shono
Advertisement
Royal Bengal Tiger

'ওড়িশার চরম ব্যর্থতা', বাঘিনী-বন্দিতে বাংলার বনদপ্তরের কৃতিত্ব তুলে ধরলেন ব্যাঘ্র বিশেষজ্ঞ জয়দীপ কুণ্ডু

লালগড় অতীত। বাঘ সুরক্ষায় জঙ্গলমহলের গ্রামগুলির বাসিন্দাদের সচেতনতার নেপথ্যে বনদপ্তরের লাগাতার প্রচার, এমনই মনে করছেন জয়দীপ কুণ্ডু।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 07:08 PM Dec 29, 2024Updated: 07:08 PM Dec 29, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক সপ্তাহের 'বাঘবন্দি খেলা'র সমাপ্তি। রবির গোধূলিবেলায় অবশেষে বনদপ্তরের জালে ধরা পড়ল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগ্রেস জিনাত। সম্পূর্ণ সুস্থ, অক্ষত অবস্থায়। যে ঘুমপাড়ানি গুলি ব্যবহার করা হয়েছিল, তার ডোজও বেশি নয়। সাতদিন পর বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহির জঙ্গলে এভাবে বাঘিনীকে বাগে আনার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব বাংলার বনদপ্তরের। বিশেষত সুন্দরবনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বন আধিকারিক ও কর্মীদের। উলটোদিকে নিজের ডেরা থেকে এভাবে বেরিয়ে পড়া যে ওড়িশার বনদপ্তরের চরম ব্যর্থতা বলে মনে করছেন ব্যাঘ্র বিশেষজ্ঞ জয়দীপ কুণ্ডু। 'সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল'কে নিজের মতামত জানালেন তিনি।

Advertisement

অত্যন্ত আনন্দের খবর যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগ্রেসটি এতদিন ধরে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল, তাকে সুস্থ অবস্থায় কবজা করেছেন বনদপ্তরের কর্মী, আধিকারিকরা। এখানে দুটো রাজ্যের বনদপ্তরের তফাৎ। ওড়িশা আর বাংলার বনদপ্তরকে পাশাপাশি বসান। বুঝতে পারবেন ওড়িশা বনদপ্তরের চূড়ান্ত অব্যবস্থার কারণে এই গোটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রেডিও কলার পরানো একটা বাঘ, সে কেন হঠাৎ নিজের জোন ছেড়ে বেরিয়ে গেল? আপনার বাড়িতে কেউ অতিথি হয়ে এলে, তাঁর দায়িত্ব তো আপনারই। ওই বাঘিনীকে তো সিমলিপাল জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল, মানে সেটাই তার বাসস্থান। সেখান থেকে সে চলে গেল কেন? যদিও বা চলে গেল, রেডিও কলার পরানো থাকা সত্ত্বেও তার গতিবিধি চিহ্নিত করা গেল না কেন? ধরাই বা গেল না কেন?

বাঁকুড়ায় খাঁচাবন্দি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগ্রেস জিনাত। নিজস্ব চিত্র।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের বনদপ্তরকে দেখুন। সুন্দরবন থেকে যে বিশেষজ্ঞ টিম ওখানে গিয়েছে বাঘিনীকে ধরতে, তাঁদের মধ্যে বিশেষ করে বলতে হয় দুই অফিসার আর চার-পাঁচজন কর্মীর কথা। আমি যখনই শুনেছি যে ওঁরা দায়িত্ব পেয়েছেন তখনই আমি জানতাম, এই অপারেশন সফল হবে। সুন্দরবনে অনেকদিন ধরে তাঁরা এধরনের কাজ করে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তাঁরা তো দিনরাত এক করে পড়ে ছিলেন এলাকায়। সবসময় নজর রেখেছেন বাঘিনীর যাতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা না হয়, তার জন্য কোনও পরিস্থিতি যাতে প্রতিকূল না হয়। মোট কথা, বাঘিনীর সুবিধা-অসুবিধাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে তাঁরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে গোটা অপারেশন চালিয়েছেন। যে কোনও প্রশংসা, সাধুবাদই তাঁদের জন্য কম। পশ্চিমবঙ্গ বনদপ্তরের এই কৃতিত্ব অসামান্য!

অতীতে লালগড়ের ঘটনার সাক্ষী আমরা। সেখানে আতঙ্কে বাঘটিকে পিটিয়ে মেরেই ফেলা হল। সেসব ভুলে এখন স্থানীয় গ্রামবাসীরাই বাঘ রক্ষায় এগিয়ে আসছেন। জিনাত পুরুলিয়ায় থাকাকালীন সেখানকার জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারাই বারবার বাঘের সুরক্ষার কথা বলছিলেন। চাইছিলেন, মানুষের ভয়ে বাঘের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়। এই মানসিকতা বদল তো পুরুলিয়া বনবিভাগের কৃতিত্ব। মানুষ-বন্যপ্রাণ সংঘাতের বিষয়টি নিয়ে তারা এমনভাবে প্রচার করেছে যে মানুষের মন থেকে সমস্ত আতঙ্ক মুছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। সম্পূর্ণতই এটা পুরুলিয়া জেলার বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা অফিসারদের সাফল্য, বাংলার মহিমা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
Advertisement