shono
Advertisement

Breaking News

ব্রাহ্মণ নন, বাউরি সম্প্রদায়ের মহিলার পুজোতেই সন্তুষ্ট দেবী, জেনে নিন সাত বোন কালীর মাহাত্ম্য

করোনা পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীর কাছে ভিড় সামাল দেওয়াই প্রধান চ্যালেঞ্জ।
Posted: 03:05 PM Nov 13, 2020Updated: 03:05 PM Nov 13, 2020

ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: একটি ঘরের মধ্যে সাতটি বেদিতে অধিষ্ঠিত সাতটি কালী (Kali Puja 2020)। কারোর রং কালো তো কারোর রং নীল বা সবুজাভ। প্রত্যেকে সম্পর্কে একে অপরের বোন। তাদের কাউকেই বিসর্জন করা যায় না। মন্দিরের বাইরে খোলা আকাশের নিচে দুই বোনকে রেখে দেওয়া হয়। প্রকৃতির খেয়ালে গলে যায় মাটি। আর এই সাত বোনের পুজো করেন কোনও ব্রাহ্মণ নয়, গ্রামের বাউরি সম্প্রদায়ের মহিলা। বীরভূমের লাভপুর থানার দ্বারোন্দা গ্রামে এভাবেই কালী রূপে পুজো হয়ে আসছে সাত বোনের।

Advertisement

বহু প্রাচীন এই গ্রামের পাশে রানিপাড়াতে সে সময় এলাকার রাজা ও রানিরা থাকতেন। রানিদের নিরাপত্তার জন্য পরিখা দিয়ে ঘেরা ছিল গোটা গ্রাম। কোন প্রবেশদ্বার ছিল না। নৌকা করে গ্রামে ঢুকতে হত। সেই সব আজ না থকলেও রয়েছে হাতিশালা, জলঘর, রাজবাধ। পুরানে কথিত আছে, গত ৩৫০ বছর আগে দ্বারোন্দা গ্রামে এক বিখ্যাত সাধক মা কালীর সাধনা শুরু করেন। দীর্ঘদিন সাধনা করার পর একদিন তিনি চোখ খুলতেই দেখেন তাঁর সামনে অপূর্ব সুন্দরী সাত কিশোরী দাঁড়িয়ে। প্রত্যেকের খোলা চুল। সাধক প্রথমে চমকে গেলেও পরে তিনি বলেন, “কে তোমরা মা ?” সাতজন জানিয়ে দেয়, “তুই যার সাধনা করছিস আমরা তারা। আমরা সাত বোন। এই সাত বোনের পুজো তোকে করতে হবে।” সাধক বলে ওঠেন, “আমি ব্রাহ্মণ নই, আর আমার সেই আর্থিক ক্ষমতা নেই যে সাত বোনের পুজো করব।” মা কালী জানিয়ে দেন, “তার ব্যবস্থা আমরা করব। চারিদিকে বসন্ত, কলেরা হচ্ছে আমাদের চরণামৃত মেশানো অসুধ যে খাবে তার আর কলেরা , বসন্ত হবে না।” এরপর থেকে কালীরূপী সাত বোনের পুজো শুরু হয়।

[আরও পড়ুন: পূর্ব বর্ধমানের রামনগরে হিমঘরে বিষাক্ত গ্যাস লিক, অসুস্থ শ্রমিক-সহ ১০]

একটি ঘরে সাতটা বেদিতে বসে থাকে সাত বোন। কার্তিক মাসের পাশাপাশি প্রতি অমাবস্যাতে পুজো হয়ে থাকে। এছাড়াও নিত্যসেবাও হয়ে থাকে। পুজো কোন ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের মানুষ করেন না। মূলত গ্রামের পত্রধর বা বাউরি সম্প্রদায়ের মানুষ করে থাকেন। যে পরিবারে পুরুষ নেই, সেই পরিবারের মহিলারাও পুজো করেন। প্রথা অনুসারে কোন কালী বিসর্জন করা হয় না। প্রতি বছর সাত বোনের মধ্যে দুই বোনকে খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়। ঝড়বৃষ্টিতে মায়ের দেহ থেক মাটি গলতে থাকে। পুজোর আগে আবার দু’টি মূর্তি তৈরী করা হয়। সাত বোনের মধ্যে রঙের পার্থক্য রয়েছে। কারও কালোর ভাব বেশি হয় তো কারোর রং হয় নীল, সবুজাভ। মাথায় মুকুট থাকে। গলাতে থাকে মুন্ডমালা। সারা বছর কয়েকহাজার ভক্তের ভিড় হয়। তবে চলতি বছর করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পুজো হলেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

[আরও পড়ুন: আল কায়দার ‘হিট লিস্টে’ বাংলার রাজনীতিবিদরা, ফাঁস চাঞ্চল্যকর তথ্য]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement