সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোর চারটে নাগাদ প্রথম ভয়াবহ কম্পন। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। পরে একাধিক আফটার শকের একটির কম্পনের মাত্রা ছিল ছয়ের উপরে। দুপুরে ফের বিপর্যস্ত তুরস্ক (Turkey)। নতুন করে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে দেশের দক্ষিণ প্রান্ত। এবার কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৬। অর্থাৎ কিনা ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে তিনটি বড় ভূমিকম্পের ঝক্কি সামলাতে হয়েছে দেশটিকে। শুধু তুরস্ক না, সিরিয়াও (Syria) প্রকৃতির ছোবলে বিপর্যস্ত। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৯০০-তে। ডেনমার্ক (Denmark) ও গ্রিনল্যান্ডের (Greenland) ভূতত্ত্ব সমীক্ষা দপ্তর জানিয়েছে, কম্পনের মাত্রা এতটাই ছিল যে ৫৫০০ কিলোমিটার দূরের গ্রিনল্যান্ডেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ভোরে প্রায় ৪৫ সেকেন্ড ধরে চলে মারণ কম্পন। পরবর্তী পাঁচ ঘণ্টায় ২২ বার ‘আফটার শকে’ চলে। দ্বিতীয় বড় ঝটকায় তুরস্ক ও সিরিয়া ছাড়াও কেঁপে ওঠে লেবানন, সাইপ্রাসের, ইজিপ্টের একাংশ। ইতিমধ্যে সিরিয়ার ন্যাশনাল আর্থকুয়েক সেন্টার জানিয়েছে, এদিন ভোরে তাদের দেশের ইতিহাসে বৃহত্তম ভূকম্পন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনবারের ভয়ংকর কম্পনে ছোট বাড়ি ও বহতল ধসে মৃত্যু তুরস্কে মৃত্যু হয়েছে ১১২১ জনের। অন্যদিকে সিরিয়াতে মৃতের সংখ্যা ৭৮৩। মোট সংখ্যা ১৯০৪।
[আরও পড়ুন: রক্ত, মৃত্যু আর কান্নার দেশ তুরস্ক, ভূমিকম্পে মৃত্যুমিছিল সিরিয়াতেও, ভয়াবহ ধ্বংসের ছবি]
বড় ঝটকা তিনটি লাগলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে ৫০ বার আফটার শক অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যেই ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ডের বিশেষজ্ঞেরা জানালেন, গ্রিনল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে ভাল ভাবে অনুভূত হয়েছে কম্পন। তুরস্কের উৎসস্থলে কম্পনের মিনিট পাঁচেক বাদে ওই কম্পন ৫৫০০ কিলোমিটার দূরের গ্রিনল্যান্ডে অনুভূত হয়। এমনটাই দাবি সেখানকার ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের।
[আরও পড়ুন: ফের কাঁপল তুরস্ক, ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে দ্বিতীয়বার ভূমিকম্প মধ্যপ্রাচ্যের দেশে]
উল্লেখ্য, গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ১৮ কিলোমিটার গভীরে ছিল উৎসস্থল। এই ঘটনা তুরস্কবাসীদের ১৯৩৯ সালের ভয়ংকর ভূমিকম্পের স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়েছে। সেবার ৩০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন। যদিও গত ২৫ বছরে বার সাতেক ভূমিকম্প হয়েছে তুরস্কে। তবে এবারের ভূমিকম্পই নারকীয়, বলছেন স্থানীয়রা। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়িপ এর্ডোগান টুইট করেছেন, “ভূমিকম্পের ফলে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে দেশের। দেশবাসীদের প্রতি সহানুভূতি জানাই। বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার কর্মীরা সতর্ক রয়েছেন। উদ্ধারকাজে কোনও ত্রুটি নেই।”