অর্ণব দাস, বারাকপুর: অতীতে প্রিন্সিপাল প্রয়োজনে চড় মেরেছেন। বর্তমানে চড় মারলে আর বাড়ি ফিরতে পারবেন প্রিন্সিপাল? শিক্ষক দিবসে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ফের বিতর্কে জড়ালেন বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় (Tapas Roy)। নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে বর্তমান ছাত্রনেতাদের আচরণ নিয়েই কি প্রশ্ন তুললেন বিধায়ক, উঠছে প্রশ্ন। তাপস রায়ের এই মন্তব্য নিয়ে খোঁচাও দিয়েছেন বিরোধীরা।
বরানগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে শিক্ষকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিধায়ক তাপস রায়। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে কলেজ জীবনের কথা বলতে গিয়ে বিতর্কে জড়ান তিনি। বলেন, “আমি তখন দোর্দণ্ডপ্রতাপ, প্রভাবশালী ছাত্রনেতা। ২৫ জানুয়ারি, কলেজ ডে ছিল। আমি শুধু বলেছিলাম ব্লেজার নেব না। মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলাতেই আমার প্রিন্সিপাল সকলের সামনে ঠাস করে একটা চড় দিয়েছিলেন। বেশ জোরেই দিয়েছিলেন। আমি তখন দোর্দণ্ডপ্রতাপ, প্রভাবশালী পাড়ার ছেলে। আমি জেনারেল সেক্রেটারি। তাকে একটা চড় মারলেন প্রিন্সিপাল। আজকের দিনে হলে ভাবতে পারেন কোনও কলেজের জেনারেল সেক্রেটারির গালে চড় দেবেন প্রিন্সিপাল আর তারপর প্রিন্সিপাল বাড়ি ফিরে যাবেন?”
[আরও পড়ুন: ট্রেন বাতিলের প্রতিবাদে রেল অবরোধ হুগলির একাধিক স্টেশনে, চূড়ান্ত ভোগান্তিতে যাত্রীরা]
তাপস রায়ের মন্তব্য নিয়ে সরব বিরোধীরা। রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য তৃণমূলকে একহাত নিয়ে বলেন, “এই রাজ্য সরকারেরর আমলে শিক্ষায় দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। এত দিন সময় লাগল তাপস রায়ের বোধোদয় হতে?” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর গলাতেও একই সুর। তিনি বলেন, “বর্তমানে ছাত্রনেতাদের মূল কাজ সর্বত্র দাপট দেখানো। ছাত্র ভরতি নিয়ে অনৈতিক কাজ করা। সেটাই এখন গ্রহণযোগ্য। এখনকার পরিবেশ একেবারে অন্যরকম।”
তবে বিরোধীদের সমালোচনার যোগ্য জবাব দিয়েছে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ইচ্ছাকৃতভাবে বরানগরের তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে বলেই দাবি তাঁর। এই মন্তব্য মোটেও নেতিবাচক নয় বলেই মনে করছে তৃণমূল। উল্লেখ্য, রবিবারই তাপস রায়ের আরও একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়ে যায়। ওই বক্তব্যে তাঁকে রাজনীতি ছাড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করতে শোনা যায়। বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন, “আর হয়তো কয়েকটা বছর। বেশিদিন রাজনৈতিক কর্মী থাকব না।” কেন এই সিদ্ধান্ত তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি বিধায়ক।
দেখুন ভিডিও: