অর্ণব আইচ: রাজ্যপাল শ্লীলতাহানি করেছিলেন বলেই অভিযোগকারিণী জানিয়েছিলেন তাঁদের। পুলিশের জেরায় এমনই স্বীকারোক্তি রাজভবনের (Raj Bhavan) তিন অভিযুক্ত কর্মীর। যদিও কার নির্দেশে অভিযুক্ত তিন কর্মচারী অভিযোগকারিণীকে জোর করে আটকে রেখেছিলেন, সেই প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন তিনজনই।
রাজভবন-কাণ্ডে মহিলা কর্মচারীকে আটকে রেখে নিগ্রহ করার অভিযোগ ওঠে তিন কর্মচারীর বিরুদ্ধে। তাঁরা হলেন রাজ্যপালের ওএসডি সন্দীপ সিং রাজপুত, কুসুম ছেত্রী ও পিওন শান্ত লাল। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলায় যে দু’টি ধারা প্রয়োগ করা হয়, সেগুলি জামিনযোগ্য। রবিবার তাঁরা পুলিশের তলবে হাজিরা না দেওয়ায় ফের মঙ্গলবার তাঁদের পুলিশ (Kolkata Police) তলব করে। প্রথমে তাঁরা কলকাতা পুলিশকে মেল পাঠিয়ে সাত থেকে দশদিনের জন্য সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু এদিন সকালেই ওই তিন অভিযুক্ত ব্যাঙ্কশাল আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। আদালতে সরকারি আইনজীবী সোমা বিশ্বাস আবেদনে জানান, অভিযুক্তরা যেন পুলিশকে তদন্তে সহযোগিতা করেন। তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। জামিন পাওয়ার পরই তিন অভিযুক্ত মধ্য কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানায় পৌঁছন। জামিনের নথিও তাঁরা পুলিশকে দেখান। এর পর তিনজনই পুলিশের জেরার মুখোমুখি হন।
[আরও পড়ুন: হিরণকে ‘বাংলায় বলো’ কাকার ফ্যান দেব! দিলেন রকস্টার খেতাব]
রাজভবনের অভিযোগকারিণী কর্মচারী মহিলার অভিযোগ অনুযায়ী, রাজ্যপালের কনফারেন্স রুম থেকে বের হওয়ার পরই দু’টি ঘর পেরিয়ে তিনি করিডরে আসেন। তখনই তিনজন মিলে তাঁকে জোর করে অফিস রুমে নিয়ে যান। ওই ঘরে আটকে রেখে তাঁর মোবাইলও ব্যাগ কেড়ে নেওয়া হয়। তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়, যাতে তিনি কোনও ঘটনা বাইরে প্রকাশ না করেন। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, জেরার মুখে তিন অভিযুক্ত পুলিশকে জানান, অভিযোগকারিণীকে তাঁরা ঘরের ভিতর নিয়ে গিয়েছিলেন। তখন অভিযোগকারিণী তাঁদের কাছে দাবি করেছিলেন যে, রাজ্যপাল তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন। এই ব্যাপারে মহিলাকে বাইরে মুখ খুলতে বারণও করেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: রামকৃষ্ণ মিশনে হামলা প্রসঙ্গ: ‘আমাদের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেব’, কথা দিলেন মমতা]
কিন্তু কার নির্দেশে তাঁরা মহিলাকে অফিস ঘরে নিয়ে গেলেন, মুখ খুলতে বারণ করলেন ও কেনই বা তাঁরা অভিযোগকারিণী ওই কর্মচারীর মোবাইল ও ব্যাগ কেড়ে নেন, সেই ব্যাপারে পুলিশকে কিছু জানাতে রাজি হননি। তিনজনকেই আলাদাভাবে জেরা করা হলেও তাঁরা প্রত্যেকে এই বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। ওই মহিলা কাঁদতে কাঁদতে সিঁড়ি দিয়ে নেমে এক বিশেষ সচিবের ঘরে যান। ওই সচিবের ঘরে থাকা এক চিকিৎসক-সহ চারজনকে পুলিশ সাক্ষী হিসাবে তলব করেছে। তাঁদের বক্তব্যের সঙ্গেও অভিযোগকারিণী ও অভিযুক্তদের বয়ান মিলিয়ে যাচাই করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।