জোস ব্যারেটো: এই ম্যাচটা এলেই আমি কেমন জানি নস্টালজিক হয়ে পড়ি। এই ডার্বিই আমাকে জোস ব্যারেটো (Jose Ramirez Barreto) তৈরি করেছিল। কারণ, এই ডার্বিতেই (Derby match) গোল করেছি, ম্যাচ জেতানোর অবদান রাখতে পেরেছি বলেই তো সমর্থকরা এখনও হৃদয়ে রেখেছেন আমাকে। এখনও আমাকে নিয়ে আলোচনা হয়। তাই, এই ডার্বি আমার কাছে সব সময় বিশেষ মুহূর্ত।
মোহনবাগান (Mohunbagan) ফুটবলারদের উদ্দেশে বলতে পারি, এই ম্যাচে নিজেদের প্রমাণ করতে পারলে তোমরাও মোহনবাগান জনতার নয়ণের মণি হয়ে থাকবে চিরকাল। এই প্রাপ্তির অনুভূতি বলে বোঝানো যাবে না। এবার আসি শুক্রবারের ম্যাচ প্রসঙ্গে। ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ধারাবাহিকভাবে সাত ম্যাচ অপরাজিত থেকে খেলতে নামছে। ওদের এই ঘুরে দাঁড়ানোটা সত্যি ভালো দিক। তার উপর এই ম্যাচটাতে ড্র করতে পারলেই সুপার কাপের (Kalinga Super Cup) সেমিফাইনালে চলে যাবে ওরা। অনেকেই বলছে এগিয়ে ইস্টবেঙ্গল। আমি জেসন কামিংসদের (Jason Cammins) বলতে চাই, যেটা সবাই পিছিয়ে থাকা বলছে, সেটাই তোমাদের প্লাস পয়েন্ট হওয়া উচিত। ড্র নয়, নকআউট ম্যাচ ভেবে জয়ের জন্য নামবে তোমরা। জয় ছাড়া মাথায় অন্য কিছু থাকবে না।
[আরও পড়ুন: এশিয়ান কাপে উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে নামছে ভারত, নতুন ইতিহাস লিখতে চান সুনীলরা]
যখন খেলতাম তখন মাঠে নেমে গ্যালারিতে সমর্থকদের উন্মাদনার দৃশ্য দেখতাম। সেটাই আমাকে তাতিয়ে দিত ডার্বিতে। কামিংস, সাদিকুদের বলব– একবার ওই সমর্থকদের দিকে তাকাও। তাহলেই দেখবে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। আগের ম্যাচে কার কী ফলাফল ছিল এই ম্যাচে তা বিচার্য নয়। এটা পুরোপুরি অন্য ম্যাচ। হতে পারে মোহনবাগানের এই দলে অনেকের চোট, অনেকেই জাতীয় দলে। কিন্তু আমি বলব যারা রয়েছে তারাও তো সব পেশাদার ফুটবলার। কে আছে, কে নেই আর না ভেবে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করো।
ইস্টবেঙ্গলের কার্লেস কুয়াদ্রাত (Carles Cuadrat) যেমনভাবে দলের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন, মনে রাখতে হবে ডার্বির আগে আন্তোনিও হাবাসের (Antonio Lopez Habas) মোহনবাগান কোচ হিসাবে মাঠে থাকাটাও কিন্তু একটা বড় ফ্যাক্টর। হাতে হয়তো সময় নেই। তবু আমি বলব, হাবাস ভারতীয় ফুটবলে পরিচিত নাম। সফল এবং অভিজ্ঞ কোচ। এই ম্যাচটার গুরুত্ব আলাদা করে বোঝানোর নেই ওঁকে, বরং ওঁর অভিজ্ঞতা একটা বড় প্রাপ্তি হতে পারে ডার্বিতে। ফুটবলারদের এই ধরনের ম্যাচে কীভাবে মোটিভেট করতে হয়, তা তিনি জানেন।
আরেকটা বিষয় আমার মনে হয়, ম্যাচটা কিন্তু কলকাতায় হচ্ছে না। কলকাতায় হলে যে পরিমাণ মানসিক চাপ নিতে হয় ফুটবলারদের, অন্য রাজ্যে সেই চাপ কিছুটা হলেও কম থাকে। এটা দুই দলের ফুটবলারদের কাছে কিছুটা ভালো দিক মনে হতে পারে। কিন্তু দিনের শেষে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, কলকাতার যে মানুষটা সারা বছর খেলা দেখেন না, সেই মানুষটা কিন্তু ডার্বির খোঁজ নেবেনই। তাই এটাই নায়ক হওয়ার সেরা সুযোগ।