shono
Advertisement
SIR in West Bengal

রোহিঙ্গা কোথায়? খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর প্রশ্ন বিজেপিতে, খোঁচা তৃণমূলের

Published By: Subhajit MandalPosted: 12:03 AM Dec 17, 2025Updated: 12:04 AM Dec 17, 2025

সুদীপ রায়চৌধুরী: শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন এক কোটির বেশি। কোনও কোনও বিজেপি নেতার দাবি ছিল, সংখ্যাটা দু'কোটি। কিন্তু বিশেষ নিবিড় সংশোধনীর প্রথম পর্বের ৩৭ দিনের ‘কর্মক্লান্ত’ প্রক্রিয়ার পরও পশ্চিমবঙ্গে কার্যত রোহিঙ্গা খুঁজে পেল না ভারতীয় নির্বাচন কমিশন। আপাতত এসআইআর-এর খসড়া তালিকা প্রকাশের পর এটাই স্পষ্ট। রাজ্যের মুখ‌্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল অবশ‌্য এ ব‌্যাপারে প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘‘এখনও এ সম্পর্কে বলার মতো সময় আসেনি। দিল্লিতে কমিশনের সদর দপ্তরে অসঙ্গতি নিয়ে কাজ চলছে। পুরোটা বিশ্লেষণের পরই বলা যাবে।’’

Advertisement

মঙ্গলবার প্রকাশ পায় তালিকা। আগ্রহও ছিল নানা প্রান্তে, মূলত মতুয়া-রাজবংশী অধ্যুষিত ও সীমান্ত এলাকায়। সংখ‌্যালঘু প্রভাবিত স্থানে কত নাম বাদ যায় সেদিকেও নজর ছিল। দেখা গেল, সংখ‌্যালঘু এলাকায় ম‌্যাপিং হয়েছে সব থেকে বেশি, আর ‘নন ম‌্যাপিং’ সব থেকে বেশি মতুয়া প্রভাবিত অঞ্চলে। রাজ্যে বাদ গিয়েছে ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার ৮৯৮ জনের নাম।শতাংশের বিচারে বেশি নাম বাদ উত্তর কলকাতায়। দ্বিতীয় দক্ষিণ কলকাতা আর তৃতীয় পশ্চিম বর্ধমান। সব থেকে কম বাদ পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও বলছেন, উত্তর কলকাতায় ১৫ লক্ষ ৬ হাজার ৩৩৯ ভোটার তালিকায় থাকলেও গত লোকসভায় ভোট পড়েছিল ৯ লক্ষ ৫৮ হাজার ৪৩৩, ৬৩.৬৭ শতাংশ। ২০১৯-এর ভোটেও ৯ লক্ষ ৫০ হাজারের কিছু বেশি। এবার বাদ গিয়েছে ৩ লক্ষ ৯০ হাজার ৩৯০ নাম, শতাংশের হিসাবে ২৫.৯২। দক্ষিণ কলকাতায় বাদ ২৩.৮২ শতাংশ ও পশ্চিম বর্ধমানে ১৩.১৬ শতাংশ। দুটিই নগরকেন্দ্রিক ও শিল্পায়ন এলাকা। গ্রামীণ এলাকায় ভোটারদের স্থানান্তরিত হওয়ার প্রভাব থাকে না। শুধুমাত্র দুই কলকাতা ও পশ্চিম বর্ধমানে স্থানান্তরিত ভোটারের শতাংশ ৫-এর উপর, নিখোঁজও এই তিনটি জেলাতেই বেশি। রাজ্যে যেখানে নিখোঁজ শতাংশ ১.৫৯ ও স্থানান্তরিত ২.৫৯। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন, উঠছে শুভেন্দুদের দেখানো ১ কোটি রোহিঙ্গা কোথায়? যদিও একটা কূট যুক্তি তুলে ধরা হচ্ছে এক্ষেত্রে। বলা হচ্ছে, এরপর শুনানি পর্বেও বহু বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা ভোটার ধরা পড়তে পারে। বহু ভোটারে নজর রয়েছে কমিশনের। তবে সেই সংখ্যাটা যে কোনওভাবেই কোটির ঘরে যাবে না, সেটা স্পষ্ট। 

রোহিঙ্গার ‘হদিশ’ না মেলায় বিজেপি যে রাজনৈতিকভাবে ‘ব‌্যাকফুটে’ চলে গেল তা নিয়ে সংশয় নেই। বিজেপি নেতারা বারবার দাবি করেছেন, এক কোটি রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী রয়েছেন। এক কোটি নাম বাদ যাবে। সেই হুমকির সারবত্তা প্রাথমিকভাবে না মেলায় চাপ বাড়ল বঙ্গ বিজেপিতে। তৃণমূলের রাজ‌্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ মন্তব‌্য করেন, ‘‘এতদিন যাঁরা হুঙ্কার দিচ্ছিলেন, এক কোটি রোহিঙ্গা, এক কোটি বাংলাদেশি পাওয়া যাবে, তাঁরা এখন কোথায়? তাঁরা এবার ক্ষমা চান।’’ এসআইআর চালুর বড় কারণ ছিল অনুপ্রবেশকারী ইস্যু, মত রাজনৈতিক মহলের। বিহারের ক্ষেত্রেও এসআইআর প্রক্রিয়া শুরুর সময় কমিশনের তরফে দাবি করা হয়, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে বাদ দেওয়া এই কর্মসূচির লক্ষ‌্য। অথচ চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়াদের মধ্যে কত বিদেশি বা অনুপ্রবেশকারী রয়েছেন, তা নিয়ে কমিশন আরটিআই করলেও কোনও সদুত্তর বা তথ‌্য দিতে পারেনি। বাংলার ক্ষেত্রেও রোহিঙ্গা ধরার কাজটাই হয় কমিশন ব্যর্থ, নয় এতদিন বিজেপি নেতারা মিথ্যাচার করে এসেছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ৩৭ দিনের ‘কর্মক্লান্ত’ প্রক্রিয়ার পরও পশ্চিমবঙ্গে কার্যত রোহিঙ্গা খুঁজে পেল না ভারতীয় নির্বাচন কমিশন।
  • আপাতত এসআইআর-এর খসড়া তালিকা প্রকাশের পর এটাই স্পষ্ট।
  • রাজ্যের মুখ‌্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল অবশ‌্য এ ব‌্যাপারে প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘‘এখনও এ সম্পর্কে বলার মতো সময় আসেনি।"
Advertisement