সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: ইতিহাস গড়ে সূর্যের দেশে সফলভাবে পাড়ি দিয়েছে ইসরোর আদিত্য এল১ (Aditya L1)। আর সূর্যদেবের খুঁটিনাটি জানতে চাওয়া যানকে ট্র্যাক করার প্রযুক্তি তৈরি করে ফেলেছেন এক বঙ্গ সন্তান। নদিয়ার (Nadia) কালীনারায়ণপুরের ছেলে বরুণ বিশ্বাস ইসরোর সফল মিশন চন্দ্রযান ৩-এর (Chandrayaan 3) নেপথ্যেও ছিলেন, এবার আদিত্যর প্রযুক্তিও তাঁরই নিয়ন্ত্রণে। শনিবার দুপুর ১১টা ৫০ মিনিটে অন্ধ্রের শ্রীহরিকোটা থেকে সফল উৎক্ষেপণের পর গাঁয়ের ছেলের কীর্তিতে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত নদিয়াবাসী। আনন্দে ভাসছেন প্রতিবেশীরা। তবে বাবা, মা অসুস্থ। তাই ছেলের এমন সাফল্যে তাঁদের অনুভূতি ঠিক কেমন, তা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।
কালীনারায়ণপুর সংলগ্ন রাধানগর গ্রামের ছেলে বরুণ। বাবা জহরলাল বিশ্বাস, মা সরস্বতী বিশ্বাস। বীরনগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পড়াশোনার পর কলকাতার বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা (Diploma) করেন। এরপর হলদিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে বি.টেক (B.Tech) সম্পূর্ণ করে সোজা বেঙ্গালুরুতে, ইসরোর বৈজ্ঞানিক হিসেবে যোগদান। চন্দ্রযান ৩-এর বিক্রম ‘ল্যান্ডার’ চাঁদের মাটি ছোঁয়া পর্যন্ত ট্র্যাকিংয়ের কাজ করে গিয়েছেন বরুণ। তাঁরই হাতে তৈরি ১৮ মিমি ডিপ স্পেস টেলিমেট্রি নেটওয়ার্ক অ্যান্টেনা। আর আদিত্য এল১-এর ট্র্যাকিং সংক্রান্ত বিজ্ঞানীদের টিমেও রয়েছেন বরুণ।
[আরও পডু়ন: ‘রিভলবারের একটি গুলিই যথেষ্ট’, সৌরভের গ্রেপ্তারিতে যাদবপুরের রেজিস্ট্রারকে হুমকি চিঠি]
ট্র্যাকিংয়ের (Tracking) কাজটি ঠিক কেমন? আসলে যে কোনও মহাকাশযান উৎক্ষেপণের সময় রকেটটি সঠিক কক্ষপথে যাচ্ছে কি না, না সামান্য হলেও তার গতিপথ বদল হচ্ছে, সেদিকে সারাক্ষণ নজর রাখা হয়। গতিপথ এদিক-ওদিক হলে গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে বিশেষ নির্দেশ পাঠিয়ে তাকে সঠিক কক্ষপথে ফিরিয়ে আনা হয়। এই কাজের জন্য শ্রীহরিকোটা ছাড়াও আন্দামান, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ ব্রুনেই, ফিজি এবং আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসে ইসরোর টিম রয়েছে। এই পাঁচটি দলই মূলত ট্র্যাকিংয়ের কাজটি করে থাকে। বরুণ বিশ্বাস সেই দলের অন্যতম সদস্য। এই মুহূর্তে বরুণ ফিজিতে বসে টিমের সঙ্গে সেই কাজটি করছেন।
[আরও পডু়ন: ‘যাহা চালভাজা, তাহাই মুড়ি’, আচার্য-রাজ্যপালের ‘উপাচার্য’ পদে বসা নিয়ে কটাক্ষ ব্রাত্য বসুর]
আদিত্য এল১-এর লক্ষ্য সফল হলে সূর্যের (The Sun)সবচেয়ে বাইরের স্তর অর্থাৎ কোরোনার (Corona) আবহাওয়া, তাপের উৎস, প্রকৃতি ও সৌরঝড় সম্পর্কিত বহু তথ্য পাওয়া যাবে। অভিযান সফল হলে ভারত মহাকাশ গবেষণার পথে যে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে, তা বলাই বাহুল্য।