shono
Advertisement

ভাল ফসল পেতে ভরসা মাটি, জেনে নিন স্বাস্থ্যরক্ষার প্রণালী

কৃষিকাজে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাটির স্বাস্থ্যরক্ষা। The post ভাল ফসল পেতে ভরসা মাটি, জেনে নিন স্বাস্থ্যরক্ষার প্রণালী appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:26 PM Jun 20, 2019Updated: 03:26 PM Jun 20, 2019

ধীমান রায়, কাটোয়া:  কৃষিকাজে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাটির স্বাস্থ্যরক্ষা। একই জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন এবং রাসায়নিক সারের উপর অত্যধিক নির্ভরশীলতার ফলে রাজ্যে চাষের জমির উৎপাদিকা শক্তি ক্রমশ কমছে। এজন্য মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে মাটিকে লালন করা একান্ত জরুরি। বিভিন্ন ভূমিজ ও বায়ুমণ্ডলীয় ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় মাটিতে প্রয়োজনীয় খাদ্য প্রস্তুত হলেও সেখানে বসবাসকারী ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণুগুলির ভূমিকা অপরিসীম।

Advertisement

মাটির নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতি: জমির চারধার থেকে দুই ফুট ভিতরে সাত-আটটি জায়গা থেকে এবং মাঝখানের দুই থেকে চারটি জায়গা এলোমেলো বা কোনাকুনিভাবে নির্বাচন করে জমির ওপরের অংশের আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। প্রতিটি স্থানের উপর থেকে ছ’ইঞ্চি থেকে ন’ইঞ্চি নিচ পর্যন্ত মাটি ‘ভি’ আকৃতি করে ফেলে দিতে হবে। ফসলের শিকড়ের গভীরতা অনুযায়ী ‘ভি’ আকৃতির গর্তের ধার থেকে মাটির পাতলা স্তর সংগ্রহ করে একসঙ্গে মেশাতে হবে। পুরো মাটি শুকিয়ে গুঁড়ো করে সমান চারটি ভাগে ভাগ করে আড়াআড়ি দু’ভাগ ফেলে দিতে হবে। পড়ে থাকা মাটিকে ফের চার ভাগ করে দু’ভাগ নিয়ে ৫০০ গ্রাম মাটি একটি পলিথিনের প্যাকেটে ভরে মাটি পরীক্ষাকেন্দ্রে বা স্থানীয় কৃষি অধিকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছে দিতে হবে। উল্লেখ্য, জমিতে ফসল থাকাকালীন অবস্থায়, সারের গর্ত, পুরাতন আল, জলাজমি বা সার দেওয়া জমি থেকে মাটির নমুনা সংগ্রহ করা যাবে না।

[ আরও পড়ুন: রাসায়নিক নয়, ভাল ফলন পেতে কৃষকের ভরসা কেঁচো সারই]

মাটি সংশোধনের জন্য চুনজাতীয় পদার্থ প্রয়োগ: সাধারণত পিএইচ ৬.০ নিচে হলে প্রতি ০.১ পিএইচ বাড়ানোর জন্য একর প্রতি আরও ২০০ কেজি চুন প্রয়োজন। আর পিএইচ ৮ এর উপরে হলে ০.১ পিএইচ কমানোর জন্য প্রতি একরে আরও ২০০ কেজি জিপসাম প্রয়োগের কথা বলা হয়। চুন প্রয়োগের সময় গুঁড়ো করে মেশানো ভাল। মাটির ছ’ইঞ্চি গভীরতার মধ্যে চুন দিতে হবে। ফসল লাগানোর কমপক্ষে তিন সপ্তাহ আগে মাটিতে চুন মেশাতে হবে। গ্রীষ্মকালে জমিতে চুন মেশানো ভাল। মাটিতে গ্রহণযোগ্য নাইট্রোজেন পরিমাণ জানতে জৈব কার্বনের মান নির্ণয় করা হয়। পাশাপাশি মাটিতে গ্রহণযোগ্য ফসফেট ও পটাশের পরিমান উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন কোনও মাত্রায় থাকে তা নির্ণয় করা হয়।

জৈব সার: উদ্ভিদ ও প্রাণিজাত দ্রব্য হল জৈব সার। আবর্জনা, গোবর, সবুজসার, গাছপালা, খড় প্রভৃতি জৈব বস্তু এ কাজে ব্যবহার করা হয়। যে সব মাটিতে জৈব বস্তু কম থাকে সেখানে রাসায়নিক সারের কার্যকারিতা কম পাওয়া যায়। জৈবসার প্রয়োগে মাটির গঠন উন্নত হয়। মাটির মধ্যে বায়ু চলাচল ও মাটির জলধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। মাটির অম্লত্ব, ক্ষারত্ব ও তাপসাম্য বজায় থাকে। গাছ ও অনুখাদ্যের সরবরাহও বৃদ্ধি পায়।

[ আরও পড়ুন: রুই-কাতলার মতো পুকুরে ইলিশ চাষ, চমক মগরার চণ্ডীচরণের]

জৈব সার তৈরির কৌশল: জৈব সারের প্রধান উৎস গরু, মোষ, ছাগল, ভেড়ার মলমূত্র, হাঁস, মুরগির বিষ্ঠা, গৃহপালিত পশুর দেহাবশেষ, শুকনো মাছ, মাছের গুঁড়ো, কচুরি পানা, জঙ্গলের লতাপাতা, তরকারির খোসা, বিভিন্ন ফসলের অবশিষ্টাংশ ইত্যাদি। এই সমস্ত উপকরণ দিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে জৈর সার প্রস্তুত করা হয়। জৈবসার ছাড়াও মাটির স্বাস্থ্যরক্ষায় কেঁচোসারের প্রচণ্ড গুরুত্ব রয়েছে। কেঁচোসার তৈরি করতেও বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। কৃষি দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই হাতেকলমে এমন সার তৈরির পদ্ধতি শেখানো হয়। এক কথায়, কৃষিক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি সারের বিকল্প নেই। মাটির স্বাস্থ্য বজায় থাকলে তবেই ফসলের উৎপাদন স্বাভাবিক থাকে।

ছবি: জয়ন্ত দাস

The post ভাল ফসল পেতে ভরসা মাটি, জেনে নিন স্বাস্থ্যরক্ষার প্রণালী appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement