সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুকুমার রায়ের 'হযবরল'-তে আমরা পাই 'ছিল রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল'। আর সুরাটের তিন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র যা করলেন তা 'ছিল বাতিল যন্ত্রাংশ, হয়ে গেল বাইক!' আরও বিশদে বলতে গেলে এআই বাইক। যেটা কিনা সামনে বাধা থাকলে নিজেই থেমে যাবে। কাছাকাছি যানবাহন চলে এলেও গতি কমিয়ে ফেলবে! এমনই আশ্চর্য এই বাইকের ৫০ শতাংশই তৈরি বাতিল লোহালক্কড় থেকে।
ভগবান মহাবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন পড়ুয়া শিবম মৌর্য, গুরপ্রীত অরোরা ও গণেশ পাটিল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। শুরু থেকেই তাঁদের লক্ষ্য ছিল তৈরি করা হবে এক আশ্চর্য বাহন, যার নির্মাণ খরচ তুলনামূলক ভাবে থাকবে অনেকটাই কম। আর সেই পরিকল্পনা থেকেই বাতিল যন্ত্রাংশের কথা ভাবা হয়। যেহেতু বাইকটির অর্ধেকটাই ফেলে দেওয়া লোহালক্কড় দিয়ে বানানো, তাই সাকুল্যে খরচ পড়েছে ১.৮ লক্ষ টাকা, যা এর গুণাবলির তুলনায় নগণ্যই।
বাইকটির 'মস্তিষ্ক' হল রেসপবেরি পাই নামের সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট। এর মাধ্যমেই ভয়েস কমান্ডে নির্দেশ পালন করে 'গরুড়'। আর সেই মতো গতি বাড়ায়, কমায় এমনকী দাঁড়িয়েও পড়ে। আরোহী না থাকলেও ব্যস্ত সড়কে দিব্যি পথ চলে এই এআই বাইক! জানা গিয়েছে, বাইকটির ১২ ফুটের ব্যাসার্ধের মধ্যে কোনও যানবাহন চলে এলেই স্বয়ংক্রিয় ভাবে এর গতি কমে যায়। তিন ফুটের মধ্যে কোনও বাধা থাকলে সেটি দাঁড়িয়ে পড়ে ব্রেক কষে। কখনও কখনও স্রেফ 'তিন ফুটের মধ্যেই দাঁড়িয়ে যাও' জাতীয় ভয়েস কমান্ডেও 'গরুড়' থমকে দাঁড়ায়। এদেশে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা অত্যন্ত বেশি। এহেন পরিস্থিতিতে এআই নির্ভর এমন বাহন 'বিপ্লব' ঘটাতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কোনও প্রথম সারির ইলেকট্রিক বাহনে যা দেখা যায়, এখানেও তা রয়েছে। সম্পূর্ণ টাচস্ক্রিন ড্যাশবোর্ডে জিপিএস নেভিগেশন থেকে ফোন সংযোগ, এমনকী মিউজিক প্লেব্যাকেরও সুবিধা রয়েছে। ফ্রন্ট ও রিয়ার ক্যামেরায় লাইভ ভিডিও চলতে থাকে নাগাড়ে। ট্র্যাফিকের সমস্যায় দীর্ণ পথে চলতেও কোনও অসুবিধা হবে না তাই।
