সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিক্ষিপ্ত হিংসার মধ্যে দিয়ে সম্পূর্ণ হল ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন (Tripura Assembly Election)। ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে বড় ধরণের অভিযোগ না থাকলেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর এসেছে। এমনকী রক্তও ঝরেছে। উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে মূলত ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে ত্রিপুরায়। প্রথমবার বাম-কংগ্রেস জোট বেঁধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। বিজেপির (BJP) সঙ্গে মূল লড়াই তাঁদের। আর অবশ্যই লড়াইয়ে আছে তিপ্রা মথা (Tipra Motha)। তৃণমূল কংগ্রেসও এবার শক্তিশালীভাবে লড়াই করেছে।
মোটের উপর ভোট ঘিরে ভোটারদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেল ৪টেয় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কিছু কিছু কেন্দ্রে সন্ধের পরও ছিল ভোটারদের লম্বা লাইন। সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলির সামনে ভোটারদের লাইন চোখে পড়েছে। বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর মিললেও ভোটারদের উৎসাহে কমতি দেখা যায়নি। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, ত্রিপুরায় অন্তত ৮১ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটদানের এই বিপুল হার বিজেপিকে কিছুটা হলেও চিন্তায় রাখবে।
[আরও পড়ুন: হিন্ডেনবার্গ অস্বস্তি এড়াতে সংস্থার অন্দরেই তদন্ত করাচ্ছেন আদানি? মুখ খুললেন কর্ণধার]
এদিন সকাল থেকে বেশি কিছু জায়গা থেকে অশান্তির খবর আসে। শান্তিরবাজার, ধনপুর, কাকড়াবন-সহ বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোটারদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কাঠগড়ায় বিজেপি। বামেদের অভিযোগ, তাঁদের অন্তত ২ জন এজেন্টকে মারধর করা হয়েছে। হয়েছে রক্তপাতও। অভিযোগ শাসক বিজেপির দিকে। তিপ্রামথা সমর্থকদের বিরুদ্ধেও বেশ কিছু জায়গায় ভোটদানে বাধাদানের অভিযোগ উঠেছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার (Manik Sarkar) অভিযোগ করেছেন ধনপুর কেন্দ্রে ভোটারদের বাধা দেওয়া হয়েছে। তার অভিযোগ বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে। মানিক সরকারের বক্তব্য, বিজেপির গুন্ডারা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ভোটারদের আতঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে। সেই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে বিজেপি। রামচন্দ্রঘাট, তেলিয়ামুড়ায় ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে তিপ্রা মথা সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
[আরও পড়ুন: লাগাতার বিয়ের জন্য চাপ, রাগে প্রেমিকাকে খুন করে দেহ লোপাট প্রেমিকের]
সিপিএমের (CPIM) সাধারণ সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরী দাবি করেছেন, পরিবর্তনের মুডে ভোট দিয়েছে রাজ্যবাসী। অন্যদিকে বিজেপি নেতা তথা সাংসদ বিপ্লব দেব দাবি করেছেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বিজেপি পুনরায় ক্ষমতায় আসবে। একই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহাও (Manik Saha)। তিনি বলেছেন, এবারের বিধানসভা বিরোধী শূন্য হবে। সব মিলিয়ে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন এবার শান্তিপূর্ণভাবে এবং রক্তপাতহীনভাবে শেষ হয়েছে। তৃণমূলের পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ধনপুর, মেলাঘর-সহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে তৃণমূলের ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। ভোটদানে বাধা দেওয়া হয়েছে। তিপ্রা মথার চেয়ারম্যান প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে চলেছে তাঁর দল।
নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) সূত্র অবশ্য হিংসার সবধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কমিশন জানাচ্ছে, ভোট ঘিরে বড় কোনও অভিযোগ নেই। ছুটকো-ছাটকা অভিযোগ পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।