সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এলাহাবাদ হাই কোর্টের পরে সুপ্রিম কোর্টেও (Supreme Court) ধাক্কা খেল জ্ঞানবাপী মসজিদ (Gyanvapi Mosque) কর্তৃপক্ষ। ‘তহখানা’য় হিন্দুদের পুজো, আরতি বন্ধ করতে অস্বীকার করল শীর্ষ আদালত। তবে মসজিদ চত্বরে হিন্দুপক্ষের ধর্মীয় আচার পালনের বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ হিন্দুপক্ষের পুজো-আরতির পাশাপাশি, মুসলিমরাও জ্ঞানবাপীতে নমাজের আয়োজন করতে পারবেন। স্বভাবতই এই নির্দেশে খুশি হিন্দুপক্ষ।
জ্ঞানবাপীর ‘তহখানা’য় পুজোর অনুমতি নিয়ে বারাণসী জেলা আদালতের রায়ের পর এলাহাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মুসলিম পক্ষ। যদিও 'তহখানা'য় পুজো চলবে বলে জানিয়েছিল হাই কোর্ট। এর পর সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি’। যদিও পুজো বন্ধের আবেদন খারিজ করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ। উল্লেখ্য, জ্ঞানবাপীতে মোট ৪ টি তহখানা রয়েছে। যেখানে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত প্রার্থনা চলত। সেখানেই নতুন করে পুজো শুরু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: শিয়রে লোকসভা নির্বাচন, ফের গ্যাসের দাম কমাল কেন্দ্র]
এদিন বিচারপতিদের বেঞ্চ জানায়, চলতি বছরের ১৭ এবং ৩১ জানুয়ারি আদালতের নির্দেশের পরে মুসলিম সম্প্রদায় নির্বিঘ্নে নমাজ পড়ছেন। অন্যদিকে হিন্দুদের পুজোর ব্যবস্থা তহখানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। আপাাতত এই স্থিতাবস্থা বজায় রাখা হবে। উভয় সম্প্রদায় উপরোক্ত শর্ত মেনে উপাসনা করতে পারবে। যদিও আদালত জানিয়েছে, তহখানায় পুজোর অনুমতির বিষয়ে শেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামী জুলাই মাসে।
আগেই জানা গিয়েছিল, এএসআইয়ের রিপোর্টে বলা হয়েছে মসজিদের ওজুখানা চত্বরে অসম্পূর্ণ শিবলিঙ্গের অস্তিত্বও পাওয়া গিয়েছে। সেই সঙ্গেই হনুমান, বিষ্ণু, নান্দীর মূর্তিও থাকার কথা জানাচ্ছে রিপোর্ট। রয়েছে মধ্যযুগীয় দেবদেবীর মূর্তি ও ভাস্কর্যও। অর্ধেক হনুমান ও অর্ধেক সাপের দৈব ভাস্কর্যও সেখানে মিলেছে। যা থেকে মনে করা হচ্ছে, ওই চত্বরে বিভিন্ন দেবদেবীর সন্ধান পাওয়া সেখানে গড়ে ওঠা সংস্কৃতির একটি মিশ্রণের দিকেই ইঙ্গিত করছে। এই অবস্থায় হিন্দুপক্ষকে পুজোর অনুমতি দেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: আরও বিপাকে কেজরি, এবার ইডি হেফাজত থেকে বেরিয়ে জেলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী]
প্রসঙ্গত, ২০২১-এর আগস্টেও পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা নামে পরিচিত) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়েছিলেন বারাণসী আদালতে। সেই মামলায় বারাণসী দায়রা আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর নিযুক্ত কমিটির নির্দেশে জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরে শুরু হয়েছিল ভিডিও সার্ভে। তার পরে সোমবার আদালতে জমা পড়ে এএসআইয়ের রিপোর্ট।