সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোল করার পর আকাশের দিকে তাকিয়ে ঠাকুমাকে গোল উৎসর্গ করেন লিওনেল মেসি (Lionel Messi)। প্রয়াত ঠাকুমার উদ্দেশে মন্ত্রোচ্চারণের মতো কিছু বলেন। গোলের পর মেসির এই উদযাপেনর সঙ্গে সবাই পরিচিত। বিশ্বকাপ ফাইনাল (Qatar World Cup Final) তখন দারুণ জায়গায়। টানটান উত্তেজনা। ম্যাচ গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। সেই সময়ও মেসিকে আকাশের দিকে তাকিয়ে ঠাকুমার উদ্দেশে কিছু বলতে শোনা গিয়েছিল।
একটি ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। আর তাতেই দেখা যাচ্ছে, মেসি বলছেন, ”আজই হয়তো সেই দিন।”
আর্জেন্টিনার মন্টিয়েল তখন জেতার জন্য পেনাল্টি শট নিতে যাচ্ছেন। আর মন্টিয়েলের পেনাল্টি জালে জড়াতেই মেসি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। হাঁটু মুড়ে বসে পড়তে দেখা যায় আবেগী মেসিকে। ৩৬ বছর পরে বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা।
[আরও পড়ুন: এবার বাংলাদেশে দেখা যাবে মেসিকে? জুনেই ওপার বাংলায় খেলতে আসছে আর্জেন্টিনা]
১৯৯৮ সালে মারা যান মেসির ঠাকুমা সিলিয়া অলিভিয়েরা। এলএম টেনের তখন মাত্র ১১ বছর বয়স। সিলিয়া না থাকলে আজকের মেসিকে হয়তো আমরা পেতামই না। রোজারিওর ধুলো মাখা রাস্তায় মেসিকে নিয়ে ছড়িয়ে আছে কত কিংবদন্তি, তার ইয়ত্তা নেই।
ছোট্ট ক্লাব গ্রান্দোলিতে খেলতে যেত মেসির দাদা, আত্মীয় স্বজনরা। একদিন ক্লাবের খেলায় একজন কম পড়েছে। কাকে নেবেন কোচ? হঠাৎই সিলিয়া চিৎকার করে বলে উঠলেন, ”লিওকে নাও।” লিওর বয়স তখন চার। বড়দের সঙ্গে খেলতে গেলে চোট লেগে যাবে। সেই আশঙ্কায় কোচ বলে উঠলেন, ”এত ছোট ছেলেকে নেওয়া যাবে না।” সিলিয়া নাছোড়বান্দা। লিওকে মাঠে নামিয়েই ছাড়লেন তিনি। তার পরে দুটো গোলও করেছিল ছোট্ট মেসি। খেলার শেষে গর্বিত ঠাকুমা এসে কোচকে বললেন, ”দেখলে তো! ওকে বুট জোড়া কিনে দিও। আমি ওকে প্র্যাক্টিসে নিয়ে আসব।”
শহরের সব চেয়ে দুর্বল দল ছিল গ্রান্দোলি। ছোট্ট মেসি খেলতে চাইত না ওই ক্লাবে। ময়দানে একটা কথা প্রচলিত আছে, বড় ক্লাবে গিয়ে রিজার্ভ বেঞ্চে বসার থেকে ছোট ক্লাবের বড় প্লেয়ার হওয়া ঢের ভালো।
মেসির ঠাকুমা বলতেন, ”ক্লাবটা দুর্বল, তোমার জন্যই তা ভাল, তাই না?” ঠাকুমার কথা বিন্দুবিসর্গ বুঝতেন না মেসি। কী করে তা হয়? ঠাকুমা বলতেন, ”দুর্বল দলের একজন দারুণ প্লেয়ার দরকার। লিও তোমাকে ওদের দরকার। ওরাও জানে না তুমি কত বড় প্লেয়ার। ওদের তুমি দেখিয়ে দাও।”
মেসির নতুন করে প্রমাণ করার কিছু নেই। বিশ্বকাপ জয় কেবল বাকি ছিল। সেটাও হয়ে গিয়েছে।