সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টুইটার (Twitter) কিনে নিয়েছেন ধনকুবের এলন মাস্ক (Elon Musk)। মালিকানা পেয়েই তিনি জানিয়েছিলেন, বাকস্বাধীনতার স্বর্গ হয়ে উঠবে টুইটার। এই কথার প্রেক্ষিতেই এবার নড়েচড়ে বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)। সামনেই ভোট রয়েছে আমেরিকায়। সেই কথা মাথায় রেখেই মার্কিন প্রশাসনের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়া আটকাতে একটি বোর্ড গঠন করা হচ্ছে। এই বোর্ডের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ডিসইনফরমেশন গভর্ন্যান্স বোর্ড’। তবে মার্কিন সংবাদ মাধ্যমের একটি অংশ এই বোর্ডকে ‘সত্যের মন্ত্রক’ নাম দিয়ে কটাক্ষ করেছে।
ঠিক কী কাজ করবে এই বোর্ড? জানা গিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সংক্রান্ত প্রচুর ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে নেটদুনিযায়। এছাড়াও আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্ত অঞ্চলের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা নিয়েও ভুল তথ্য পৌঁছচ্ছে মানুষের কাছে। আসন্ন নির্বাচনে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়া আটকানোই হবে নবগঠিত বোর্ডের প্রথম কাজ। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি জানিয়েছেন, “বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে মিথ্যা তথ্য। নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীর মধ্যে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই বোর্ডের কাজ হবে এই ধরনের ভুল তথ্য যেন ছড়িয়ে না পড়ে।” সেই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, “আমার মনে হয় কেউই এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করবে না”।
[আরও পড়ুন: ‘টাকা দিয়ে আমার প্রাক্তন স্ত্রীকে কিনে নিয়েছে বিরোধীরা’, বিস্ফোরক ইমরান খান]
কিন্তু সমালোচনা শুরু হয়েছে আমেরিকার মধ্যেই। বিরোধী দলের সেনেটর রব পোর্টম্যান জানিয়েছেন, ” আমাদের মিত্র দেশগুলিতে আমেরিকা সংক্রান্ত ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়া আটকাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমি মনে করি না দেশের মানুষের জন্য সেই একই ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেছেন, “রাশিয়া, চিনের মতো দেশগুলির থেকে সাবধান হওয়া উচিত। নিজেদের নাগরিকদের সন্দেহ করার কোনও মানে নেই।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে জনমানসে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কোভিড সংকট থেকে শুরু করে আফগানিস্তানে আটকে পড়া মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধার করা, সব সমস্যাতেই ব্যর্থ হয়েছে বাইডেন সরকার। সমীক্ষা থেকে অনুমান করা যাচ্ছে, নির্বাচনে হারতে পারে বাইডেনের দল ডেমোক্র্যাট। অতীতে বারবার টুইটারের সেন্সরশিপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলন মাস্ক। প্রসঙ্গত, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও টুইটারে ব্লক করে দেওয়া হয়েছিল উসকানিমূলক মন্তব্যের ফলে। এহেন পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছে, দক্ষিণপন্থী মতবাদের বক্তব্যই বেশি করে প্রচার হতে পারে টুইটার সহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই ধরনের মতাদর্শ ছড়িয়ে পড়লে অসুবিধা হবে ডেমোক্র্যাট এবং অন্যান্য বামপন্থী দলগুলির। ক্ষমতা ধরে রাখতেই এমন বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন সরকার, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এর ফলে এলন মাস্ক এবং মার্কিন সরকারের মধ্যে সংঘাত শুরু হয় কিনা, সেদিকেও নজর রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।