shono
Advertisement

থিমের দাপটে ফিকে দেবীর সাবেকি গয়নার জৌলুস, কাজের বরাত কমছে যোগীপাড়ায়

আগমনি নয়, বিষাদের সুর আড়শার যোগীপাড়ায়। The post থিমের দাপটে ফিকে দেবীর সাবেকি গয়নার জৌলুস, কাজের বরাত কমছে যোগীপাড়ায় appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 12:55 PM Sep 30, 2019Updated: 12:55 PM Sep 30, 2019

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মাথা নিচু করে নিপুণ হাতে রঙিন কাগজের ওপর আয়নার টুকরো বসাচ্ছেন দিলীপ যোগী। পাশেই সরলা যোগী, সরস্বতী যোগীরা পুঁথি দিয়ে গড়ছেন মালা। ফি বছরই উমার অলংকার তৈরি করে চিন্ময়ীকে সালংকারা রূপ দেন এঁরা। নিজের হাতে দেবীর শরীরে গয়না পরিয়ে দেন। সেই কাজের বিরাম নেই। কিন্তু এবছর মন ভাল নেই ওঁদের।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বোধনের অপেক্ষায় বঙ্গ, মেলবোর্নে দুর্গার আবাহনে মাতোয়ারা প্রবাসীরা]

কয়েকবছর ধরে দুর্গোৎসবের সময়ে যেন মনমরা হয়ে থাকে পুরুলিয়ার আড়শার বামুনডিহার যোগী পরিবারগুলি। সেভাবে যে পুজোর কাজের বরাতই নেই। থিমের কাছে হার মানতে হয়েছে সেকালের একচালার মাতৃ প্রতিমা সাজানো এই শিল্পীদের। কারণ, এই সাবেকি গয়নাতেও এখন আর সেভাবে দেবীমূর্তি সাজাতে চান না কেউ। ফলে অভাব বেড়েই চলেছে। গুটিকয়েক বরাতে তবুও বাপ–ঠাকুরদার কাজের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছেন তাঁরা।রঙিন কাগজে চুমকি ও আয়নার টুকরো সাজাতে সাজাতেই সেই কষ্টের কথা ঝরে পড়ল দিলীপ যোগীর গলায়। তাঁর কথায়, “পরিবারের কাউকেই এখনও সেভাবে জামাকাপড় দিতে পারিনি। কাজের বরাতই কম। যা অগ্রিম পেয়েছি, সবটাই মাকে সাজানোর উপকরণ কিনতে চলে গিয়েছে। তাই পুজো এসে গেলেও পরিবারের মুখে হাসি নেই।”


বামুনডিহা গ্রামে এই যোগী পরিবারের সংখ্যা কুড়ি। তাঁরা মূলত ডাক, জরি, নানা নৃত্যকলার পোশাক, টুসু তৈরির কাজ করে থাকেন। উৎসব অনুযায়ী বরাত এলে সেই কাজে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। কিন্তু গত চার–পাঁচ বছর ধরে আগের মত কাজের বরাত নেই। শ্রীদাম যোগী ও স্বপন যোগী বলেন, “মনে হচ্ছে, আমরা যেন থিমের কাছে হেরে গিয়েছি। আগে শুধু এই জেলায় নয়। আমাদের ডাক পড়ত ঝাড়খণ্ডের বোকারো, চান্ডিল, জামশেদপুরেও। কিন্তু এখন পুজোয় যেন সেই আগের মত বরাতই আসে না।”
আসলে এই ডাক ও জরির সাজে একচালা সাবেকি প্রতিমা এখন অনেকটাই কম। আর এই সূক্ষ্ম কাজে পরিশ্রম বেশি। তাই তাঁদের মজুরিও বেশি।

[আরও পড়ুন: বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বোধনের আগে দেবীদর্শনের ভিড় মণ্ডপে]

কিন্তু থিম-নির্ভর পুজোয় তাঁদের সেভাবে কাজের সুযোগই আসে না। তাই তাঁরা এখন নিজেরাই পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আগে অবশ্য ছবিটা এমন ছিল না। এই বামুনডিহা গ্রামের যোগী পরিবারগুলির দুয়ারে লাইন দিয়ে বসে থাকতেন সর্বজনীন পুজো কমিটির লোকজন। সময় বদলের এমন রকমফেরে তাই যোগী পরিবারের পরবর্তী প্রজন্ম এখন অন্য পেশায় ঝুঁকেছেন। তাই বামুনডিহার
যোগীপাড়ায় উৎসবের মরশুমেও বিষাদের সুর।
ছবি: সুনীতা সিং।

The post থিমের দাপটে ফিকে দেবীর সাবেকি গয়নার জৌলুস, কাজের বরাত কমছে যোগীপাড়ায় appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement