অভিষেক চৌধুরী, কালনা: অনাথ আশ্রমে থাকা শিশুদের ‘জীবন্ত দুর্গা’রূপে পুজো করলেন পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। নিজের হাতে তাঁদের আরতিও করলেন মন্ত্রী। রবিবার বিজয়া দশমীতে মৃন্ময়ী দুর্গামূর্তির পাশেই এমনভাবে ‘জীবন্ত দুর্গা’-র আরাধনা করা হয় পূর্বস্থলী ১ ব্লকের দামোদরপাড়া অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রমের পুজোয়।
উল্লেখ্য, অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রমে থাকা অনাথ শিশু, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও এলাকার দুস্থ মানুষজনকে পুজোর আনন্দে শামিল করতে ২০০১ সালে এই পুজোর সূচনা করেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। ২৪ বছরে পা রাখা এই পুজোয় এবার দশম শ্রেণির পড়ুয়া দেবলীনা মাণ্ডি দেবী দুর্গা সাজে। লক্ষ্মী সাজে সুরলীনা মাণ্ডি, সরস্বতী হয় প্রমীলা হাঁসদা, কার্তিক সাজে গোপাল সরকার। গণেশ রূপে রোহিদ সামন্ত, অসুর রূপে সুমি মাণ্ডি, বাঘ রূপে রিয়া ওঁরাও, ইঁদুর রূপে দেখা যায় বিপিন হাঁসদাকে।
তাদের সব শখ ও ইচ্ছাও ‘মন্ত্রী দাদু’ পূরণ করেছে বলেই জানায় তারা। পুজো শেষ হতেই পোশাক বদলে ওই অনাথ শিশুরাই এলাকার হাজার-হাজার মানুষের পাতে তুলে দেয় ভাত, মাংস,পটল-আলুর তরকারি,চাটনি, বোঁদে, মিষ্টি। শুধু এইদিনই নয়, এই ভুরিভোজের আয়োজন তারা ষষ্ঠীর দিন থেকে টানা ৫ দিন ধরে করে। তাই অনাথদের এই পুজোয় কয়েকদিন ধরে যে উৎসব চলে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, “আশ্রমে থাকা অনাথ, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, দুস্থদের কথা ভেবে ২০০১ সালে এই দুর্গাপুজো শুরু করি। ওদের মধ্যেই ঈশ্বর বিরাজমান। এবার পুজো উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনাথ শিশুরাই পুজো উপলক্ষ্যে সকলকে নিমন্ত্রণ করে। ওরাই সকলের হাতে প্রসাদ তুলে দেয়। ওরাই আগমনীর সুরে গান গেয়ে ওঠে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। দশমীর দিন কেউ দুর্গা, কেউ গণেশ, কার্তিক সাজে সেজে ওঠে। মাটির প্রতিমার সামনে যেমন অঞ্জলি দেওয়া হয় তেমনই এই অনাথদের সামনেই আমরা নিজেরাও অঞ্জলি দিই।”