগের কাটোয়া বনাঞ্চল, বর্ধমান বনাঞ্চল ও দুর্গাপুর বনাঞ্চলে এই সমীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুর রেঞ্জের অজয় নদের ধার ও দামোদর নদের পাশের জঙ্গলে বিরল প্রজাতির পাখিদের সংখ্যা কত রয়েছে সেগুলি দেখা হচ্ছে। যে যে এলাকায় রয়েছে বিরল প্রজাতির পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে সেই এলাকায় বিশেষ নজরদারি চালানো হবে।"
উল্লেখ্য, হাতি, ব্যাঘ্র সুমারির মতো একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর পাখি সুমারিও করে থাকে বনদপ্তর। বনাঞ্চলে জীববৈচিত্র্য ও পাখিদের সংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধির পরিসংখ্যান পেতে শীতকালে মূলত এই গণনা হয়ে থাকে। পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা ও আশপাশে অজয় নদের পাড়ে বহু পাখি দেখা যায় এসময়ে। তবে তারা সকলেই স্থায়ী নাকি এর মধ্যে পরিযায়ীরাও মিশে থাকে, তা জানতে বনদপ্তর সুমারি শুরু করেছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে তিনদিন গণনার পর দেখা গেল, প্রচুর পাখি রয়েছে এখানে।