রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিধানসভা ভোটের ভরা মরশুমে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। ৩০ জানুয়ারি রাতে দিল্লিতে তাঁর হাতে দলের পতাকা তুলে দিয়েছিলেন খোদ অমিত শাহ (Amit Shah)। দিনকয়েকের মধ্যেই দলের রাজ্য কমিটিতে আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে স্থানও পেয়েছিলেন। বিধানসভা ভোটে হারের পর আবার বিজেপির মুখদর্শন বন্ধ করেছিলেন তিনি। প্রথমে বেসুরে বেজেছেন। দলের নেতা ও দলীয় রণকৌশলকে কটাক্ষ করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। পরে, গত ৩১ অক্টোবর আগরতলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে পতাকা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। সেই ঘটনার মাসাধিককাল পরও তাঁর নাম জ্বলজ্বল করছে সর্বভারতীয় বিজেপির সর্বোচ্চ মঞ্চ ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্য হিসাবে!
তবে রাজীব একা নন। রাজ্য বিজেপির সংগঠনে এমন কাণ্ডের নজির অনেক। যেমন, বিজেপির হাওড়া জেলার প্রাক্তন সভাপতি সুরজিৎ সাহা। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মুখ খোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ১০ নভেম্বর বহিষ্কার করা হয়েছিল তাঁকে। দলবিরোধী কাজের প্রসঙ্গ উঠলেই চলে আসছে সুরজিৎ সাহার নাম। তারপরও সেই সুরজিৎ সাহা রাজ্য বিজেপির ওয়েবসাইটে এখনও স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে দিব্যি বিদ্যমান।
[আরও পড়ুন: খড়গপুরে চরমে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, দিলীপের অনুগামীর বিরুদ্ধে থানায় হিরণ ঘনিষ্ঠ নেত্রী]
বিধানসভা ভোটে বিজেপির হয়ে হেরে বেসুরো প্রবীর ঘোষাল। ঘাসফুলে ফিরে না গেলেও নিয়মিত লিখছেন তৃণমূল কংগ্রসের দলীয় মুখপত্রে। তারপরও তাঁর বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্যের ‘তকমা’য় হাত দিতে সাহস পাননি দিলীপ ঘোষ-সুকান্ত মজুমদাররা। একইভাবে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ ভাগে প্রকাশ্যে ঘোষণা করে দলের সব পদ ছেড়েছেন অভিনেতা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় সে কথা পোস্টও করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতেও দলীয় ওয়েবসাইটে রাজ্য বিজেপির সাংস্কৃতিক সেলের আহ্বায়ক হিসাবে সুমনের হাসিমুখের ছবি-সহ নাম উজ্জ্বল। নাম রয়েছে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্যদের তালিকাতেও।
রাজ্য বিজেপির সঙ্গে পথ হাঁটায় তাঁর আপত্তির কথা দল ও কেশব ভবনকে অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন বিধানসভা ভোটে আমতা কেন্দ্রের পদ্মপ্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য। সংঘের প্রাক্তন প্রচারক, রাজ্যের অন্যতম এই হিন্দুবাদী নেতা নিজের সংগঠন ‘হিন্দু সংহতি’-র কাজেই নিজেকে নিয়োজিত করতে চাইছেন। তারপরও স্থায়ী আমন্ত্রিত কমিটির সদস্য তালিকা থেকে তাঁকে বাদ দেওয়ার সাহস দেখাতে পারেননি দিলীপ ঘোষরা। রাজ্য বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত জয় মল্লিক জানিয়েছেন, ‘‘রাজ্য দপ্তরে যে তালিকা আসে সেটাই আমরা আপলোড করি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, সম্প্রতি যে তালিকা এসেছিল সেটাই ওয়েবসাইটে তোলা হয়েছে। হয়ত কিছু নাম বাদ দিতে ভুল হয়ে গিয়েছে।’’