সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইরান (Iran)। সাদ্দামের ইরাকে সরকার উলটে দেওয়া যতটা সহজ ছিল, খামেনেইর ইরানকে বাগে আনা যে ঠিক ততটাই কঠিন, সেই কথা এবার হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে ওয়াশিংটন। তাই মার্কিন রণতরী ইউএসএস নিমিৎজের ঘরে ফেরার পরিকল্পনা আপাতত বাতিল করা হয়েছে। পেন্টাগনের নির্দেশে ইরানি সম্ভাব্য হামলার জবাব দিতে পারস্য উপসাগরে ওঁত পেতে রয়েছে মার্কিন নৌবহর।
[আরও পড়ুন: সন্ত্রাসে মদত, মার্কিন মিত্র দেশের তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে পাকিস্তান]
জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনঘাঁটিগুলিতে ইরানি ফৌজ হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ওয়াশিংটন। বিশ্লেষকদের মতে, সেই আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা সাফ করে পেন্টাগনে একাধিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে সিআইএ। বিশেষ করে, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন ড্রোন হানায় ইরানি জেনারেল কাশেম সোলেমানির মৃত্যুর পর থেকেই ফুঁসছে তেহরান। গত ৩ জানুয়ারি ‘কাডস ফোর্স’-এর কমান্ডার সোলেমানির মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে সেনাঘাঁটিগুলিতে আক্রমণের সম্ভাবনায় বিশেষ সতর্ক রয়েছে মার্কিন ফৌজ। পালটা হামলার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছে আমেরিকা (USA)। সেইমতো আণবিক শক্তিচালিত মার্কিন যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী ইউএসএস নিমিৎজ ‘ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ’কে পারস্য উপসাগরে মোতায়েন রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, একটি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে থাকে সাবমেরিন, ফ্রিগেট, ডেস্ট্রয়ারের মতো বেশ কয়েকটি রণতরী। এগুলোকে মিলিয়ে বলা হয় ‘ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ’। যেহেতু মার্কিন রণতরীগুলি আণবিক শক্তি চালিত তাই তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য সাগরে থাকতে সক্ষম।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বর থেকেই পারস্য উপসাগরে টহল দিচ্ছে রণতরী ইউএসএস নিমিৎজ। কিন্তু গত সপ্তাহে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘The New York Times’ জানায়, এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ারটিকে মার্কিন নৌঘাঁটিতে ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন কার্যনির্বাহী প্রতিরক্ষা সচিব ক্রিস্টোফার মিলার। ফলে বিশ্লেষকরা মনে করেছিলেন যে, বিদায়বেলায় ইরানের সঙ্গে সঙ্ঘা মিটিয়ে নিতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সেই জল্পনায় জল ঢেলে রবিবার একটি বিবৃতি জারি করে তিনি সাফ জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ইরান যেভাবে হুমকি দিচ্ছে, সেই কথা মাথায় রেখে আপাতত নিমিৎজকে ওই অঞ্চলে মোতায়েন রাখা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত বছরই ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তারপর মধ্যপ্রাচ্যে অনেকটাই পালটেছে সমীকরণ। ইরানের আণবিক কর্মসূচী ও সংঘাতের ক্রমবর্ধমান আশঙ্কার দরুন ইরাকে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে বাধ্য হয়েছে মার্কিন ফৌজ।