সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রুশ গোলায় মারিওপোল (Mariupol) কার্যত শ্মশান। টাইম মেশিনে সওয়ার হয়ে জমজমাট শহরটি যেন পৌঁছে গিয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ দিনগুলিতে। ইউক্রেনের দাবি, পুতিন বাহিনীর হামলায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে হাজার হাজার নিরীহ মানুষের। কিন্তু কিছুতেই থামছে না রুশ ফৌজের হামলা। এহেন পরিস্থিতিতে শহরটিতে আটকে থাকা মহিলা, শিশু ও বয়স্কদের নিরাপদে বের করে আনতে মানবিক করিডর তৈরির বিষয়ে একমত হয়েছে কিয়েভ ও মস্কো।
[আরও পড়ুন: আমেরিকার হুঁশিয়ারি উড়িয়ে সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে চুক্তি চিনের, ঘনাচ্ছে আশঙ্কার মেঘ]
ইউক্রেনের (Ukraine) উপ প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক টেলিগ্রামে লেখেন, “আমরা মারিওপোল থেকে মহিলা, শিশু ও বয়স্কদের নিরাপদে বের করে আনতে প্রাথমিক ভাবে একটি মানবিক করিডর তৈরির বিষয়ে একমত হয়েছি।” ভেরেশচুক জানান, মারিওপোলে আটকে পড়া আম জনতাকে উদ্ধার করে জাপরজাই শহরে নিয়ে যাওয়া হবে। আজ অর্থাৎ বুধবার দুপুর দুটোয় মারিওপোলে নির্ধারিত স্থানে মহিলা, শিশু ও বয়স্কদের জড়ো হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে সতর্কবার্তা হিসেবে তিনি বলেন, “পরিস্থিতির চাপে প্রস্তাবিত করিডরে প্রয়োজনে বদল ঘটতে পারে।”
বলে রাখা ভাল, ভৌগোলিক ও কৌশলগত দিক থেকে রাশিয়ার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিওপোল। কারণ, রাশিয়া অধিকৃত ক্রাইমিয়ার সঙ্গে রুশপন্থীদের কব্জায় থাকা ডোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক এলাকাকে (দোনবাস অঞ্চল) যুক্ত করতে চায় মস্কো। এই যোগসাধনের জন্য প্রয়োজন বন্দর শহর মারিওপোলে দখল কায়েম করা। সেই কারণেই শহরটি রাশিয়ার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত, মারিওপোল দখলের লড়াইয়ে ইতিমধ্যেই হাজার হাজার সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।
উল্লেখ্য, মারিওপোলে যুদ্ধ করছে ইউক্রেনের ৩৬তম মেরিন ব্রিগেড। কয়েকদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “বন্দর রক্ষায় সব রকম প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এবার আর পিছু হটা ছাড়া রাস্তা নেই। শুধু অস্ত্র বাড়ন্ত নয়। প্রায় অর্ধেক সেনা আহত। এখনও অঙ্গহানি হয়নি যাঁদের, তাঁরা এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।” ইতিমধ্যেই মারিওপোল ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনা। তারাও জানিয়েছে, মারিওপোলে এখন আজভস্টাল লৌহ ও ইস্পাত কেন্দ্র এবং বন্দর দখলের লড়াই চলছে। এদিকে, ৩৬ মেরিন ব্রিগেডের অনেক সৈনিকের গলায় শোনা গিয়েছে আক্ষেপের সুর। তাঁদের অভিযোগ, অস্ত্র ও রসদ পাঠানোর কোনও ব্যবস্থা করছেন না ফৌজের কর্তারা। তাঁরা একপ্রকার ধরেই নিয়েছেন যে মারিওপোল থেকে কেউই জীবিত ফিরবে না।