সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ম্যাচের আগে বলেছিলেন, অস্ট্রেলিয়া (Australia) ঝড় হিসেবে তাঁর দলের দিকে ধেয়ে আসবে। তাঁর আন্দাজ শেষ পর্যন্ত সত্যি হল। তিনি ইগর স্টিমাচ (Igor Stimac)। শেষ পর্যন্ত লড়াই করেও হার হজম করল ভারত (India)। তবে চলতি এএফসি এশিয়ান কাপের (AFC Asian Cup) প্রথম ম্যাচে সেই ঝড় পুরোপুরি রুখতে না পারলেও অনেকক্ষণ, ২০১৫ সালের জয়ী দলকে আটকে রাখতে পেরেছিলেন সন্দেশ জিঙ্ঘান (Sandesh Jinghan), শুভাশিস বোসরা (Subhasish Bose)। আর তাই হারলেও খুব একটা হতাশ নন সুনীল ছেত্রীদের (Sunil Chhetri) হেড স্যর।
পর সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “অস্ট্রেলিয়া যেহেতু শারীরিকভাবে এগিয়ে, তাই আমরা জানতাম এটা আমাদের পক্ষে একটা কঠিন ম্যাচ হতে চলেছে। ফল যা হয়েছে, তাতে খুশি হওয়ার কারণ নেই। কিন্তু সব মিলিয়ে অনেক ইতিবাচক দিক পাওয়া গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া যে দুটো গোল করেছে, সেগুলো কিন্তু ওদের অসাধারণ খেলার ফল নয় বরং আমাদের দায়িত্বজ্ঞনহীনতায় ওরা এই গোলদুটো পায়।”
[আরও পড়ুন: অজিদের বিরুদ্ধে লড়েও হার, এশিয়ার মঞ্চে সম্মান আদায় করল সুনীল-সন্দেশের ভারত]
ক্রোয়েশিয়ার প্রাক্তন বিশ্বকাপার খুব একটা ভুল বলেননি। কারণ, ৫০ মিনিটে বাঁদিক থেকে একটি ক্রস ভেসে আসলে, গুরপ্রীত সিং সান্ধু (Gurpreet Singh Sandhu) এগিয়ে সেভ করতে আসেন। তবে বাঁচাতে পারেননি। প্রথমার্ধের যাবতীয় লড়াই এক মুহূর্তের ভুলে নষ্ট হয়। মার্টিন বয়েলের সেন্টারকে সেভ করার চেষ্টা করেন গুরপ্রীত। বল গ্রিপ করার বদলে পাঞ্চ করেছিলেন। সেই ফিরতি বল চলে যায় সরাসরি জ্যাকসন আরভিনের কাছে। সেই বল ধরেই আরভিন বল জালে জড়ান। ১-০ এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। এর পর ৭৩ মিনিটে ফের ভুল করেন গুরপ্রীত। তাঁর সঙ্গে অবশ্য নিখিল পূজারিও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ম্যাচের ৭২ মিনিটে দুই পরিবর্ত ফুটবলারের সৌজন্যে দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় অজিরা। রাইলি ম্যাকগ্রির মাইনাস থেকে আনমার্কড অবস্থায় জর্ডন বসের হালকা টাচে জালে জড়িয়ে যায় বল। নিখিল পুজারির ভুলে ২-০ এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
দলের পারফরম্যান্সে কেন তিনি খুশি? স্টিমাচের প্রতিক্রিয়া, “অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমার্ধে কোনও গোল করতে দিইনি। কোচ হিসেবে এটা আমার খুশি হওয়ার অন্যতম কারণ। প্রথমার্ধে আমরা একটাই ভালো সুযোগ পাই, সেটা বাইরে চলে যায়। আমরা তখন গোল পেতে পারতাম। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। আমরা ওই সময়ে সেখানেই আটকে ছিলাম, যেখান থেকে দ্বিতীয় পাস খেলে হাফ লাইন পেরোতে পারছিলাম না। এই ব্যাপারটা নিয়ে আমরা অনুশীলনে অনেক কাজ করেছি। কিন্তু মাঠে তার প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। যাই হোক, সব মিলিয়ে আমি খুশি। অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের কাছে হেরেছি। এ বার আমাদের পরের দুটো ম্যাচের দিকে তাকাতে হবে। এ বার আমাদের আসল প্রতিযোগিতা শুরু হবে।”
কাতারের আল রায়ানের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে বিশ্বের ২৫ নম্বর ও এশিয়ার চার নম্বর দল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে অসাধারণ রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে ভারত। গত কাতার বিশ্বকাপ খেলা অজিদের বিরুদ্ধে ঘন ঘন আক্রমণে ওঠার চেষ্টা না করে নিজেদের রক্ষণকে দুর্ভেদ্য করে তোলার পরিকল্পনা নিয়েই নেমেছিলেন সুনীলরা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র ২৩ মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল হজম করতেই বদলে যায় চিত্র। তবে এই পারফরম্যান্স অবশ্যই ভারতের পরের দুই ম্যাচের জন্য আশা জিইয়ে রাখল। আগামী ১৮ জানুয়ারি ভারতের পরবর্তী প্রতিপক্ষ আর একটি শক্তিশালী উজবেকিস্তান।