কাতার বিশ্বকাপে আরও একটা বারুদে ঠাসা সেমিফাইনাল। ফ্রান্সের সামনে মরক্কো। কেমন হবে সেই ম্যাচ? এমবাপেকে কি থামাতে পারবেন বন্ধু হাকিমি? বিস্ফোরক ম্যাচের বিশ্লেষণে তিন প্রধানের প্রাক্তন ফুটবলার ডগলাস দ্য সিলভা।
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে আরও একটা বড় ম্যাচ। ফ্রান্সের সামনে মরক্কো (France vs Morocco)। দুই দলেই রয়েছে প্রচুর মশলা। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে এমন একাধিক খেলোয়াড় রয়েছে দুই দেশের কোচের তূণেই। আমি কিন্তু দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফ্রান্সেরই পক্ষে।
ফ্রান্স (France) গতবারের চ্যাম্পিয়ন। ওদের সম্পর্কে বলা খুবই সহজ। এবারের টুর্নামেন্টে ওরা বেশ ভাল ফুটবল খেলছে। গ্রুপে কেবল একটা ম্যাচে হেরেছে। অবশ্য সেই ম্যাচের আগেই ফ্রান্স পৌঁছে গিয়েছিল নকআউটে। ফ্রান্সের কাজটা এবার কিঞ্চিৎ কঠিন। কারণ বিশ্বকাপের অন্যতম শক্তিশালী রক্ষণভাগের সামনে এবার এমবাপেরা। নিঃসন্দেহে মরক্কোর ডিফেন্স খুবই শক্তিশালী। তারুণ্যে ভরপুর দল। বিশ্বকাপের প্রায় তিন মাস আগে মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগরেগুইয়ের হাতে রিমোট কন্ট্রোল তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ে তাঁকে নিয়ে কত টীকাটীপ্পনী। কিন্তু বিশ্বকাপে এসে ছবিটা পুরোদস্তুর বদলে গিয়েছে। তাঁর দল প্রতিপক্ষকে খেলার জায়গাই দিচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত মরক্কোর জালে বল জড়াতে পারেনি অন্য দলগুলো। কানাডার বিরুদ্ধে কেবল আত্মঘাতী গোল হয়েছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে মরক্কোর ডিফেন্স কতটা শক্তিশালী।
[আরও পড়ুন: খারাপ পারফরম্যান্স, চাকরি যাচ্ছে মহামেডানের হেডস্যরের, দায়িত্বে মোহনবাগানের প্রাক্তন কোচ!]
ফ্রান্স যে মরক্কোর রক্ষণ ভাঙতে পারবে না, এমন কথা আমি বলছি না। ফরাসিরা যথেষ্ট অভিজ্ঞ। ছ’ জন গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার নেই এই ফ্রান্সে। তবুও দিদিয়ের দেশঁর দলকে দুর্বল দেখাচ্ছে না। বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে খেলে ফ্রান্স। প্রতিপক্ষের রক্ষণে কোন সময়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, তা জানে ফরাসিরা।
দ্বিতীয় সেমিফাইনালের রেজাল্ট কী হবে, তা বলা খুবই কঠিন ব্যাপার। তবে ম্যাচে ১-২ গোলের বেশি হবে বলে মনে হচ্ছে না। তবে ফুটবলে সবই সম্ভব। ফ্রান্সের মতো একটা দল যখন খেলতে নামছে, তখন গোলসংখ্যা বাড়তেও পারে। ফ্রান্সের প্লেয়ারগুলোর নাম দেখুন- গ্রিজম্যান, এমবাপে, জিরু। দল হিসেবে মরক্কো সংগঠিত। ওরা বেপরোয়া হবে বলে মনে হয় না। ফ্রান্স এক গোল করে এগিয়ে গেলেও এই মরক্কোর মানসিকতায় চিড় ধরবে না। প্রথম ম্যাচ থেকেই মরক্কোর কোচ বিষয়টা পরিষ্কার করে দিয়েছেন। তাঁর ছেলেরা মাঠের ভিতরে মরিয়া লড়াই করছে। লড়াইটা আজ দুই বন্ধুরও। এমবাপে বনাম হাকিমির লড়াইটা বেশ ইন্টারেস্টিং হবে। প্যারিস সাঁ জাঁ-তে খেলে এমবাপে আর হাকিমি। অভিন্ন হৃদয় বন্ধু ওরা। একে অপরের শক্তি-দুর্বলতা জানে। এমবাপে অতি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার। যে কোনও সময়ে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে ও। হাকিমির দিক দিয়েই আক্রমণ শানাবে এমবাপে। মরক্কোর রাইট ব্যাক হাকিমি রক্ষণে যেমন দক্ষ, তেমনই আক্রমণেও বেশ সাবলীল। তবে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে খুব বেশি আক্রমণে ও যাবে না।
ব্যক্তিগত দক্ষতার ঝলকানি নেই মরক্কোয়। কাতারে একটা দল হয়ে উঠেছে মরক্কো। টিম মরক্কো স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে স্পেন, পর্তুগালের। মরক্কোর এন নেসিরির দিকে নজর দিতে হবে ফ্রান্সকে। শূন্যে শক্তিশালী এন নেসিরি। হাল ছেড়ে দেওয়ার বান্দা নয়। এমবাপে, হাকিমিদের খেলা তো দেখবই। নেসিরিকে কীভাবে সামলায় ফ্রান্স, সেই দিকেও আমার নজর থাকবে। বল পজেশন যার বেশি, সেই দলই ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করবে।