সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বল্প সময়ের নোটিসেই যেন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে পারে দেশের সশস্ত্র বাহিনী৷ এই লক্ষ্যে আপৎকালীন তৎপরতায় প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকার গোলাগুলি, বারুদ-সহ অন্যান্য সমরাস্ত্রের যন্ত্রাংশের বরাত দিল নরেন্দ্র মোদি মোদি সরকার৷ রাশিয়া, ইজরায়েল ও ফ্রান্সের কাছ থেকে কেনা হবে এই বিপুল পরিমাণ গোলাগুলি৷
(শ্রীলঙ্কার বন্দরে চিনা সেনাকে রুখে দেব, মোদিকে আশ্বাস সিরিসেনার)
ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য ৯২০০ কোটি টাকার বিনিময়ে ৪৩টি চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে বিদেশি অস্ত্র উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে৷ এই চুক্তি মোতাবেক সুখোই-৩০ এমকেআই, মিরাজ-২০০০এস ও মিগ-২৯ এর জন্য গোলাবারুদ ও যন্ত্রাংশ কিনবে নয়াদিল্লি৷ পাশাপাশি, মাঝআকাশে যুদ্ধবিমানে জ্বালানি ভরতে আইএল-১-৭৮ বা উঁচু পার্বত্য এলাকায় সেনা জওয়ানদের বা ভারী পণ্য বহনের জন্য আইএল-৭৬ ও ফ্যালকোন কন্ট্রোল সিস্টেমের যন্ত্রাংশও কেনা হচ্ছে৷ পদাতিক বাহিনীর জন্য ৫৮০০ কোটি টাকার বিনিময়ে ১০টি চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে মস্কোর সঙ্গে৷ মোটা বর্ম ভেদ করেও শত্রুকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেবে এমনই ১২৫ এমএম অ্যামিউনেশন কেনা হচ্ছে টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্কের জন্য৷ টি-৭২ ট্যাঙ্কের জন্য কেনা হচ্ছে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল ও রকেট৷
(এবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক চিনা সেনাকর্তার!)
ভারতীয় সেনার ভাণ্ডারে গোলাগুলির অভাবের কথা দীর্ঘদিন ধরেই জানিয়ে এসেছেন সেনাকর্তারা৷ এমনকী, চিন বা পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ লাগলে একটানা সাতদিনও খরচ করার মতো গুলি-বারুদ যে সেনার ভাঁড়ারে নেই, সেই আশঙ্কাও বারবার প্রকাশ করেছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা৷ কিন্তু এবার একটানা ১০ দিন ভারী যুদ্ধ করার মতো পর্যাপ্ত গুলি, বারুদ চলে আসবে ভারতীয় সেনার হাতে৷ এর পাশাপাশি, ট্যাঙ্ক ও যুদ্ধবিমান থেকে ছোঁড়ার জন্য স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও কেনা হচ্ছে মূলত ইজরায়েলের কাছ থেকে৷ উরি হামলার কথা মাথায় রেখেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেনাকে ঢেলে সাজাতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী৷
(বুরহানকে নিকেশ করার জন্য সেনা মেডেল রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের তিন জওয়ানকে)
সূত্রের খবর, গত ২৯ সেপ্টেম্বর পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর সময়ই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে দেশের তিন বাহিনীর প্রধানকেই যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়৷ সেই মতো পদাতিক সেনা, বায়ুসেনা ও ভারতীয় নৌসেনা কর্তারা আলাদা আলাদা ভাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পদস্থ কর্তা ও কেন্দ্রের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে মূল সমস্যাগুলি তুলে ধরেন৷ ওই বৈঠকেই উঠে আসে, এই মুহূর্তে চিনের মতো দেশ ভারতে হামলা করলে ভারতীয় জওয়ানদের হাতে পর্যাপ্ত গুলি-বারুদ নেই৷ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সঙ্গে সঙ্গে মিত্র শক্তির কাছ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেনার বরাত দেয়৷
(শত্রুর শিরশ্ছেদ করতে ভারতীয় সেনার হাতে এবার ‘সুদর্শন চক্র’)
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ২০১৭-১৮ সাধারণ বাজেটে কিন্তু প্রতিরক্ষা খাতে আহামরি কোনও বাজেট বরাদ্দ হয়নি৷ এবছর সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণের জন্য মোট ৮৬,৪৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও সেই টাকা মূল কাজে ব্যয় হতে সময় লাগত৷ কিন্তু এবার কেন্দ্র একটি ফাস্ট ট্র্যাক কমিটি গঠন করে সেনাবাহিনীর চাহিদা দ্রুত পূরণ করে নজির গড়ল, বলছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা৷ সূত্রের দাবি, সেনার ভাঁড়ারে মজুত গোলাবারুদ ও বরাত দেওয়া নতুন বারুদের ভাণ্ডার চলে এলে একটানা ৩০ দিন স্বাভাবিক ও ভারী যুদ্ধ করার ক্ষমতা তৈরি হবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর৷
(প্রয়োজনে ফের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, জানিয়ে দিলেন নয়া সেনাপ্রধান)
The post যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ২০,০০০ কোটি টাকার গোলাবারুদ পাচ্ছে সেনা appeared first on Sangbad Pratidin.