সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গৃহযুদ্ধে রক্তাক্ত মায়ানমার (Myanmar)। সরকারি ফৌজের সঙ্গে তুমুল লড়াই চলছে বিদ্রোহী সশস্ত্র মিলিশিয়া বাহিনীগুলির। লাগাতার বাড়ছে মৃত ও আহতদের সংখ্যা। বার্মিজ সেনার বিরুদ্ধে উঠছে গণহত্যার অভিযোগ। এহেন পরিস্থিতিতে নতুন বছর উপলক্ষে যুযুধান দুই পক্ষের কাছে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণার আবেদন জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।
[আরও পড়ুন: সাড়ে ৫ হাজার কোটির বিনিময়ে বিবাহ বিচ্ছেদ! আদালতের নির্দেশে অস্বস্তিতে দুবাইয়ের শেখ]
মায়ানমারে নিযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ দূত নোয়েলিন হেজার বলেন, “ইতিমধ্যে অনেক কষ্ট ভোগ করেছে মায়ানমারের জনগণ। তার উপর আর্থসামাজিক পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে করোনা মহামারী। যারা নিজেদের মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে তাদের উচিত বন্দুক নামিয়ে রাখা এবং এই জটিল পরিস্থিতিতে মানুষের সাহায্য করা। এর উপর মায়ানমারের শিশুদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।” বলে রাখা ভাল, এর আগেও মায়ানমারের কায়িন প্রদেশ-সহ সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দু একাধিক জায়গায় সংঘর্ষবিরতির আবেদন জানিয়েছিল রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। যদিও সেই আবেদনে সামরিক জুন্টা বা বিদ্রোহী বাহিনী কেউই সাড়া দেয়নি।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই অশান্ত মায়ানমার। সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও একদল প্রতিবাদীকে দমিয়ে রাখতে পারেনি জুন্টা (Junta)। স্থানীয় কারেননি সংগঠন সেনার বিরুদ্ধে ক্রমাগত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। পালটা দমননীতি প্রয়োগ করছে জুন্টা। এপযন্ত সেনার হাতে নিহত হয়েছে হাজারেরও বেশি গণতন্ত্রকামী মানুষ। সেনাশাসন শেষ করতে তীব্র যুদ্ধ চালাচ্ছে বিদ্রোহী বাহিনী।
এহেন সময়ে জুন্টার বিরুদ্ধে গণহত্যার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, কায়াহ প্রদেশে গত শুক্রবার রাতে এলোপাথারি গুলি চালায় সরকারি বাহিনী। গণহত্যার প্রমাণ লোপাট করতে ৩০ জনের দেহ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। গত জুলাই মাসে মধ্য মায়ানমারের সাগাইং প্রদেশের কানি শহর সংলগ্ন অন্তত চারটি গ্রামে গণহত্যা চালিয়েছিল বার্মিজ সেনা। যার ফলে শুধুমাত্র ওই চার এলাকাতেই মৃত্যু হয়েছিল ৪০ জন সাধারণ মানুষের। বলে রাখা ভাল, কানি শহর বিদ্রোহীদের ঘাঁটি। ওই অঞ্চলে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করা মিলিশিয়াগুলিকে শাস্তি দিতেই গণহত্যা চালায় ‘টাটমাদাও’ তথা বার্মিজ সেনা। বিবিসি-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াইন নামের একটি গ্রামে একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি মানুষকে মারা হয়। সেখানে ১৪ জন গ্রামবাসীর উপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়ে তাঁদের হত্যা করেছে ফৌজ।