অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: আলাদা রাজ্য করা হোক উত্তরবঙ্গকে। অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হোক। আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) বিজেপি সাংসদ জন বার্লার এই দাবি ঘিরে ইতিমধ্যেই বেশ শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তাঁর এই দাবিকে সমর্থন জানালেন উত্তরবঙ্গের ২ বিজেপি (BJP) বিধায়ক। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির আনন্দময় বর্মন ও ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির শিখা চট্টোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, উত্তরবঙ্গে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি সঙ্গত, মানুষই তা চান। যদিও দল তাঁদের বক্তব্যকে সমর্থন করে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দার্জিলিং (Darjeeling) জেলা বিজেপি সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল। বিজেপি সাংসদ, বিধায়কদের তীব্র কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতা গৌতম দেব।
উত্তরবঙ্গের মানুষ বঞ্চিত, এখানে কোনও উন্নয়ন হয়নি। আর তাই উত্তরবঙ্গের মানুষেরই নাকি দাবি, এই অঞ্চলকে আলাদা রাজ্য করা হোক। এই দাবি নিয়ে সবার প্রথমে সোচ্চার হন সাংসদ জন বার্লা (John Barla)। এদিন দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার দুই বিধায়ক একই দাবিতে জন বার্লার পাশে দাড়ালেন। তাঁদেরও বক্তব্য, এই রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গে কোনও কাজ করেনি। তারা উত্তরবঙ্গকে বঞ্চিত করেই রেখেছে। শিখা চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ”সচিবালয় হিসেবে ‘উত্তরকন্যা’ তৈরি শুধুমাত্র আইওয়াশ করার জন্য। সেখানে শুধু আড্ডাই চলে, কোনও কাজ হয় না। উত্তরবঙ্গকে রাজ্য করলে ভাল, নইলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হোক। তাহলে অনেক কাজ হবে।”
[আরও পড়ুন: আড়াই মাস পর রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ দু’হাজারের কম, একদিনে মৃত ৪২]
আনন্দ বলেন, ”এই দাবি উত্তরবঙ্গের মানুষের। আর সেটাই বলেছেন আমাদের সাংসদ। আলাদা রাজ্য হলে অসুবিধা কোথায়। বরং উন্নয়ন হবে আমাদের।” তবে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ এ বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্য, ”দলীয় স্তরে আলোচনা হলে আমি আমার কথা বলব। এভাবে প্রকাশ্যে কিছু বলব না। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নে অনেকটাই পিছিয়ে আছে। আর যে দাবি উঠেছে, এটা তারই বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তবে আলাদা রাজ্য করলে সমাধান হবে নাকি অন্য কোনও উপায়ে সমাধান করতে হবে তা দলের অভ্যন্তরে আলোচনা হবে।”
[আরও পড়ুন: বন্যায় জল থইথই, শৌচকর্মের জায়গা নিয়ে চিন্তিত সুন্দরবনের বাসিন্দারা]
কিন্তু দলের জেলা সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল বললেন, ”আমাদের দল বাংলাভাগ চায় না। যাঁরা বলেছেন, তাঁরা নিজের দায়িত্বে বলেছেন। আমরা চাই উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন হোক। এখানকার মানুষও তাই চায়। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে ভোট না পেয়ে মাঝেমধ্যেই বলেন, এখানে উন্নয়নের কাজ করবেন না। তাই এখানকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।” এদিকে, বিজেপিকে একহাত নিয়ে তৃণমূল নেতা গৌতম দেব বললেন, ”শান্ত বাংলাকে অশান্ত করার চক্রান্ত। মানুষ প্রতিবাদ করবে রাস্তায় নেমে বিজেপির বিরুদ্ধে। বাংলা থেকে এই দলটাও হারিয়ে যাবে।”