shono
Advertisement

ফ্রান্সকে হারিয়ে ইউরো সেরা পর্তুগাল

ইউরো ফাইনাল শুরুর আগে ম্যাচ নিয়ে নানা মুণি নানা মত প্রকাশ করেছিলেন। কেউ বলেছিলেন একা রোনাল্ডোই সব তছনছ করে দেবেন। তবে পরিসংখ্যান ও বর্তমান ফর্মকে মাথায় রেখে ঘরের মাটিতে ফ্রান্সকেই বাজি ধরেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। The post ফ্রান্সকে হারিয়ে ইউরো সেরা পর্তুগাল appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:37 AM Jul 11, 2016Updated: 02:34 PM Jul 12, 2016

পর্তুগাল – ১ (এডের)          ফ্রান্স – ০
এক্সট্রা টাইমে নির্ধারিত হল ম্যাচের ফলাফল

Advertisement

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিটা মুহূর্তে লিওনেল মেসির সঙ্গে তাঁর তুলনা করা হয়েছে। ধারে ও ভারে একটু হলেও প্রত্যেকবার মেসিকেই এগিয়ে রেখেছে বিশ্ব। পান থেকে চুন খসলেই সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হয়েছে। কিন্তু রবিবার রাতে স্তাদে দ্য ফ্রান্সে মেসির সঙ্গে তাঁর সূক্ষ্ম পার্থক্যটা বুঝিয়ে দিলেন তিনি। শুধু ক্লাবের জার্সি গায়েই নয়, দেশকেও ট্রফি এনে দিতে পারেন তিনি। রূপকথাকে বাস্তবে পরিণত করতে পারেন। কোপা আমেরিয়ার ফাইনালে মেসি যা পারেননি ইউরো ফাইনালে সেটাই করে দেখালেন তিনি। তিনি সেরার সেরা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।

ইউরো ফাইনাল শুরুর আগে ম্যাচ নিয়ে নানা মুণি নানা মত প্রকাশ করেছিলেন। কেউ বলেছিলেন একা রোনাল্ডোই সব তছনছ করে দেবেন। তবে পরিসংখ্যান ও বর্তমান ফর্মকে মাথায় রেখে ঘরের মাটিতে ফ্রান্সকেই বাজি ধরেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। গোটা টুর্নামেন্টে দুরন্ত ছন্দে ছিল দিদিয়ের দেশঁর দল। জিদান জমানার পর এই ইউরোতেই ফ্রান্সের পুনর্জন্ম দেখল বিশ্ব। কিন্তু কথায় বলে না, যার শেষ ভাল তার সব ভাল! সন্ত্রাসের আতঙ্ক যাঁদের মুহুর্মুহু গ্রাস করছিল, সেই ফরাসিদের কাছে মাঠের ৯০ মিনিটের বিনোদনই সতেজ অক্সিজেনের কাজ করেছে। কিন্তু কবিতার দেশের ‘কবি’ দেশঁ শেষ লাইনে এসে ছন্দ মেলাতে পারলেন না। রানার্স-আপ তকমা গায়ে চাপিয়েই খুশি থাকতে হল দু’বারের ইউরো চ্যাম্পিয়নদের।

ফুটবলপ্রেমীরা অবশ্য যে খেলা দেখতে রাত জেগেছিলেন সেটা দেখতে পেলেন না। ফাইনালের মঞ্চে এমন কিছু হবে, তা কি কেউ স্বপ্নেও ভেবেছিল? ফার্নান্দো স্যান্টোসের ট্রাম্প কার্ড কি না ২৪ মিনিটেই খেলা থেকে ছিটকে গেলেন! শুধু রোনাল্ডো ভক্তরা কেন, এমন ঘটনা যে কোনও দর্শকের পক্ষেই বড়সড় ধাক্কা। বাঁ-পায়ে চোট পেয়ে স্ট্রেচারে করে যখন সিআর সেভেন মাঠ ছাড়ছেন, তখন ঝড়ঝড় করে চোখ থেকে জল নেমে আসছে তাঁর। ঠিক ১২ বছর আগে ইউরো ফাইনালে হেরে এভাবেই কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছিলেন তিনি।

দলের সবচেয়ে দরকারের সময় মাঠ ছাড়তে হচ্ছে তাঁকে। এ কথা ভেবেই হতাশায় আর কান্নায় মুষড়ে পড়েন পর্তুগাল দলের ‘কোহিনুর’। অধিনায়কের আর্ম ব্যান্ডটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে মাটিতে বসে পা ছড়িয়ে কাঁদলেন খানিকক্ষণ। তারপর স্ট্রেচার এল তাঁকে ইউরোর মঞ্চ থেকে এবারের মতো নিয়ে যেতে। পর্তুগাল সমর্থকরা তখনই যেন মানসিকভাবে ফ্রান্সের কাছে হার মেনে নিয়েছিল। ম্যাচ শুরুর আগে ফুটবল বিশ্বের আলোচ্য বিষয় ছিল রোনাল্ডোর ইচ্ছাশক্তি ও মানসিকতা। ফেভরিটদের বিরুদ্ধে জয়ের হুঙ্কার দিয়ে রেখেছিলেন তিনি। আর তাঁকেই কি না চোট এতটাই কাবু করে ফেলল যে তিনি শেষ অবধি লড়তেই পারলেন না! এদিন হয়তো পারলেন না, তবে ফুটবলপ্রেমীরা মনে রেখেছেন তাঁর বিখ্যাত ব্যাকফ্লিক, তাঁর অবিশ্বাস্য স্পটজাম্প দিয়ে হেডে গোল করা। সেসব পর্ব না পেরোলে ফাইনালের দরজা তো খুলত না। আর ফাইনালে যেভাবে তিনি ক্যাপ্টেন থেকে সাইডলাইনে কোচ হয়ে উঠলেন, তাও নজিরবিহীন।

উল্টো দিকে, রোনাল্ডোর অনুপস্থিতি ফরাসি শিবিরে সাময়কি স্বস্তি দেয়। ফ্রান্সের ডিফেন্ডারদের দায়িত্বও খানিকটা কমে। নির্ধারিত সময়েই যে খেলা শেষ করতে চেয়েছিলেন দেশঁ, তা ফ্রান্সের আক্রমণ দেখলেই বোঝা যায়। গোটা টুর্নামেন্টে নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করা গ্রিজম্যানকে এদিন একটু ফ্যাকাসেই লাগল। জিরু, পায়েত কেউই গোলের মুখ খুলতে পারলেন না। নানির একটা দুরন্ত গোলমুখী শট ছাড়া দুই অর্ধেই রক্ষ্মণাত্মক ফুটবল খেললেন পর্তুগিজরা। রিয়াল স্ট্রাইকারের অভাবে স্যান্টোসের দলের ফরোয়ার্ড লাইন যেন খাঁ খাঁ করছিল। তবে স্যানচেসকে তুলে এডেরকে নামিয়ে মাস্টার স্ট্রোক দিলেন কোচ। এক্সট্রা টাইমে দূরপাল্লার শটে বল জালে জড়িয়ে দলকে প্রায় অপ্রত্যাশিত জয় উপহার দিলেন এডের।

স্ট্যানোস বিশ্বাস করেন, ফুটবলের এমন মঞ্চে সুন্দর ফুটবলের থেকে জয় অনেক বেশি দামী। তাই এক্সট্রা টাইমে গোলকেই পাখির চোখ করেছিলেন। গোল এল। সেই সঙ্গে ৪১ বছরের শাপমুক্তি ঘটল। ১৯৭৫-এর পর ফ্রান্সের বিরুদ্ধে প্রথমবার কোনও মেজর টুর্নামেন্টে জয়ের মুখ দেখলেন রোনাল্ডোরা। ট্র্যাজিক নায়ক হতে হতেও অতিমানবীয় চরিত্রে পরিণত হলেন সিআর সেভেন। সমালোচকদের আপাতত অন্য কাজে মন দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় রইল না।

The post ফ্রান্সকে হারিয়ে ইউরো সেরা পর্তুগাল appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement