shono
Advertisement

যন্ত্রণাহীন মৃত্যু ‘উপহার’ দিচ্ছে ফণাহীন কালাচ, বর্ষার শুরুতেই ছড়াচ্ছে সর্পাতঙ্ক

গ্রাম বাংলার সবচেয়ে বড় ত্রাস হয়ে উঠেছে এশিয়ার বিষাক্ততম এই সরীসৃপ৷ The post যন্ত্রণাহীন মৃত্যু ‘উপহার’ দিচ্ছে ফণাহীন কালাচ, বর্ষার শুরুতেই ছড়াচ্ছে সর্পাতঙ্ক appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:31 PM Aug 19, 2019Updated: 07:40 PM Aug 19, 2019

গৌতম ব্রহ্ম: যদি কাটে ডোমনা, ডেকে আন বামনা!

Advertisement

ডোমনা চিতি বা কালাচ সম্পর্কে এমন অনেক প্রবাদ ছড়িয়ে আছে বাংলাজুড়ে। মৃত্যু এবং কালাচ যেন সমার্থক! মানুষ মারতে এই সাপের মাত্র ১ মিলিগ্রাম বিষই যথেষ্ট। বর্ষার শুরুতেই এশিয়ার বিষাক্ততম এই সরীসৃপই গ্রাম বাংলার সবচেয়ে বড় ত্রাস হয়ে উঠেছে। ঘুম কেড়ে নিচ্ছে মাটির ঘরে থাকা মানুষের।

[ আরও পড়ুন: লাভপুরে বিজেপি নেতাকে বোমা মেরে খুন দুষ্কৃতীদের, অপসারিত ওসি]

জানা গিয়েছে, কেউটে-গোখরোর মতোই কালাচের বিষ নিউরোটক্সিক। অর্থাৎ স্নায়ুতন্ত্র অকেজো করে দেয়। কিন্তু রহস্যময়তার জন্য মানুষ মারার খেলায় ফণাহীন কালাচ অনেকটাই এগিয়ে কেউটে-গোখরোর থেকে। সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় পারদর্শী ডা. শ্যামল কুণ্ডু জানান, বাঁকুড়া-পুরুলিয়া জেলায় গত তিন বছরে ৯০০-১১০০ সর্পদ্রষ্ট মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ৪০ শতাংশ ‘ড্রাই বাইট’। অর্থাৎ দংশন করলেও সাপ বিষ ঢালতে পারেনি। বাকি ৫৫০ রোগীর মধ্যে ২২০ জনই কালাচের শিকার। দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, হুগলি, হাওড়া—সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় কালাচ দেখা যায়। এমনটাই জানালেন সর্পবিশেষজ্ঞ শিবাজি মিত্র।

[ আরও পড়ুন: আশা দেখাচ্ছে ‘দিদিকে বলো’, আমতায় হৃত জমি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় মরিয়া তৃণমূল ]

গত ২৪ জুলাই নদিয়ার চাপড়ার মহেশনগরে একই দিনে ভাই ও দিদির মৃত্যু হয়েছে কালাচ-দংশনে। দিদি বৃষ্টি খাতুনের সঙ্গে রাতে মেঝেয় শুয়েছিল ছ’বছরের ফারদিন। ভোর তিনটেয় ফারদিনের, পরের দিন বেলায় বৃষ্টির মৃত্যু হয়। বাড়ির লোক সর্পদংশনের বিষয়টি বুঝতেই পারেনি। অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে কালাচের ছোবল প্রাণ কেড়েছে রকি বাউরি নামে আরেক ছ’বছরের শিশুর। রকির ক্ষেত্রেও বাড়ির লোক সর্পদংশনের বিষয়টি বুঝতে পারেনি।

ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য শিক্ষক সৌম্য সেনগুপ্ত জানান, ১০০ জনকে কালাচ কামড়ালে ৯০ জনই বুঝতে পারেন না সাপে কামড়েছে। বেশিরভাগ মানুষ পেটের গন্ডগোল মনে করে পাত্তা দেয় না। যেমনটা রকি, বৃষ্টি ও ফারদিনের ক্ষেত্রে হয়েছে। আসলে কালাচের কামড়ে কোনও জ্বালাযন্ত্রণা থাকে না, দংশনস্থলে কোনও চিহ্ন থাকে না। পেটে ব্যথা, গাঁটে গাঁটে ব্যথা, খিঁচুনি কিংবা শুধুমাত্র দুর্বলতা অনুভব করার লক্ষণের সঙ্গে দু’চোখের পাতা পড়ে আসার মতো সমস্যা শুধু দেখা যায় রোগীর শরীরে। অন্যদিকে কেউটে-গোখরো বা চন্দ্রবোড়ার দংশনে প্রবল জ্বালাযন্ত্রণা। ফলে সাপে কাটলেই ধরা পড়ে যায়।

[ আরও পড়ুন: কটূ কথা ও পরামর্শের মিশেল, ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে হরেক অভিজ্ঞতা বিধায়কদের ]

রকিদের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন সৌম্যরা। দেখেছেন, বাড়িতেই মশারি টাঙিয়ে ঘুমানোর রেওয়াজ নেই। কালাচের হাত থেকে বাঁচতে সবার প্রথমে দু’টি জিনিস করতে হবে। এক, মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে। দুই, বাড়িতে থাকা ইঁদুরের গর্ত বুজিয়ে ফেলতে হবে। যাঁরা মাঠে চাষ করতে যান, তাঁরা ত্রিপল দু’–তিন পরত কাঁথার মতো সেলাই করে তা দিয়ে মোজা বানিয়ে পরলেও নিশ্চিন্ত। কামড়ালেও সাপ বিষ ঢালতে পারবে না। সর্পদ্রষ্ট রোগের চিকিৎসক ডা. দয়ালবন্ধু মজুমদার জানান, ডোমনা কাটলেই বামন ডাকতে হবে, একথা এখন আর খাটে না। সাপে কামড়ানোর বা লক্ষণ দেখা দেওয়ার ১০০ মিনিটের মধ্যে ১০ ভায়াল ও চন্দ্রবোড়ার ক্ষেত্রে ২০ ভায়াল এভিএস শরীরে প্রবেশ করলে রোগীর বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।

The post যন্ত্রণাহীন মৃত্যু ‘উপহার’ দিচ্ছে ফণাহীন কালাচ, বর্ষার শুরুতেই ছড়াচ্ছে সর্পাতঙ্ক appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement