শুভঙ্কর বসু: করোনা পরিস্থিতিতে ৪ পুরনিগমের ভোট পিছলে কোনও সমস্যা নেই। চিঠি দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানাল রাজ্য সরকার।শুক্রবার হাই কোর্ট কোভিড পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে বিধাননগর, শিলিগুড়ি, আসানসোল ও চন্দননগর – এই চার পুরসভার ভোট অন্তত চার বা ছয় সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার কথা বিবেচনা করতে বলে। এবং আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে বলে। হাই কোর্টের এই মনোভাবের পরই রাজ্যের তরফে কমিশনকে একথা জানিয়ে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, চার পুরসভার ভোট তিন সপ্তাহ পিছিয়ে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি হতে পারে।
পুরভোট পিছনোর দাবি নিয়ে একাধিক মামলার পর্যালোচনার পর শুক্রবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ তাদের রায়ে বলে, “আমাদের মতামত হল রাজ্যের বর্তমান সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং নির্বাচন হতে যাওয়া চার পুরনিগমের কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন (West Bengal State Election Commission)।” আদালতের নির্দেশ, এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে তা জনস্বার্থের পক্ষে হিতকর হবে নাকি তা খতিয়ে দেখতে হবে। এবং নির্বাচন চার থেকে ছয় সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া যায় কি না তা বিবেচনা করে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে।
[আরও পড়ুন: ‘ক্লোজড চ্যাপ্টার’, নেত্রীর বার্তা মেনে সংযম তৃণমূলে]
আদালতের (Calcutta High Court) তরফে নির্দেশ আসার পরই তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, শনিবার বেলার দিকে স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কমিশন কর্তারা। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন আইনজীবীরাও। ওই বৈঠকের পরই নতুন ভোটের দিন ঘোষণা করা হবে। শুক্রবার রাতের খবর, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১২ ফেব্রুয়ারি চার পুরসভার ভোট হবে। তবে শুক্রবার হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছে তাতে স্পষ্ট, বর্তমান কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভোট করানো বা ভোট স্থগিতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কমিশনকেই। তারাই ‘স্বাধীন ভাবে’ বিবেচনা করবে এই পরিস্থিতিতে ভোট করানো উচিত কি না।
এই নির্দেশের পাশাপাশি মামলাটিরও নিষ্পত্তি করেছে আদালত। ফলে কমিশন যে সিদ্ধান্ত নিক না কেন তা তাদের আর আদালতে জানানোর বাধ্যবাধকতা থাকছে না। মামলাকারীদের উদ্দেশে আদালত জানিয়েছে, ওই চার পুরনিগমের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে যত তথ্য রয়েছে তা কমিশনের কাছে জমা দিতে পারবেন মামলাকারীরা। সূত্রের খবর, কঠোর বিধি জারি রেখে ওই চার পুরনিগমের নির্বাচন করাতে চাইছে কমিশন। ভোট প্রচার থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই একাধিক বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন এলাকার ভোটারদের ভোটদানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও কঠোর বিধি জারি করে ভোটগ্রহণ করা হবে। এদিকে, হাই কোর্টের রায়ের পরও ভোট পিছিয়ে দেওয়ার অবস্থানে অনড় বিজেপি (BJP) সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “কমিশনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মানুষের প্রাণ বিপন্ন করে গণতন্ত্র রক্ষার কোনও মানে হয় না। ভোট (Civic Polls) পিছনোর দরকার এটা সবাই বুঝেছেন।”