রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: পিতা-পুত্রের রাজনৈতিক দল, পরিচয় এখন পৃথক। তাতে কী? প্রয়োজনে ছেলেকে জেতানোর জন্য নিজের রাজনৈতিক পরিচয় পিছনে ফেলে যুযুধান প্রতিপক্ষের হয়েই প্রচার করতে চান কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী (Sisir Adhikary)। নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর প্রচারের দেখা যেতে পারে তাঁকে। দ্বিতীয় দফা অর্থাৎ ১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে ভোটের আগে কাঁথিতে জনসভা করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। সেই সভায় হাজির থাকতে পারেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ, এই জল্পনাও বাড়ছে।
ব্রিগেড সমাবেশ দিয়ে শুরু। বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের (WB Assembly Election 2021) আগে আরও অন্তত ২০টি জনসভা করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। এবারের ভোটে অন্যতম হাইপ্রোফাইল কেন্দ্র নন্দীগ্রাম (Nandigram)। এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর প্রতিপক্ষ হিসেবে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছেন ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। শোনা যাচ্ছে, তাঁর হয়ে প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদি জনসভা করবেন শুভেন্দুর গড় কাঁথিতেই। এখানেই শুভেন্দুর পৈতৃক ভিটে। তাই বাড়ির কাছে মোদির জনসভায় উপস্থিত থাকতে পারেন শুভেন্দুপিতা শিশির অধিকারী। যিনি আবার কাঁথির তৃণমূল সাংসদ। তবে সম্প্রতি দলের সঙ্গে আশি ঊর্ধ্ব শিশিরবাবুর দূরত্ব বেড়েছে অনেকটাই। বয়সের কারণ দেখিয়ে তাঁকে জেলার বেশ কয়েকটি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে তৃণমূল।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের বীরবাহাকে জেতাতে ‘আত্মত্যাগ’ মায়ের, ঝাড়গ্রামে প্রার্থী দিচ্ছে না ঝাড়খণ্ড পার্টি]
এরপর থেকেই নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ছেলের পথ ধরে কি বাবাও শিবির বদল করবেন? সম্প্রতি শিশির অধিকারী তৃণমূল নিয়েও বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। আর ছেলে শুভেন্দু নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা শুনেই বাবার আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য, ”শুভেন্দু বড় ব্যবধানে জিতবে নন্দীগ্রাম থেকে।” এরপর শিশিরবাবু এও জানান, সময় এলে, প্রয়োজন পড়লে নন্দীগ্রামে ছেলের হয়েই প্রচার করবেন তিনি। এই পরিস্থিতিতেই রাজ্য বিজেপি সূত্রে কানাঘুষো চলছে, কাঁথিতে প্রধানমন্ত্রী মোদি সভা করলে শিশির অধিকারীকেও উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানানো হবে। ফলে তাঁরও দলবদলের জল্পনা প্রবল। অন্যদিকে, অধিকারী পরিবারের আরেক সদস্য, তমলুকের তৃণমূল সাংসদ তথা শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারীও গেরুয়া শিবিরের পথে পা বাড়াতে পারেন বলে গুঞ্জন। তিনি রবিবার ব্রিগেডে মোদির সভায় থাকতে পারেন, এমনই খবর ঘনিষ্ঠ সূত্রে।