চেন্নাই : স্বপ্ন হলেও, আক্ষরিক অর্থেই বাস্তব। তামাম দুনিয়ায় যা সম্ভব হয়নি, তা এবার করে দেখাতে চলেছে তামিলনাড়ু (Tamil Nadu)। একই মন্ত্রিসভায় পাশাপাশি বসবেন স্ট্যালিন, গান্ধী এবং নেহরু। শুক্রবার রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন (MK Stalin)। আর তাঁর মন্ত্রিসভার দুই সদস্য হচ্ছেন আর গান্ধী এবং এন কে নেহরু। বৃহস্পতিবার ৩৪ জন মন্ত্রীর নামের তালিকা হাতে পেয়েছেন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল বানোয়ালি পুরোহিত। তাতে প্রস্তাব করা হয়েছে নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হচ্ছেন কে এন নেহরু। আর রাজ্যের নতুন বস্ত্রমন্ত্রী হচ্ছেন আর গান্ধী।
দশ বছর পর তামিল মসনদে ডিএমকের (DMK) ফিরে আসার পিছনে এই ত্রয়ীর যথেষ্ট ভূমিকা আছে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। বিশেষ করে এতদিন ডিএমকে-এর সংগঠনকে কার্যত একার হাতেই সামলেছেন বর্ষীয়ান কে এন নেহরু। পঞ্চমবার তিনি বিধায়ক হয়েছেন ত্রিচূর পশ্চিম কেন্দ্র থেকে। কংগ্রেস পরিবারে জন্ম কে এন নেহরুর। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহওরলাল নেহরুর নামে অনুপ্রাণিত হয়ে নেহরু নাম রাখা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে কংগ্রেস ছেড়ে ডিএমকে-তে যোগদান। ১৯৮৯ সালে রাজ্য বিধানসভায় প্রথমবার বিধায়ক হন কে এন নেহরু। অন্যদিকে, এবার রানিপেট আসন থেকে জয়ী হয়েছেন আর গান্ধী। ১৯৯৬ সালে প্রথম বার বিধায়ক হন তিনি। গান্ধী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরে তা খারিজ হয়ে যায়। রাজনৈতিক মহলের দাবি, ডিএমকে-র কঠিন অবস্থাতেও দল ছেড়ে যাননি গান্ধী। বরং বরাবর স্ট্যালিনের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন।
[আরও পড়ুন: বন্য হাতিদের ঢিল ছোড়া, কুকুর নিয়ে তাড়া! তামিলনাড়ুর আদিবাসী তরুণদের বিরুদ্ধে দায়ের অভিযোগ]
এদিন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার শপথ নিলেন মুথুভেল করুণানিধি স্ট্যালিন। এই পদের জন্য তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় এক দশক। ২০০৯ সালে তিনি প্রথমবার রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু দু বছরের মধ্যেই পালাবাদল। তারপর এই ১০ বছরে করুণানিধিহীন ডিএমকে-কে একার দক্ষতায় সামলেছে স্ট্যালিন। রাজনৈতিক মহলের মতে, অনেকগুলি চ্যালেঞ্জ নিয়ে এবার মাঠে নামতে হবে তাঁকে। স্ট্যালিনের প্রথম চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে রাজ্য থেকে করোনাকে দূর করা। কারণ, দক্ষিণের রাজ্যগুলির মধ্যে তামিলনাড়ুর অবস্থা সবচেয়ে কঠিন। ইতিমধ্যেই সরকারি কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে করোনা মোকাবিলার নীল নকশা তৈরি করেছেন এই ডিএমকে নেতা। দ্রুত অক্সিজেনের জোগানের জন্য তুতিকোরিনে খুলে দিয়েছেন স্টারলাইটের কারখানাকে। এদিকে রাজভবন সূত্রে খবর, করোনার জেরে খুব ছিমছাম অনুষ্ঠানের মধ্যেই হতে চলেছে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া শপথ নেবেন মন্ত্রিসভার ৩৪ জন সদস্য। স্বপ্ন হলেও আক্ষরিক অর্থেই বাস্তব। এই প্রথম ভারতের কোনও রাজ্যে এক মন্ত্রিসভায় স্ট্যালিনের নেতৃত্বে গান্ধী ও নেহরু।