চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী শিউলি সাহার মা বনশ্রী খাঁড়াকে নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদ থেকে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে সরানোর দাবিতে অনাস্থা আনলেন তৃণমূলের সদস্যরাই। বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম (Nandigram) কেন্দ্রে প্রার্থী তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) হয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে বনশ্রীদেবীর বিরুদ্ধে। একই কারণে তাঁর ছেলেকেও পঞ্চায়েতের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলেছেন সংশ্লিষ্ট ব্লক তৃণমূল সভাপতি। ভোটের ফলের প্রেক্ষিতে নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ ও কেন্দামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বিরুদ্ধেও প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে অনাস্থা জমা পড়েছে। এঁরাও ‘অন্তর্ঘাত’ করেছেন বলে দাবি স্থানীয় নেতৃত্বের।
বুধবার গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মমতাজ বিবি-সহ ১১ জন সদস্য সই করে নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের বিডিও সুমিতা সেনগুপ্তের কাছে ওই অনাস্থাপত্র জমা দিয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে নিজেই এদিন আগে বিডিওর কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন বলে অবশ্য বনশ্রী খাঁড়া জানান। ১৩ সদস্যের নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়ে প্রধান হয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সদ্য শেষ হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি’র হয়ে তলে তলে প্রচার চালিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশে ফের রদবদল, কলকাতার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিশাল গর্গ]
এমন অভিযোগ তুলে তৃণমূল কংগ্রেসের নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সভাপতি স্বদেশ দাস জানান, “নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বনশ্রী খাঁড়া বিজেপিকে সমৃদ্ধ করেছেন। সাত দিন আগেই ওঁকে ইস্তফা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় তাঁর ছেলে, ওই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সুদীপ খাঁড়াও জড়িত আছেন। তাঁকেও গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” তবে এখানেই শেষ নয়। প্রধান বনশ্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগের লম্বা ফিরিস্তি শুনিয়েছেন ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধানের স্বামী তথা স্থানীয় অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন প্রধান। এলাকার উন্নয়নে কোনও উদ্যোগ নেই। এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত। তাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকার জন্য অনাস্থা আনা হয়েছে।”
এদিন দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তৃণমূল শাসিত কেন্দামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান সানোয়ার শার বিরুদ্ধেও স্থানীয় বিডিওর কাছে অনাস্থা আনা জমা পড়েছে। পাশাপাশি একই অভিযোগে নন্দীগ্রাম ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ স্বদেশ দাস অধিকারীর বিরুদ্ধে হলদিয়া মহকুমাশাসকের কাছে অনাস্থাপত্র জমা পড়েছে। যদিও মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ স্বদেশ দাস অধিকারী জানিয়েছেন, “আমি ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানি না। আমাকে আড়ালে রেখে কিছু নেতা প্রভাব খাটাচ্ছে।”