অর্ণব আইচ: এসএসসি (SSC) দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ২দিনের ইডি (ED) হেফাজতের নির্দেশ দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। শনিবার দুপুরে তাঁকে আদালতে পেশের পর ১৪ দিন হেফাজতের আবেদন জানান ইডি আধিকারিকরা। উলটোদিকে মন্ত্রীর আইনজীবীরা তাঁর জামিনের আবেদন জানান। দু’পক্ষে সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক ২দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন। সোমবার তাঁকে আবার ইডির বিশেষ আদালতে পেশ করা হবে। তার আগে পর্যন্ত তাঁকে জেলবন্দি থাকতে হবে। মন্ত্রীকে জেরা করে এই মামলায় আরও বিস্তারিত তথ্য় জানতে চাইবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। তবে এদিন বিচারক ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়ার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অসুস্থতা বাড়তে থাকায় তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার নির্দেশও দেন বিচারপতি। পার্থর গ্রেপ্তারির পর জরুরি বৈঠকে বসেছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে বৈঠকে রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম, কুণাল ঘোষ, অরূপ বিশ্বাস।
স্কুল শিক্ষক নিয়োগ মামলায় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল আগেই। ২১ জুলাই, তৃণমূলের শহিদ দিবসের পরই তাঁর নাকতলার বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন ইডি আধিকারিকরা। প্রায় ২৭ ঘণ্টা জেরার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করা হয়। নাকতলার বাড়ি থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ডায়মন্ড হারবার রোড হয়ে জোকার ইএসআই-তে। সেখানে মন্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষা হয়। তারপর তাঁকে ব্যাংকশাল আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: কেন গ্রেপ্তার হলেন পার্থ? কী এই এসএসসি দুর্নীতি? জেনে নিন]
শুনানির সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায় অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে লকআপেই রাখা হয়। আদালতে সওয়াল-জবাব চলে দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে। পার্থবাবুর আইনজীবীর বক্তব্য, এর আগে তাঁকে সিবিআই জেরার জন্য ডেকেছিল। তিনি সহযোগিতা করেছেন। হাই কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ আছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা যতবার খুশি জেরা করতে পারে, কিন্তু গ্রেপ্তার নয়। তাহলে ইডি কেন গ্রেপ্তার করল? তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৫ লক্ষ টাকাও পাওয়া যায়নি। ৭০ বছর বয়সি এক ব্যক্তির বাড়িতে আচমকা সাতসকালে গিয়ে টানা জেরা করে তাঁকে শারীরিক কষ্ট দেওয়ার অর্থ কী? এমনিতেই তিনি অসুস্থ, একাধিক ওষুধ খেতে হয়। তারউপর ইডির এহেন আচরণ তাঁর উপর চাপ বাড়িয়েছে।
[আরও পড়ুন: ঝটপট বড়লোক হতে ‘সুগার ড্যাডি’র প্রয়োজন ছিল অর্পিতার, বিস্ফোরক শ্রীলেখা]
পালটা সওয়ালে ইডি আইনজীবী জানান, সিবিআইয়ের তদন্ত সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়ের উপর। এর সঙ্গে ইডির সম্পর্ক নেই। তাঁর বাড়ি থেকে ৭ টি দলিল ও বেশ কিছু পেন ড্রাইভ উদ্ধার হয়েছে, যার ভিত্তিতে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই দলিল জমির। সেসব কোথায়, কীভাবে, কার নামে রয়েছে, তার হদিশ পাওয়া জরুরি। অর্থনৈতিক অপরাধের সঙ্গে তা তুলনীয়। সেই কারণেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর বিচারক ২ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দেন।