অর্ণব আইচ: ১৯৮৪ সালে ৩১ অক্টোবর নিজের দেহরক্ষীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। ঠিক একইভাবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গুলি করে হত্যার নিদান দিয়ে গ্রেপ্তার হলেন এক কলেজ পড়ুয়া। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে অভিযুক্তের নাম কীর্তি শর্মা। তিনি বি'কম দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের নিদানের পাশাপাশি সোশাল মিডিয়ায় আরজি কর হাসপাতালে নিহত চিকিৎসকের নাম ও ছবি প্রকাশের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
আরজি কর হাসপাতালে ডাক্তারি পড়ুয়াকে যৌন নির্যাতন ও খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা দেশ। নির্যাতিতার বিচার চেয়ে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে আন্দোলন। এই ঘটনাতেই সোশাল মিডিয়ায় ওই পড়ুয়া পোস্ট করেন, 'ইন্দিরা গান্ধীর মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গুলি করুন। আপনি যদি এটি করতে না পারেন তবে আমি হতাশ করব না।' মুহূর্তে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় এই পোস্ট। বিষয়টি পুলিশের নজরে আনে শাসকদল তৃণমূল। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ডেলে তা তুলে ধরে লেখেন, 'এবার কি ঘুরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) প্রাণনাশের বার্তা বাজারে ছাড়া শুরু?' বিষয়টি শোরগোল শুরু হতেই তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। এর পর সোমবার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে তালতলা থানার পুলিশ।
[আরও পড়ুন: সীমান্তে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন, জওয়ানদের হাতে রাখি পরালেন কাশ্মীরের বোনেরা]
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে 'Kirtisocial' নামে ইনস্টাগ্রাম আইডি থেকে মোট ৩টি পোস্ট করা হয়। যেখানে নির্যাতিতার নাম ও ছবি প্রকাশের পাশাপাশি ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের মতো করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হত্যা করতে অন্যদের উৎসাহিত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যে ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে তা অত্যন্ত অবমাননাকর এবং আপত্তিজনক। যার প্রেক্ষিতেই অভিযুক্ত ওই কলেজ পড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: মায়ের কোল থেকে তিন বছরের শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ! প্রকাশ্যে ভয়াবহ ভিডিও]
এদিকে আরজি কর কাণ্ডে শহরের রাজপথ দখলের পাশাপাশি সোশাল মিডিয়াতেও আছড়ে পড়েছে প্রতিবাদের ঢেউ। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতা সুখেন্দু শেখর। তিনি পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল ও আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডাঃ সন্দীপ ঘোষকে হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সিবিআইয়ের কাছে। যার জেরে লালবাজারের তরফে তলব করা হয়েছে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়কে। পাশাপাশি নির্যাতিতার নাম পরিচয় প্রকাশ্যে আনার অভিযোগে প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কেও তলব করা হয়েছে।