shono
Advertisement

মদের মতোই মিষ্টি ক্ষতিকর! কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক?

সতর্ক থাকুন, জেনে রাখুন।
Posted: 08:58 PM Mar 02, 2021Updated: 09:08 PM Mar 02, 2021

‘সুইট টুথ’ আছে বুঝি? মিষ্টিটা একটু বেশিই খান? সঙ্গে আবার মদ ছাড়াও থাকতে পারেন না? সব প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে সাবধান, নিজের স্বাস্থ্যের পায়ে কুড়ুলটা কিন্তু আপনি নিজেই মারছেন! সতর্ক করলেন আইএলএস হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। শুনলেন কোয়েল মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

ম’-এ মদ। ম’-এ মিষ্টি। দুই ম’-ই কিন্তু মারাত্মক। কারণ উভয়ের প্রভাবেই সাংঘাতিক ক্ষতির মুখে পড়ে লিভার, যার আঁচ পড়ে অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গেও।

শর্করায় সাবধান:
অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে তার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে লিভারের উপর। এর কারণ, আমরা যে শর্করা-জাতীয় খাবার খাই, তার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর হল ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ (যাতে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ ৫০/৫০ থাকে)| নানা ধরনের শর্করার মধ্যে কেবলমাত্র ফ্রুক্টোজের বিপাকই লিভারে হয়। যার থেকে লিভারে ফ্যাট তৈরি হয়। ধরে যায় ফ্যাটি লিভারের সমস্যা। সেখান থেকে স্টিয়াটোহেপাটাইটিস আর তার থেকে সিরোসিস অফ লিভার। তাছাড়াও মিষ্টিজাতীয় খাবার বেশি খেলে শুধু লিভারের সমস্যাই নয়, ডায়াবিটিস, ওবেসিটিও হতে পারে।

‘বিষ’ মদ:
অতিরিক্ত মদ্যপানে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, মাংসপেশী, অগ্ন্যাশয়, স্নায়ুর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আর যাদের এমনিতেই স্থূলতা, ডায়াবিটিস, ফ্যাটি লিভার আছে, তার উপর আবার মদের নেশাও থাকলে হার্ট, কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য তা সত্যিই দুঃসংবাদ। আবার যাঁরা অন্য কোনও অসুস্থতার জন্য লিভারের ক্ষতির সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য যে কোনও পরিমাণ অ্যালকোহলই বিপজ্জনক। সিরোসিসের ফলে লিভার ক্যানসার বা লিভার ফেলিওর দেখা দিতে পারে। পেটে জল জমতে পারে, সংক্রমণ হতে পারে, খাদ্যনালিতে ব্লিডিং, এমনকী, কিডনি ফেলিওরও হতে পারে। যার অবশ্যম্ভাবী ফল মৃত্যু|

একে মাত্রাতিরিক্ত মিষ্টি ভক্ষণ, তায় আবার পানাসক্ত হলে ক্ষতিও দ্বিগুণ| এর কারণ শর্করা যেমন লিভারে ‘মেটাবলাইজ’ হয়ে ফ্যাটে পরিণত হয়, তেমনই মদও তাই। অর্থাৎ দু’য়ের প্রভাবেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি লিভারের। তাছাড়াও কার্ডিয়াক সিস্টেমের উপর প্রভাব পড়ে। স্থূলতা, মধুমেহ, ক্যানসার, গলব্লাডার স্টোনও হতে পারে।

[আরও পড়ুন: দাঁত দিয়ে নখ কাটেন? বদভ্যাস ছাড়তে মেনে চলুন কিছু সহজ উপায়]

তাহলে কি মদ-মিষ্টি ছোঁবেনই না?
যাঁদের শারীরিক সমস্যা বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রে মদ নৈব নৈব চ। আর মিষ্টি চললেও প্রয়োজন নিয়ন্ত্রণ। চিকিৎসাশাস্ত্রের নিদান অনুযায়ী, পুরুষদের দিনে দু’ ইউনিট এবং মহিলাদের এক ইউনিট ড্রিঙ্ক চলতে পারে (এক ইউনিট অর্থাৎ আট গ্রাম পিওর আলকোহোল)। এই হিসাবে ওয়াইনের নির্দেশিত মাত্রা দিনে ২৫ মিলিলিটার, বিয়ার ২৮৪ মিলিলিটার (পুরুষ)। মহিলাদের ক্ষেত্রে এর অর্ধেক। তবে অ্যালকোহলের রকমফের অনুযায়ী মাত্রাও বদল হবে।
মিষ্টির ক্ষেত্রে ‘কমপ্লেক্স’ কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। নিষেধ করা হয় ‘রিফাইনড সুগার’ যেমন মনোস্যাকারাইড (গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, গ্যালাকটোজ) খেতে। এ সব যতটা সম্ভব কম হলেই ভাল। দিনে ৩০-৫০ গ্রাম খাওয়া যেতে পারে। সারাদিনে ১২০-১৫০ গ্রাম ফল খান। এতে যে পরিমাণ সুক্রোজ বা ফ্রুক্টোজ আছে, সেটাই যথেষ্ট। বাকিটুকু আসবে দৈনন্দিন খাবার থেকে। যে খাবারে অতিরিক্ত চিনি (রিফাইনড সুগার) আছে, যেমন পেস্ট্রি, কোল্ড ড্রিঙ্ক, ক্যানড জুস, কেচাপ, মিল্কবার, মাফিন–তাতে অতিরিক্ত সুক্রোজ বা ফ্রুক্টোজ মেশানো থাকে। তাই এর থেকে বিরত থাকুন। বদলে ফল খান কারণ এতে শর্করার সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ভিটামিনস ও ফাইটোকেমিক্যালস থাকে।

[আরও পড়ুন: ডাউন সিনড্রোমের উপর ক্যানসারের থাবা, আপনার আর্থিক সাহায্যই বাঁচাতে পারে মেকালাকে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement