shono
Advertisement

শ্যামাপুজো উপলক্ষে হিলিতে মিলিত হয় দুই বাংলা

বিএসএফ জওয়ানরাও পুজোয় অংশ নেন। The post শ্যামাপুজো উপলক্ষে হিলিতে মিলিত হয় দুই বাংলা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 05:31 PM Nov 01, 2018Updated: 05:31 PM Nov 01, 2018

রাজা দাস,বালুরঘাট: বিএসএফ চৌকি থেকে সামনে তাকালে ধূ ধূ প্রান্তর। যার বুক চিরে চলে গিয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। এপারে ভারতের হিলি সীমান্ত। আর ওপারটা বাংলাদেশ। কাঁটাতারে দেশভাগ হলেও এপারের কিছু অংশ ওপারে রয়ে গিয়েছে। সীমান্তের ওপারে থাকা ভারতীয় ভূখণ্ডই হল হাঁড়িপুকুর গ্রাম। হাতে মাত্র পাঁচটি দিন। শ্যামা মায়ের আরাধনার জোগাড়ে ব্যস্ত গ্রামের বাসিন্দারা। ভারতীয় ভূখণ্ড হলেও দেশের সঙ্গে খুব একটা যোগসূত্র নেই। তাতে কী, প্রতিবেশী দেশের বাসিন্দাদের সঙ্গেই মিলেমিশে দিন কাটিয়ে দেয় হাঁড়িপুকুর গ্রাম। বছর ঘুরে পুজো আসে, সীমান্ত কালীর আরাধনায় মেতে ওঠেন বাসিন্দারা। দেশের মানুষ হয়েও পরবাসী। কাঁটাতার পেরিয়ে একটা নির্দিষ্ট সময়েই হিলিতে আসতে পারেন বাসিন্দারা। সন্ধ্যা নামার আগে ফিরেও যেতে হয়। দেশের সঙ্গে কাঁটাতারে সম্পর্ক থাকলেও প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে শুধু পিলারের ব্যবধান। তাই সীমান্ত কালীর পুজোতে যত না হিলির লোক যায়, তার থেকে অনেক বেশি বাংলাদেশের মানুষ আসে। যাবতীয় দুঃখ দুর্দশা ভুলে পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন বাসিন্দারা।

Advertisement

দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম এই হাঁড়িপুকুর। গ্রামের অদূরেই কোথাও ২৫ বা ৫০ গজ অন্তর রয়েছে পিলার। মাটির সঙ্গে সমান্তরালভাবে পিলারের অবস্থান সবসময় দেখাও যায় না। তবু দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত ভাগ কিন্তু স্পষ্টই। হাঁড়িপুকুর গ্রামেই রয়েছে সীমান্ত কালীর থান। প্রতিবছর সেখানে ধুমধামের সঙ্গে শ্যামা মায়ের আরাধনা হয়। সারা বছর ধরে সেই থানের দেখভাল করে বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। পুজোর সময় তাই শুধু হিন্দুরা নয়, মুসলিমরাও অংশ নেয়। দুই সম্প্রদায়ের উদ্যোগেই হয় সীমান্ত কালীর আরাধনা।

[সদর দরজায় থাকা দেবীর কাঠামোয় পুজো শুরু এই জমিদার বাড়িতে]

দেশজুড়ে যখন অসহিষ্ণুতা ডালপালা মেলছে তখন সীমান্তের এই হাঁড়িপুকুর গ্রাম সম্প্রীতির ধারকের ভূমিকা নিচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর রয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। অবস্থানগত কারণে বেড়ার ওপার অর্থাৎ বাংলাদেশের গ্রামের সঙ্গে জুড়েই রয়েছে ভারতীয় ভূখণ্ড হাঁড়িপুকুর। সীমান্তের গেটের ওপারে ফুট পাঁচেকের কংক্রিটের রাস্তা। সেটা পেরিয়ে গেলেই গ্রামের শুরু। সেখানে হিন্দু-মুসলিম মিলিয়ে ৩০টি পরিবারের বসবাস। মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে কাঁটাতার রয়েছে কিন্তু প্রতিবেশী বাংলাদেশে যেতে কিছুই নেই। তাই বাংলাদেশের গ্রামের মানুষের সঙ্গে হাঁড়িপুকুরের বাসিন্দাদের বেজায় ভাব। সীমান্ত কালীর পুজোতে লোকবলেরও অভাব হয় না। মূর্তি গড়ে পুজো না হলেও এই থানকে জাগ্রত মানেন স্থানীয়রা। সীমান্তে প্রহরারত বিএসএফ জওয়ানরাও পুজোর আনন্দে অংশ নেন। স্বভাবতই পুজোর সময় সীমান্তের প্রহরাও শিথিল থাকে। দীপাবলির উৎসবে যখন গোটা দেশ সেজে উঠেছে, তখন সীমান্তের এই কালীপুজো অনেকটাই সাদামাটা। তবে প্রাণের টান অনেক বেশি। তাইতো সারা বছর বিমল সরকারদের সঙ্গে ইস্তাক আলি, রবিউল ইসলামরা কালীর থানের রক্ষণাবেক্ষণ করেন। পুজো এলে শুধু দুটি সম্প্রদায়ই নয়, দুই বাংলাও মেতে ওঠে শক্তির আরাধনায়।

[দীপাবলির আগে বাড়িতেই বানান রং-বেরঙের মোমবাতি, জেনে নিন পদ্ধতি]

The post শ্যামাপুজো উপলক্ষে হিলিতে মিলিত হয় দুই বাংলা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement