সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কৃষ্ণ সাগরের মধ্যিখানে দাউদাউ জ্বলছে পণ্যবাহী দুটি জাহাজ। খারাপ আবহাওয়ার জন্য আগুন নেভানোর কাজ করাই যাচ্ছে না। কয়েকটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। কয়েকজনকে জীবিত অবস্থাতেই পাওয়া গিয়েছে। আবার কেউ কেউ এখনও নিখোঁজ। ক্রিমিয়ার কৃষ্ণসাগরে ক্রাচ প্রণালীর কাছে এমন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন জনা কয়েক ভারতীয়ও। তাঁরা কে, কোথায়, কী অবস্থায় আছে, তার খবরাখবর পেতে মস্কোর রুশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে বিদেশমন্ত্রক।
[ দু’বছরে দৈনিক গড়ে ১৬.৫টি মিথ্যে বলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প!]
রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘তাস’-এর খবর অনুযায়ী, সোমবার তানজানিয়ার পতাকা লাগানো দু’টি পণ্যবাহী জাহাজ কৃষ্ণসাগর দিয়ে যাচ্ছিল সিরিয়ার দিকে। জাহাজ দুটিতে গ্যাসোলিন জাতীয় পদার্থ ছিল। সিরিয়া বর্তমান পরিস্থিতিতে সে দেশে গ্যাসোলিন-সহ একাধিক জ্বালানি বস্তুও আমদানি করছে। তাকে সাহায্যের জন্য রাশিয়া তুরস্ক মারফত তা পাঠিয়েছিল। গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারির পর তাকে সাহায্যের বিষয়টি অনেকটা জটিল হয়েছে। ঘুরপথে রাশিয়া-সহ সিরিয়ার বন্ধুদেশগুলির সাহায্য সেখানো পৌঁছচ্ছে। সোমবারও ক্রিমিয়া সংলগ্ন কৃষ্ণসাগর দিয়ে ক্রাচ প্রণালী হয়ে, আজভ সাগর সংলগ্ন তুরস্ক দিয়ে জাহাজ দু’টি যাচ্ছিল সিরিয়ার দিকে। মাঝপথে ক্রাচ প্রণালীর কাছে একটি ভেসেল থেকে আরেকটি ভেসেলে জ্বালানি ভরতে গিয়েই ঘটে যায় বড়সড় দুর্ঘটনা। দাহ্য গ্যাস সমুদ্রের জলের সংস্পর্শে আসতেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। দুর্গম জায়গায় উদ্ধারকারী দল পৌঁছানোর আগেই মৃত্যু হয়েছে দুই জাহাজের অন্তত ১৪ জনের। সূত্রের খবর, মৃতদের মধ্যে ভারতীয় নাবিকরাও আছেন বলে আশঙ্কা বাড়ছে। জাহাজ দুটিতে ১৬ জন তুরস্কের এবং ১৫ জন ভারতীয় নাবিক ছিলেন। ১২ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা গিয়েছে। কয়েকজন এখনও নিখোঁজ। প্রাথমিক অনুমান, প্রাণ বাঁচাতে কৃষ্ণ সাগরের হাড়হিম করা জলে ঝাঁপ দিয়েছেন তাঁরা। এই মুহূর্তে কৃষ্ণ সাগরের আবহাওয়া বিশেষ ভালো নয়। তাই নিখোঁজদের উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। তা নিয়ে উদ্বেগে রুশ পরিবহণ মন্ত্রকও।
সেলফি তুলতে গিয়ে গিরিখাতে পড়ে মৃত ‘বিকিনি ক্লাইম্বার’ গিগি
এই পরিস্থিতিতে মস্কোর রুশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে দিল্লি। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রভিশ কুমার জানিয়েছেন, ‘আমরা দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমাদের নাবিকরা কী অবস্থায় আছেন, সেই তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছি। পরিস্থিতি বুঝলে, ভারতও উদ্ধারকাজে সাহায্য করবে।‘ এমনিতে এই জলপথ ধরে যাওয়ার সময় তেমরিউক বন্দরে জাহাজগুলি দাঁড়ায়, প্রয়োজনীয় জ্বালানি এবং অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে নেয়। এছাড়া আরও দু’টি ছোট বন্দর আছে। কিন্তু এক্ষেত্রে তানজানিয়ার জাহাজ দুটির কেন ক্রাচ প্রণালীর কাছে জ্বালানি নেওয়ার প্রয়োজন পড়ল, তা বোঝা যাচ্ছে না।