এবছর করোনা আবহেই পুজো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাবগুলিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি৷ কলকাতার বাছাই করা কিছু সেরা পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন সল্টলেক এ ই ব্লক পার্ট ওয়ানের পুজো প্রস্তুতি৷
বিশ্বদীপ দে: হঠাৎই থমকে দাড়িয়ে পড়েছে পৃথিবী। থমকে গিয়েছে শহর, দেশের প্রাণমুখরতা। কবে শেষ হবে ঘরবন্দি দশা, জানা নেই। তবু অতিমারীর (Pandemic) এই ক্রান্তিকালেই মানুষ যেন নতুন করে শিখল একে অপরকে মানবতার বন্ধনে বেঁধে ফেলতে। ঘরের এই বন্ধন শিক্ষা দিল নতুন এক সম্পর্কের। আকস্মিক লকডাউনের (Lockdown) পরে ঘরমুখী পরিযায়ী মানুষের রক্তে ভেজা পায়ের ছাপের আলপনাকে আপন করে নিতে শিখেছে মানুষ। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অসহায়, ক্ষুধার্ত মানুষের বিপন্নতা ভাবাচ্ছে আমাদের। এই নতুন ‘বন্ধনই’-ই এবার সল্টলেক এ ই ব্লক পার্ট ওয়ানের পুজো (Durga Puja 2020) ভাবনা। যা শুনে মনে পড়ে যায় শঙ্খ ঘোষের সেই অসামান্য পংক্তি, ‘আয় আর বেঁধে বেঁধে থাকি।’
এই ভাবনা যে দু’জনের মস্তিষ্কপ্রসূত তাঁরা পার্থ ঘোষ ও সিদ্ধার্থ ঘোষ। প্রতিমা নির্মাণে নবকুমার পাল। পার্থবাবু বলছিলেন, ‘‘সবাই এই ক্রান্তিকালকে পুরোপুরি নেগেটিভ ভাবে দেখলেও আমরা একে একটু অন্যভাবে কিছুটা সদর্থক দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করছি। এই যে মানুষ দেশ, কালের গণ্ডি পেরিয়ে অন্য মানুষের জন্যও ভাবছে এটা এই সময়ের শিক্ষা। এই বন্ধনকেই আমরা এবারের পুজোর থিম হিসেবে ভেবেছি।’’
কীভাবে এই ভাবনা ফুটে উঠবে মণ্ডপে? পার্থবাবু জানাচ্ছেন, নানাভাবে এটা দেখানো হবে। পুরো মণ্ডপেই থাকবে অসংখ্য জানলা। প্রবেশের পরে দেখা যাবে জানলাগুলো বন্ধ। ক্রমশ এগোলে দেখা যাবে পরবর্তী জানলাগুলি খোলা। অর্থাৎ মনের আগল খুলে যাচ্ছে। এঠা আমাদের সমাজজীবনের পরিবর্তনের প্রতীক। একই ভাবে দড়ি, চেয়ার ইত্যাদিকেও ব্যবহার করা হয়েছে। থাকছে নানা ভাস্কর্যও। সেখানেও বদ্ধ জীবন থেকে মুক্তির প্রকাশের ক্রমপর্যায়।
[আরও পড়ুন: ঢাকিদের সম্মান জানিয়ে টাকডুম টাকডুম ঢাকের ছন্দেই সাজছে কলকাতার এই মণ্ডপ]
মণ্ডপে থাকবে বাড়তি সতর্কতা। দর্শনার্থীদের জন্য স্যানিটাইজার টানেল তো থাকছেই। থাকছে দু’টি অটো স্মোক মেশিন। এই যন্ত্র প্রতি পাঁচ-সাত মিনিট অন্তর পুরো প্যান্ডেলকে স্টানিটাইজ করে দেবে। তাছাড়া মাস্ক, স্যানিটাইজার তো থাকছেই। এমনকী, কেউ যদি মনে করেন তিনি মণ্ডপে ঢুকবেন না তাহলে তিনি বাইরে দাঁড়িয়েও প্রতিমা দর্শন করতে পারবেন। ব্যবস্থা থাকবে তেমনই।
সারা বছরই নানা সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে ক্লাব। লকডাউনের সময় তিন মাস ধরে ২৮০টি পরিবারকে সাহায্য করা হয়েছিল। পুজোতেও থাকছে পরিকল্পনা। মণ্ডপের নির্মাণকর্মী কিংবা ঢাকি সকলের পরিবারকেই বিশেষ সাহায্যের পরিকল্পনা করা হয়েছে কমিটির তরফে।
